21 শে ফেব্রুয়ারি বারবার ফিরে ফিরে আসে। গর্ব ও যন্ত্রণার এক মিলমিশের দিন। বাংলা ভাষার জন্য বুকের রক্ত দিয়ে শহীদ হয়েছিলেন একঝাঁক তাজা প্রাণ। দিনভর বহু সেলিব্রিটি বাংলা ভাষার প্রতি গর্ববোধ করেছেন। এবার মুখ খুললেন টলিউডের অভিনেতা অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় (Anindya Chatterjee)।
View this post on Instagram
উত্তর কলকাতার বুকে বড় হওয়া অনিন্দ্য পড়াশোনা করেছেন স্কটিশ চার্চ স্কুলে, বাংলা মাধ্যমে। বাংলা মাধ্যমের অন্যান্য ছাত্রছাত্রীদের মতো অনিন্দ্যও বাংলা ভাষাতেই লেখাপড়া করেছেন। বাঙালি হিসাবে বাংলা ভাষায় ভাবার অভ্যাস রয়েছে তাঁর। তবে কাজের প্রয়োজনে ইংরাজি বলতে, পড়তে ও লিখতে হয়। কখনও কখনও অনুবাদ করতে হয়। কিন্তু বাংলা তাঁর রক্তে। বাঙালি হিসাবে গর্বিত অনিন্দ্য জানালেন, একসময় ইংরাজি মাধ্যম স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকদের অবহেলিত চোখে চোখ পড়লেও বাংলায় খিস্তিখেউড় করা ও বাংলা গদ্য পড়ার মধ্যে ছিল এক অদ্ভুত স্বাধীনতা।
অনিন্দ্য মনে করেন, বাংলা ভাষার প্রতিটি শব্দকে উদযাপন করলে বাংলা খিস্তিখেউড়কেও উদযাপন করা উচিত। এখনও বন্ধুরা একসঙ্গে থাকলে খিস্তিখেউড় দিয়েই কথা হয়। তাতে মনের অভিব্যক্তি প্রকাশে সুবিধা হয় বলে মনে করেন তিনি। গাড়ি চালানোর সময় অন্য গাড়ি চেপে দিলে খিস্তিখেউড় দিয়েই প্রথম বাদানুবাদ শুরু হয়। তবে অভিনেতা হওয়ার পর শব্দ চয়নে সাবধানী হতে হয়েছে অনিন্দ্যকে। কিন্তু মনের মধ্যে তথাকথিত অশ্লীল শব্দ ঘোরাফেরা করে।
View this post on Instagram
ছোটবেলায় অন্যান্য বাংলা মাধ্যমের ছাত্রছাত্রীদের মতো অনিন্দ্যরও অসুবিধা হত টিউশন ক্লাসে। কারণ টিউশন ক্লাসের অধিকাংশ পড়ুয়া ইংরাজি মাধ্যম স্কুলের হওয়ার কারণে শিক্ষক-শিক্ষিকারা ইংরাজিতেই পড়াতেন। কিন্তু বাংলা মাধ্যমের ছাত্রছাত্রীরা যেভাবে অমিত্রাক্ষর ছন্দ বুঝেছে, ইংরাজি মাধ্যমের ক্ষেত্রে তা হয়েছে অনেক দেরিতে বলেই মনে করেন অনিন্দ্য। পরবর্তীকালে কেরিয়ারের কারণে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর ইংরাজি খবরের কাগজ বা বই পড়ে নিজেকে তৈরি করেছিলেন অনিন্দ্য। ফলে ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখতে অসুবিধা হয়নি।
কিন্তু অনিন্দ্য মনে করেন, বর্তমানের রাজনৈতিক পরিস্থিতির ফলে হিন্দি ভাষার সঙ্গে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে বাংলার। অপমানিত হচ্ছে বাংলা ভাষা। গায়ের জোরে কখনও কোনও ভাষার আধিপত্য বিস্তার করা উচিত নয় বলে মনে করেন অনিন্দ্য। তিনি মনে করেন, ভারতবর্ষ সমস্ত ভাষার সহাবস্থান। তাই সব ভাষার ক্ষেত্রে সহিষ্ণুতা থাকা দরকার। কিন্তু বর্তমানে বাংলা ভাষার জয়গান গাইতে গাইতে হিন্দি ভাষার বিরুদ্ধে লড়তে চান অনিন্দ্য।
সত্যিই খুব অদ্ভুত কথা। যদি সব ভাষার সহাবস্থানের কথা ভাবা যায়, তাহলে পরক্ষণেই কেন হিন্দি ভাষার বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখার কথা বললেন অনিন্দ্য? ভারতীয় ভাষা ও সংস্কৃতিকে কি তাহলে গ্রাস করে নিচ্ছে রাজনৈতিক মনোভাব?
View this post on Instagram