এই মুহূর্তে ভারতবর্ষে সবচেয়ে চর্চিত নাম আরিয়ান খান (Aryan Khan)। তিনি খুব ভালো গিটার বাজাতে পারেন, গান গাইতে পারেন। বই পড়া তাঁর অন্যতম প্রিয় বিষয়। ভবিষ্যতে তিনি নিজেও লেখক হতে চান। কিন্তু অক্টোবরের একটি রাত ওলট-পালোট করে দিয়েছে তাঁর জীবন।
View this post on Instagram
আরিয়ানকে সবাই চেনেন বলিউড অভিনেতা শাহরুখ খান (Shahrukh Khan)-এর পুত্র হিসাবে। নেটিজেন ও বলিউডের একাংশ মনে করেন, শাহরুখ তাঁর ছেলেকে মানুষ করতে পারেননি। এমনকি মাদককান্ডে আরিয়ানের গ্রেফতার হওয়ার কারণে শাহরুখের সঙ্গে চুক্তি ছিন্ন করেছে অনলাইন লার্নিং অ্যাপ বাইজুস। শাহরুখের অন্যতম দামী ডিলগুলির মধ্যে এটি ছিল একটি। আরিয়ান সম্পর্কিত খবরের নিচে কমেন্ট বক্স উপচে পড়ে কটুক্তিতে।
কিন্তু যাঁরা কটুক্তি করছেন, তাঁরা কি জীবনে কেউ গাঁজা ছুঁয়ে দেখেননি! আরিয়ান গাঁজা সেবন করেছিলেন। তিনি তা স্বীকার করেছেন। দেশের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ছাত্রছাত্রীদের অধিকাংশ কিন্তু গাঁজা দিয়ে তৈরি ‘জয়েন্ট রোল’ সেবন করেন। তাঁদের হাতে কেন হাতকড়া পরে না? তাহলে মহাদেব দেবাদিদেব-এর পুজো বন্ধ করে দেওয়া উচিত। কোনো ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করে এই কথা বলা হচ্ছে না। একজন দেবতার পুজোয় গাঁজার কল্কে দিয়ে কোথাও নেশাকেই কি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে না? ইদানিং অধিকাংশ মানুষকেই দেখা যায় সিগারেটের মাধ্যমে নিকোটিন সেবন করতে। টোব্যাকো বা নিকোটিন কি কোনো নেশা নয়? এমনকি শাহরুখ নিজেও চেইন স্মোকার।
কিন্তু নেটিজেন থেকে শুরু করে তারকারা, কেউ একবারও ভাবছেন না, দেশকে নেশামুক্ত কিভাবে করা যায়! তখন তাঁরা সবাই দেখিয়ে দেবেন রাজনৈতিক দলগুলিকে। আপাতত আরিয়ান খানকে তুলোধোনা করাই সকলের বিনোদন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন আরিয়ান। মাদক সেবনের কারণে অনুতপ্ত আরিয়ান যাতে কোনো চরম পথ না বেছে নেন, তার জন্য জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি চলছে তাঁর কাউন্সেলিং। এনসিবি আধিকারিক সমীর ওয়াংখেড়ে (Sameer Wankhede)-ও যথেষ্ট সহানুভূতির সাথে কথা বলছেন আরিয়ানের সঙ্গে। তা কিন্তু আরিয়ান শাহরুখ-পুত্র বলে নয়, একজন তেইশ বছর বয়সী ছেলে বলে। তেইশ বছরে পা রাখা একটি ছেলেকে তার ভুলের জন্য দায়ী করে তার হাত ছেড়ে দিলে সে হারিয়ে যাবে নেশার অন্ধকারে। সমীর জানেন সেই কথা।
View this post on Instagram
তাই আরিয়ান ও তাঁর সঙ্গীদের অন্ধকার থেকে বের করে আনতেই সমীরের এই প্রচেষ্টা। অপরদিকে আরিয়ান তাঁর মা-বাবার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন। একই সঙ্গে সমীরকে আরিয়ান কথা দিয়েছেন, এই ভুলের পুনরাবৃত্তি আর কখনও হবে না। আরিয়ান এমন কিছু করার চেষ্টা করবেন, তা সমীরকে গর্বিত করবে। আরিয়ানের জামিনের পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য হয়েছে 20 শে অক্টোবর। শুনানি হবে এনডিপিএস আদালতে।
হয়তো এই প্রতিবেদন পড়ে অনেকেই বলবেন, জেলের কষ্ট সহ্য করতে না পেরে আরিয়ান এই কথা বলছেন। বাইরে বেরোলেই আবারও তিনি নেশা করতে শুরু করবেন। কিন্তু মনে রাখবেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় কটুক্তি করাটাও প্রায় নেশার মতো নয় কি? লেখিকা অথবা সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করা “গাঁজা খেয়ে লিখেছে” বলার জন্য যাঁরা সবসময়ই তৈরি, তাঁরা কি নিজেরা কটুক্তি ছাড়া কখনও যুগান্তকারী কিছু লেখার চেষ্টা করেছেন?
View this post on Instagram