whatsapp channel
BollywoodHoop Plus

দেউলিয়া হয়ে চরম কষ্টে মৃত্যু হয়েছিল যেসব জনপ্রিয় বলিউড তারকার

একসময় তাঁরা বলিউড দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। প্রতিটি ফিল্মে তাঁরা ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু স্টারডম সত্ত্বেও বেশ কিছু বলিউড তারকা রয়েছেন যাঁদের জীবন সায়াহ্নে এসে হাসপাতালের বিল মেটানোর সামর্থ্য ছিল না। অনেকে হয়ে গিয়েছিলেন দেউলিয়া। এ যেন প্রখ্যাত নাট্যকার গিরীশচন্দ্র ঘোষ (Girish chandra Ghosh)-এর কথার পুনরাবৃত্তি, “দেহপট সনে নট সকলি হারায়”। তালিকায় প্রথমেই আসে এ.কে.হঙ্গল (A.K.Hangal)।

যেসময় মানুষ অবসর গ্রহণ করেন, সেই সময় বলিউডে ডেবিউ করেছিলেন এ.কে.হঙ্গল। তখন তাঁর বয়স বাহান্ন বছর। জীবদ্দশায় 225 টি ফিল্মে অভিনয় করেছিলেন হঙ্গল। স্নেহময় পিতার চরিত্রেই তাঁকে অধিকাংশ সময় দেখা গেছে। ‘শোলে’-তে রহিম চাচার ভূমিকায় তাঁর সংলাপ “ইতনা সন্নাটা কিঁউ হ্যায় ভাই” এখনও সুপারহিট। 2012 সালে অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে একটি বি-গ্রেড হাসপাতালে মৃত্যু হয় হঙ্গলের। আর্থিক দুরবস্থার কারণে হাসপাতালের বিল মেটাতে পারেননি তিনি। হঙ্গলের শেষ যাত্রায় ছিলেন না কোনো বলিউড তারকা।

একসময় মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন অচলা সচদেব (Achala Sachdev)। বলরাজ সাহানী (Balraj Sahani)-র সঙ্গে জুটিতে “অ্যায় মেরি জোহরা জবি” আজও অমর। লাহোরের বাসিন্দা অচলা দেশভাগের পর দিল্লিতে চলে আসেন। লাহোরে থাকাকালীন অল ইন্ডিয়া রেডিও-তে কাজ করতেন অচলা। দিল্লি এসে অল ইন্ডিয়া রেডিওর দিল্লির অফিসে কাজ করতে শুরু করেন তিনি। এরপর মুম্বই থেকে আসে অভিনয়ের সুযোগ। জীবদ্দশায় প্রায় দেড়শোটি ফিল্মে অভিনয় করেছিলেন তিনি। একসময় অভিনয় জগত থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন অচলা। থাকতেন পুণের একটি ফ্ল্যাটে। 2011 সালে মৃত্যুর পাঁচ বছর আগে ওই ফ্ল্যাটটি তিনি দান করেছিলেন এক সংগঠনকে। বিনিময়ে তাঁর শর্ত ছিল তাঁকে দেখাশোনা করার। এরপর রান্নাঘরে পড়ে গিয়ে অচলার পা ভেঙে যায়। একানব্বই বছর বয়সে দৃষ্টিহীন ও পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে মৃত্যু হয় অচলার। মৃত্যুর সময় কপর্দক শূণ্য হয়ে গিয়েছিলেন তিনি।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Raadhya (@raadhyaonline)

বলিউডে নির্বাক যুগের নায়িকা সুলোচনা (Sulochana)প্রথম জীবনে টেলিফোন অপারেটরের কাজ করতেন। তখন তাঁর নাম ছিল রুবি মায়ার্স। তিরিশের দশকে নির্বাক ফিল্মে সুলোচনা নামে তাঁর ডেবিউ হয়। তিনি এতটাই জনপ্রিয় ছিলেন, শোনা যেত তৎকালীন বম্বের গভর্নরের থেকেও তাঁর রোজগার নাকি বেশি। পেয়েছিলেন দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার। শেষ জীবনে তিনি দেউলিয়া হয়ে মারা যান। এমনকি ফ্ল্যাটের ভাড়া মেটানোর টাকা ছিল না তাঁর কাছে।

তনুজা (Tanuja)-র মাসী ছিলেন নলিনী জয়ন্ত (Nalini Jayant),চল্লিশ-পঞ্চাশের দশকের নামী নায়িকা। 1941 সালে ‘বহেন’ ফিল্মে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিল। 1945 সালে পরিচালক বীরেন্দ্র দেশাই (Virendra Desai)-এর সঙ্গে বিয়ে হলেও তিন বছর পর তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। 1960 সালে অভিনেতা প্রভু দয়াল (Prabhu Dayal)-কে বিয়ে করেন নলিনী। 2001 সালে স্বামীর মৃত্যুর পর তাঁর অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি হয়। প্রতিবেশীদের সঙ্গেও মেলামেশা বন্ধ করে দেন নলিনী। একাকীত্ব গ্রাস করে তাঁকে। 2010 সালের বাইশে ডিসেম্বর চুরাশি বছর বয়সে মৃত্যু হয় তাঁর। চেম্বুরের বাংলোতে তিনদিন মৃতদেহ পড়ে থাকার পর পুলিশ দরজা ভেঙে তা উদ্ধার করে অন্তিম সৎকারের জন্য নিয়ে যায়।

‘আলবেলা’ ফিল্মের ‘শোলা যো ভড়কে’ বিখ্যাত করেছিল ভগবান দাদা (Bhagwan Dada)। প্রকৃত নাম ছিল আভাজী পলব। বলিউডে নাচের নতুন স্টাইল তাঁর হাত ধরেই আসে। একসময়ের জুহুতে পঁচিশটি ঘরের বাংলো, সাতটি গাড়ি সবই হারিয়েছিলেন তিনি। একের পর এক ফিল্ম ফ্লপ হতে নিঃস্ব হয়ে মুম্বইয়ের বস্তিতে বাস করতে শুরু করেছিলেন ভগবান দাদা। সেখানেই 2002 সালে 88 বছর বয়সে মৃত্যু হয় তাঁর।

‘বৈজু বাওরা’ খ্যাত ভারত ভূষণ (Bharat Bhushan) এককালে বলিউডের সবচেয়ে দামী নায়ক ছিলেন। নব্বইয়ের দশকেও অভিনয় করেছেন তিনি। প্রযোজনা সংস্থা খুলেছিলেন। কিন্তু বিপুল আর্থিক ক্ষতির জেরে দেউলিয়া হয়ে যান তিনি। 1992 সালে তাঁর মৃত্যু হয়।

‘পাকীজা’ খ্যাত মীনা কুমারী (Meena Kumari) 1939 সাল থেকে 1972 সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেছিলেন বলিউডে। কিন্তু ছিল মদ্যপানের আসক্তি। ঋণের দায় চেপেছিল। মীনা কুমারী অসুস্থ হলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মাত্র আটত্রিশ বছর বয়সে তিনি মারা গেলেও তা অসুস্থতার জন্য নয়। তাঁর মৃত্যু রহস্যে মোড়া। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন মীনা। কিন্তু মৃত্যুর দিন পাশে খোলা ছিল অক্সিজেন মাস্ক। অক্সিজেনের অভাব মীনাকুমারীকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছিল।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Nuzhat Islam (@nomadic_nush)

whatsapp logo