দেবশ্রী ও শতাব্দী দুজনেই একটা সময় বাংলা সিনেমাকে মাতিয়ে রেখেছিলেন। উত্তম-সুচিত্রা-সুপ্রিয়ার জামানা শেষ হওয়ার পর শতাব্দী ও দেবশ্রী বহু বাংলা সিনেমা করেছেন এবং বাঙালির দুপুর মাতিয়ে রাখতেন। সেই সময় প্রসেনজিৎ বা তাপস পালের বিপরীতে বেশিরভাগ সময় থাকতেন হয় শতাব্দী নয় দেবশ্রী।
দুই রায় সুন্দরীকে বাংলার দর্শক খুবই আপন করে নিয়েছিলেন। ডাল ভাত কিংবা মাছে ভাতে বাঙালির কাছে এই দুই নায়িকা ছিলেন তাদের প্রিয় নায়িকা। প্রসঙ্গত, বলা যায় যে দেবশ্রী রায় শতাব্দীর তুলনায় খানিক সিনিয়র ছিলেন। কারণ, দেবশ্রী তার অভিনয় জীবনের যাত্রা শুরু করেন ১৯৬৬ সালে হিরন্ময় সেনের ‘পাগল ঠাকুর’ দিয়ে। এরপর তরুণ মজুমদারের ‘কুহেলী’ (১৯৭১) ছবিতে রাণুর চরিত্রে অভিনয় করার পরে তার পরিচিতির বিস্তার ঘটে। পাশাপাশি, শতাব্দী রায়ের অভিষেক হয় ১৯৮৬ সালে তপন সিংহর ‘আতঙ্ক’ ছবি দিয়ে।
আপনি জানেন কি বাংলার এই দুই দাপুটে সুন্দরী অভিনেত্রীর মধ্যে রসায়ন কিন্তু মিষ্টি ছিল না। সিনে জগতে পারস্পরিক হিংসা, রাগ চলে। অনেকেই আছে মুখে হাসি রেখেও দূরত্ব রেখে চলেন, কেউ কেউ আবার হাসি দিয়েই মন জয় করে নেন।
এখানে, দেবশ্রীর সঙ্গে শতাব্দীর সম্পর্ক একটু টক ছিল বটে। অবশ্য এই কথা সম্প্রতি শতাব্দী রায় নিজেই স্বীকার করেছেন এক পত্রিকার সাক্ষাৎকারে। নিজেদের ভিতরকার সম্পর্ক নিয়ে বলতে গিয়ে শতাব্দী স্পষ্ট করে জানান, “দেবশ্রী আমার অনেক আগে থেকেই হিরোইন ছিল। ও তখন এক নম্বর নায়িকা ছিল। আমি আসার পর দ্বিমত তৈরি হয় লোকেদের মধ্যে যে কে এক নম্বরে। কিন্তু, আমাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক ছিল না। দেবশ্রীর তরফ থেকেই ভালো সম্পর্ক ছিল না। ওর থেকে কোনওদিনই ঠিকঠাক ওয়েলকাম পাইনি। আমরা একটাই ছবি করেছিলাম। প্রসেনজিৎ আমাদের দু’জনকে খুব সুন্দর করে হ্যান্ডেল করেছিল, যাতে আমাদের মধ্যে কোনও সমস্যা না হয়।”
তাহলে এখন সম্পর্ক কেমন? দুজনেই রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বহুদিন কাজ করেন। বর্তমানে দুজনেই প্রবীণ অভিনেত্রী। এখনও কি আগের মতই টক ঝাল সম্পর্ক দুজনের? এই প্রশ্নের উত্তরে শতাব্দী জানান, ‘এখন আমাদের মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক। দেবশ্রীর সঙ্গে এখন আমি খুব কমফর্টেবল। দেখা হলে আমরা আমাদের কথা শেয়ার করি, ভালোলাগা, খারাপলাগা শেয়ার করি। যখন নিয়মিত কাজ করতাম তখন ভালো সম্পর্ক ছিল না’।