BollywoodHoop Plus

Rekha: অবৈধ সন্তান ছিলেন রেখা, বৈধতা দিল বলিউড

“শহরটা যেন একটা জঙ্গল আর নিরস্ত্র আমি হেঁটে চলেছি ক্রমাগত” একসময় রেখা (Rekha) বলেছিলেন এই কথাটি। কিংবদন্তী রেখা কি সত্যিই কিংবদন্তী হতে চেয়েছিলেন? বারবার মানুষের উপর বিশ্বাস করেছেন। কিন্তু লহমায় তা ভেঙে গিয়েছে। জন্মলগ্ন থেকেই বিতর্কিত রেখা। তাঁর জন্ম একটা ভুল, আজও মনে করেন রেখা।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Rekha (@legendaryrekha)

নবাগতা সুন্দরী নায়িকা পুষ্পাভল্লী (Pushpavalli)-র সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন দক্ষিণের বিখ্যাত প্রযোজক,পরিচালক ও অভিনেতা জেমিনি গণেশন (Gemini Ganeshan)। এই সম্পর্ক ছিল অবৈধ। কারণ দুজনেই তখন বিবাহিত। এমনকি দুজনের সন্তানও রয়েছে। দিনের পর দিন সহবাসের ফলে গর্ভধারণ করলেন পুষ্পাভল্লী। পঞ্চাশের দশকের দক্ষিণ ভারতের সমাজে ছিল না মহিলাদের সম্মান। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে কোণঠাসা মহিলারা নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরা নিতেও কুন্ঠা বোধ করতেন। এই অদ্ভুত আবহে 1954 সালের 10 ই অক্টোবর পুষ্পাভল্লী জন্ম দিলেন ভানুরেখার। জেমিনি স্বীকার করেননি এই কন্যাসন্তানকে। তিনি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু এখানে জাগে একটি প্রশ্ন। সেদিন যদি কন্যাসন্তানের পরিবর্তে পুত্রসন্তানের জন্ম দিতেন পুষ্পাভল্লী, তাহলেও কি জেমিনি সেই সন্তানকে অস্বীকার করতেন? তবে ভানুরেখাকে নিজের কাছে রাখলেও তাঁর পড়াশোনার দায়িত্ব পালন করেননি পুষ্পাভল্লী।

পুষ্পাভল্লী সকালে উঠে সুসজ্জিতা হয়ে বেরিয়ে যেতেন স্টুডিওর উদ্দেশ্যে। ভানুরেখা সারাদিন ধরে অপেক্ষা করত মায়ের জন্য। তার সঙ্গী ছিল একটি বড় এলাচ। এলাচটি তার মা তাকে দিয়েছিলেন। নিজের পার্সে এলাচ রাখতেন পুষ্পাভল্লী। ওই এলাচের গন্ধে মিশে যেত ভানুরেখার মায়ের গন্ধ। একসময় শিশুশিল্পী হিসাবে অর্থ উপার্জন করতে হল ভানুরেখাকেও। অবৈধ সন্তান সে। তার উপর কন্যাসন্তান। আর্থিক ক্ষমতা থাকলেও অবৈধ কন্যাসন্তানের ভার নিতে চাননি পুষ্পাভল্লী। কাছে রাখলেও ভানুরেখার পরিস্থিতি ও অবস্থান স্বীকার করতে মানসিক ভাবে লজ্জিত বোধ করতেন তিনি। ফলে মাত্র এক বছর বয়স থেকে অর্থ উপার্জন করতে শুরু করেছিল ভানুরেখা। পৃথিবী চেনার বয়স তখন তার হয়নি। স্টুডিওর জোরালো আলোয় ঘাবড়ে গিয়েছিল ছোট্ট মেয়েটি। 1958 সালে তেলেগু ফিল্ম ‘ইন্টি গুট্টু’-র মাধ্যমে অভিনয়ে অভিষেক হল ভানুরেখার।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Rekha (@iconicrekha)

কিন্তু ওইটুকুই। পুষ্পাভল্লীর অনুপস্থিতিতে তাঁর বাকি সন্তানদের দেখভাল করত ছোট্ট ভানুরেখা। পুষ্পাভল্লীর মনে হয়েছিল, অবৈধ সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখিয়েছেন, এটাই অনেক। তাঁর বৈধ সন্তানদের আয়ার কাজ করে মাতৃঋণ শোধ করতে পারে ভানুরেখা। কার্যতঃ তাই হয়েছিল। ছোট্ট ভানুরেখাকে রান্নাঘরে হাত পুড়িয়ে রান্নাও করতে হয়েছে তার ভাইবোনদের জন্য। তার জীবনযাত্রার প্রতিটি মুহূর্তে চারপাশের তথাকথিত মানুষগুলি মনে করিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের অনিচ্ছায় সে এসেছে পৃথিবীতে।

শৈশবের স্মৃতি বেদনাদায়ক হলে তা ভোলা কঠিন। আজও আরব সাগরের তীরে সি ফেসিং বাংলোর জানালায় অথবা কাঞ্জিভরমের আড়ালে রেখা ভাবেন ভানুরেখার কথা। ভানুরেখারা হারিয়ে যায় না। তারা নতুন রূপে বারবার ফিরে আসে এই পৃথিবীতে। ভানুরেখার শৈশবে ভেঙেছিল তার প্রথম বিশ্বাস। এক ধোঁয়াশা, কিছু হেঁয়ালি ও রেখার জন্ম। বলিউডের অন্যতম সুন্দরী কিংবদন্তী সব বিতর্ককে সঙ্গী করে পার করে ফেললেন আটষট্টিটি বসন্ত। তিনি রেখা ওরফে ভানুরেখা গণেশন। আজ তাঁর যায় আসে না কোনো স্বীকৃতিতে। নিজেই ব্যবহার করেন না গণেশন পদবী। আটষট্টি বছর বয়সে সবেমাত্র উন্মোচিত হল ভানুরেখার জীবন পদ্মের একটি পাপড়ি। ধীরে ধীরে সরে যাবে কুয়াশার আস্তরণ। কলমের কালো কালি লিখবে রেখা হয়ে ওঠার সোনালি যাত্রাপথের কথা।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by India News HD (@indianewshd)

whatsapp logo