লকডাউনে কাজ হারাতে পারেন এই বৃদ্ধ শিল্পী, পাশে থাকার অঙ্গীকারে এগিয়ে এল সোশ্যাল মিডিয়া
গতবছরের থেকে এ বছর করোনা আরো বড়ো আকারে ভারতবর্ষে হানা দিয়েছে। যার জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। সেই কারণে লকডাউন অবধারিত। কখনো আংশিক কখনো বা প্রায় পুরো লকডাউন। এরকম পরিস্থিতি না করলে মানুষকে বাঁচানো সম্ভব নয়, তাই মানুষের কল্যাণের জন্যই এমন বড় সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়েছেন অনেকেই। তবে এ সব সময়ই লকডাউনের সঙ্গে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার একটা সম্ভাবনা লক্ষ্য করা যায়। এবারেও তার থেকে কিছু কম হলো না। দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলোর কি হবে এই প্রশ্নের ভাঁজ পড়েছে সকলের কপালে।
সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে একটি ছবি ঘুরপাক খাচ্ছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে সত্তরোর্ধ্ব এক বয়স্ক শিল্পী রাস্তার ফুটপাতে ধারে বসে ছবি এঁকে তার ছবি বিক্রি করেন। এই ছবি শুধুমাত্র ভারতবর্ষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই ছড়িয়ে গেছে ভারতবর্ষের সীমানা পেরিয়ে দেশ-বিদেশের নানা জায়গায়। কলকাতার গোলপার্কের অ্যাক্সিস ব্যাংকের শাখার নিচে বেশ কয়েকবছর ধরেই এই বৃদ্ধ শিল্পী বসে বসে তার শিল্প রচনা করেন। পথচলতি মানুষদের চোখে পড়লে এক আধটা ছবি কিনে নেয়। কিন্তু তা দিয়ে তো সংসার চলে না। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে যখন এত কিছুর রমরমা যখন একটা প্রতিভা প্রকাশ পেতে মাত্র কয়েক মুহুর্ত সময় লাগে সেই যুগে দাঁড়িয়ে এই বৃদ্ধ শিল্পের প্রতিভা কি পৌঁছে যেতে পারে না দেশকালের বেড়াজাল ভেঙে এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে?
গোলপার্ক কলকাতার অত্যন্ত ব্যস্ততম এবং জনপ্রিয় একটি জায়গা। তাই গোলপার্কে যাননি এমন মানুষ খুব কম আছে। গড়িয়াহাটে কেনাবেচা কিংবা গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট, বা লেকের ধারে বেড়াতে গিয়ে যদি এই ভদ্রলোকের ছবির সামনে একটু দাঁড়িয়ে একটা দুটো ছবি কেনেন তাহলে এই বৃদ্ধ মানুষটি একটু সুবিধা হয়। আপনার পকেট থেকে খুব বেশি টাকা খরচ হবে না। ছবি গুলোর দাম শুরু হচ্ছে মাত্র ৫০ টাকা থেকে আর ১৫০ টাকার মধ্যেই আপনি পেয়ে যাবেন ঘর সাজানোর জন্য অসাধারণ সুন্দর কালেকশন।
এই বৃদ্ধ মানুষটির কাঁপাকাঁপা হাতের ছোঁয়ায় কালো কাগজের উপরে ফুটে ওঠে নানান ধরনের সৃষ্টিরা। যা দেখে আপনি অবাক হয়ে যাবেন। অবাক বিস্ময় ভাবতে থাকবেন যেখানে বড় বড় শিল্পীদের প্রদর্শনী হয় সেখানে এই ভদ্রলোক ফুটপাতের মধ্যে বসে সৃষ্টি করে চলেছেন তার নিত্য নতুন সৃষ্টিকে। তবে প্রতিদিন গেলে আপনি দেখতে পাবেন না, মঙ্গলবার এবং শনিবার এই দুটি দিন তিনি ফুটপাথের মধ্যে বসে তার শিল্পকর্মকে সৃষ্টি করে চলেছেন শিল্পী সুনীল পাল। আসুন আমি আপনি কয়েকটা আঁকা যদি কিনে আমাদের ঘর সাজাই তাহলে তার সংসারের খানিকটা সুরাহা হয়, আর আমাদের ঘরটাও সেজে উঠুক সুন্দর শিল্পকর্মে৷ শিল্পীর অসাধারণ প্রতিভা কে কুর্নিশ জানাই।