সমগ্র পৃথিবীতে ঋতুস্রাবকে ‘ট্যাবু’-র পর্যায়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে। অথচ এটি অত্যন্ত সাধারণ প্রাকৃতিক ঘটনা। প্রকৃতি এই ঘটনার মাধ্যমে উর্বর করে তোলে নারীশরীরকে। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে প্রায় প্রতিটি মেয়েই ঋতুস্রাব অহেতুক কিছু ঘটনার শিকার হন যাতে তাঁদের মনে ঋতুস্রাব নিয়ে ভীতির সৃষ্টি হয়। অনন্যা পান্ডে (Ananya Pandey)-এও এই ঘটনার ব্যতিক্রম নন। তিনি নিজেই শেয়ার করেছেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা।
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে অনন্যা জানিয়েছেন, স্কুলে নবম শ্রেণীতে পড়াকালীন তিনি স্পোর্টস টিমের ক্যাপ্টেন ছিলেন। সেই সময় একবার একটি মেডেল জিতেছিলেন। ভিক্ট্রি স্ট্যান্ডের কাছে দাঁড়িয়ে অনন্যা অপেক্ষা করছিলেন কখন তাঁর নাম ডাকা হবে ভিক্ট্রি স্ট্যান্ডে ওঠার জন্য। কিন্তু হঠাৎই তাঁর বন্ধুরা তাঁকে ইশারা করে বলেছিলেন, ঋতুস্রাবে তাঁর স্কার্ট সম্পূর্ণ ভিজে গিয়েছে। তাড়াতাড়ি দৌড়ে ওয়াশরুমে গিয়ে লুকিয়ে পড়েছিলেন অনন্যা। ওয়াশরুম থেকেই তিনি শুনতে পাচ্ছিলেন, ভিক্ট্রি স্ট্যান্ডে উঠে ট্রফি নেওয়ার জন্য তাঁর নাম ডাকা হচ্ছে। কিন্তু লজ্জায় ওয়াশরুম থেকে বেরোতে পারেননি অনন্যা। আজও এই ঘটনাটি মনে করলে তাঁর খুব খারাপ লাগে বলে জানিয়েছেন তিনি।
অনন্যার মতে, এই ধরনের ঘটনা নাবালিকাদের মনে যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। অনন্যা নিজেও এখনও এই ঘটনাটি ভুলতে পারেননি। প্রায় সব বালিকাদের ক্ষেত্রেই এই ধরনের ঘটনা ঘটে। ফলে স্কুলের উচিত বালিকাদের পিরিয়ড সম্পর্কে সচেতন করে তাদের মন থেকে ভীতি দূর করা।
তবে অনন্যা ক্ষেত্রে তাঁর বন্ধুরা তাঁর সঙ্গে সহযোগিতা করলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সহপাঠীরাই এগুলি নিয়ে মজা করে। এখনও অবধি পিরিয়ড হলে প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই পিরিয়ডের দিনগুলি মেয়েদের পুজো করতে দেওয়া হয় না। একবিংশ শতকে দাঁড়িয়েও শবরীমালার মতো বহু মন্দিরে রজঃস্বলা নারীদের প্রবেশ নিষেধ। নারীদেরই ভাঙতে হবে এই প্রাচীরকে। নারীই পারে সমাজকে সচেতন করে তুলতে।
View this post on Instagram