কিছু আচমকা সংবাদ থাকে যার জন্য কোনো ভণিতার প্রয়োজন হয় না। বিশেষ করে মা-বাবার সামনে যখন তাঁদের সন্তান চলে যান না ফেরার দেশে, তখন থাকে না কোনো সান্ত্বনা। আটাত্তর বছর বয়সে পুত্রকে হারালেন অভিনেতা বরুণ চন্দ (Barun Chanda)। স্বাভাবিক ভাবেই জীবন সায়াহ্নে এসে এত বড় আঘাত বিপর্যস্ত করে দিয়েছে বর্ষীয়ান অভিনেতাকে। 10 ই জুলাই, সোমবার একান্ন বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন বরুণবাবুর পুত্র অভীক চন্দ (Abhik Chanda)। একরকম হঠাৎই অভীকের প্রয়াণ ঘটেছে।
View this post on Instagram
সম্প্রতি অভীক অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁর চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু চিকিৎসকরা ধরতে পারেননি, অভীকের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটেছিল। বরুণবাবু জানিয়েছেন, সঠিক সময়ে ফুসফুসের সংক্রমণ না ধরা পড়ার ফলে তা ভয়াবহ আকার নিয়েছিল। এর ফলে অভীকের সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে সংক্রমণ। সেপ্টিসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অকালে প্রয়াত হন তিনি। চিকিৎসকদের এত বড় গাফিলতি মানতে পারছেন না সন্তানহারা পিতা বরুণবাবু। কোনোদিন ভাবেননি, পুত্রের শেষকৃত্য করতে হবে নিজে হাতে। অভীকের এই ভাবে চলে যাওয়া চব্বিশ ঘন্টা পরেও স্বাভাবিক ভাবেই মানতে পারছেন না তাঁর পরিবারের কেউই। অভীকের প্রয়াণ অবশ্যই সঠিক চিকিৎসা না করার ফল।
চেস্ট এক্স রে, ই.সি.জি., ইকো প্রভৃতি টেস্টের ফলে ফুসফুস ও হার্টের যাবতীয় সমস্যা সম্পর্কে আধুনিক যুগে অবগত হওয়া যায়। এমনকি সঠিক মেডিকেশনের মাধ্যমে অনায়াসেই ফুসফুসের সংক্রমণ সারিয়ে তোলা সম্ভব। উপরন্তু একান্ন বছর বয়স হওয়ার কারণে অভীকের পক্ষে সহজেই এই সংক্রমণের সাথে লড়াই করা সম্ভব ছিল। তাহলে এত বড় দূর্ঘটনা কি করে ঘটল, অনায়াসেই এই প্রশ্ন তোলাই যায়।
প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য দিল্লি স্কুল অফ ইকনমিক্সে ভর্তি হয়েছিলেন অভীক। একসময় সাংবাদিকতা করলেও পরবর্তীকালে একটি বহুজাতিক সংস্থায় উচ্চপদে আসীন ছিলেন অভীক। বরুণবাবু সম্প্রতি জানিয়েছিলেন, তাঁর পুত্র অভীককে বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি লেখক হিসাবেও দেশ ও বিদেশের মাটিতে বিখ্যাত হয়ে উঠেছিলেন অভীক চন্দ। তাঁর লেখা বই ‘দারাশিকো : দ্য ম্যান হু উড বি কিং’, ‘ওয়াক থ্রি পয়েন্ট’ যথেষ্ট জনপ্রিয়। অভীক চন্দর অকালপ্রয়াণে ‘হুপহাপ’ (HOOPHAAP)-এর তরফ থেকে তাঁর পরিবারের জন্য রইল সমবেদনা। তারাদের দেশে ভালো থাকুন অভীক।
View this post on Instagram