মা সতীর নিম্নাষ্ঠ পড়েছিল এই স্থানে, বাংলার বুকে আজও অক্ষত এই রহস্যময় সতীপীঠ
অট্টহাস সতীপীঠ পশ্চিমবঙ্গ এর বর্ধমান জেলার নিরোল গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ ডিহি গ্রামে অবস্থিত এক সতীপীঠ। এর উত্তরে রয়েছে ঈশানি নদী এবং কিছুটা দূরে রয়েছে শ্মশান। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সতীপীঠ। মন্দির এর কাছে অবশ্য কয়েকটি পিকনিক স্পট আছে। জঙ্গলে ঘেরা নিরিবিলি পরিবেশে শীতকালে এখানে অনেকে পিকনিক করতে আসেন। এখানে রয়েছে প্রচুর গাছপালা। রংবেরঙের প্রজাপতি, পাখি দেখা যায়।
ইতিহাস বলছে, সত্যযুগে দক্ষযজ্ঞ এ শিবনিন্দা সহ্য করতে না পেরে দেহত্যাগ করেন সতী। এরপর মহাদেব বীরভদ্রকে পাঠান দক্ষকে বধ করতে। সতীর দেহ নিয়ে তিনি শুরু করেন তাণ্ডব নৃত্য। সুদর্শন চক্র দিয়ে সতীর দেহকে ছিন্ন ভিন্ন করে দেন। এই অংশগুলো যেখানে যেখানে পতিত হয়েছে সেখানেই তৈরি হয়েছে সতীপীঠ। এগুলো তীর্থে পরিণত হয়েছে। মনে করা হয়, এখানে দেবীর নিচের ঠোঁট পড়েছে।
এই গ্রামে কিছু কৃষক বাস করত। তারা মাঠে চাষাবাদ করত। ঈশানি নদীর ধারে অবস্থিত এই স্থান ছিল জঙ্গলে একেবারে ঢাকা। দিনের বেলাতেও এখানে কেউ যেতো না। একদিন কৃষকেরা চাষ করতে গিয়ে এক সাধু বাবাকে জঙ্গলে ধ্যান করতে দেখেন। তারা প্রচন্ড উৎসাহের সঙ্গে দলবদ্ধ হয়ে তার কাছে যান এবং তাকে প্রণাম করেন। সাধুবাবা সেখানে যজ্ঞ করেন। যজ্ঞ শেষ হলে সেখানে তিনি একটি ত্রিশূল পুঁতে দিয়ে অদৃশ্য হয়ে যান। চলে যাওয়ার আগে তিনি বলেছেন এটি হলো একটি সতীপীঠ।
এখানে দেবী হলেন ফুল্লোরা ও ভৈরব। এখানে আরও এক প্রাচীন শিলা মুর্তি রয়েছে। সারাবছর এই চত্বরে ভক্ত সমাগম হয়। নভেম্বর থেকে মার্চ মাস এই ৫ মাস এখানে ভক্তের সমাগম একটু বেশি হয়ে থাকে। দোলের সময় এখানে বিশাল মেলা বসে। এখানে থাকার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা রয়েছে।