ভারতী সিং (Bharti Singh) বর্তমানে এশিয়ার মহিলা কমেডিয়ানদের মধ্যে অন্যতম। তিনি যখন ইন্ডাস্ট্রিতে আসেন, তখন স্ট্যান্ড আপ কমেডির জগৎ ছিল পুরুষশাসিত। কিন্তু সংজ্ঞা বদলে দিয়েছিলেন ভারতী। প্রমাণ করে দিয়েছিলেন তাবড় পুরুষ কমেডিয়ানদের অবলীলায় হারিয়ে দিতে পারে তাঁর চূড়ান্ত সেন্স অফ হিউমার। একসময় সেলিব্রিটি ডান্স রিয়েলিটি শো ‘ঝলক দিখলা যা’-য় অংশগ্রহণ করেছিলেন ভারতী। সেই সময় তিনি একটি ডান্স পারফরম্যান্স করেছিলেন যাতে তাঁকে দরিদ্র মেয়ের চরিত্রে দেখা গিয়েছিল। মঞ্চে ডাস্টবিন থেকে খাবার যোগাড় করার দৃশ্য উপস্থাপনা করার পর রীতিমত কেঁদে ফেলেছিলেন তিনি। সেদিন ভারতী বলেছিলেন তাঁর সংগ্রামের কথা। তবে এরপর বহু বছর কেটে গিয়েছে। সেই অতীত ভোলেননি ভারতী।
বর্তমানে হায়েস্ট পেইড কমেডিয়ান ভারতী সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে তুলে ধরেছেন তাঁর অতীতের কথা। তিনি জানিয়েছেন, ভারতীর মা অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন। কাজের বাড়ি থেকে তিনি যা খাদ্যসামগ্রী পেতেন তা নিজের ছেলেমেয়েদের মুখে তুলে দিতেন ভারতীর মা। আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত ভারতীদের সংসারে একা একটি গোটা আপেল খেতে পাওয়া ছিল বিলাসিতা। একসময় ক্ষিদের জ্বালায় ডাস্টবিন থেকে উচ্ছিষ্ট আপেল কুড়িয়ে খেয়েছেন ভারতীরা। তবে তাঁর মতে, শুধৌ তিনিই নন, আরও বহু কৌতুকশিল্পী রয়েছেন যাঁরা দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছেন।
View this post on Instagram
ভারতী মনে করেন, কমেডি সাধারণতঃ কষ্ট থেকেই জন্ম নেয়। দরিদ্র মানুষদের কাছে উৎসবের দিনগুলি সবচেয়ে কঠিন। উৎসবের দিন সকলে যখন আনন্দ করতেন, তখন ভারতীর হতাশ লাগত। অপেক্ষা করে থাকতেন, মা কখন কাজের বাড়ি থেকে মিষ্টি আনবেন ও বাড়িতে দীপাবলীর পুজো হবে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে অন্য ছেলেমেয়েদের বাজি পোড়ানো দেখে আনন্দ হত ভারতীর। হাততালি দিয়ে উঠতেন তিনি।
ভারতী তাঁর অতীত সম্পর্কে যথেষ্ট খোলামেলা। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, তাঁর মা অন্যের বাড়িতে টয়লেট পরিষ্কার করতেন। সেই সময় তাঁদের উচ্ছিষ্ট খাবার বেঁচে গেলে তাঁরা ভারতীর মাকে নিয়ে যেতে বলতেন। অনেকে তাঁর সাথে খারাপ আচরণ করতেন। কিন্তু সময় চিরকাল খারাপ থাকে না তা প্রমাণ করে দিয়েছেন ভারতী। নিজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। পাশাপাশি নিয়েছেন তাঁর পুরো পরিবারের দায়িত্ব।
View this post on Instagram