Hair Donation: ক্যান্সার আক্রান্তদের উদ্দেশ্যে চুল দান করলেন শ্রীরামপুরের কলেজ পড়ুয়া সোহিনী
মানুষ রোগের যন্ত্রণায় যতটা না কষ্ট পায়, তার থেকে বেশি কষ্ট পায় মন ভেঙে গেলে। ক্যান্সার রোগীদের শরীরে জ্বালা যন্ত্রণার পাশাপাশি তাদের রয়েছে মনের কষ্ট। কেমোথেরাপি নিলে ক্যান্সার থেকে হয়তো মুক্তি পাওয়া যায়, অথবা কিছুদিনের জন্য ভালো থাকা যায় কিন্তু মনমানসিকতা একেবারেই দুমড়ে মুচড়ে শেষ হয়ে যায়। কেমোথেরাপি চললে মাথার সব চুল উঠে যায়, নারীদের সৌন্দর্য্যের এক অন্যতম উপাদান হলো তার চুল। কিন্তু যদি চুল উঠে যায় আয়নার সামনে নিজেকে দাঁড়িয়ে দেখলে মন একেবারেই ভেঙে যায়, এটাই স্বাভাবিক। বর্তমানে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তারা এই সমস্ত রোগীদের পাশে দাঁড়িয়েছে।
অনেক মানুষের থেকেই তারা লম্বা লম্বা চুল কালেক্ট করে এই সমস্ত ভেঙ্গে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া মানুষকে নতুন চুল দিচ্ছে। এই ভাবনা চিন্তাটাই অনেকদিন আগে মনের মধ্যে তালগোল পাকাচ্ছে শ্রীরামপুরের বাসিন্দা সোহিনীর মনে। খুব কাছের এক মানুষকে সে দেখেছে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে, সে কিভাবে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে কেমোথেরাপি চলাকালীন মাথার চুল উঠে গিয়ে সে কিভাবে মানসিকভাবে অস্থির হয়ে পড়েছে, আর এই অস্থিরতাই তাকে অনেকটা কষ্ট দিয়েছে।
ছোটবেলা থেকেই পড়াশুনার পাশাপাশি গান শোনা, আবৃত্তি, সমাজ সেবা করতে ভালোবাসে সে, বাবা শান্তনু চক্রবর্তী, ডানকুনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন বর্তমানে তিনি অবসরপ্রাপ্ত, মা রূপা চক্রবর্তী দুজনের ইনস্পিরেশনে ছোটবেলা থেকে সকলের উপকার করব, এই মানসিক ইচ্ছা আস্তে আস্তে গড়ে উঠেছে সোহিনীর মনে। ফেসবুকে অনেক দিন ধরেই খোঁজাখুঁজি করছিলেন, কি করে এই ক্যান্সার রোগীদের উদ্দেশ্যে তিনি চুল দান করবেন, অবশেষে সুযোগটা পেয়ে গেলেন। হেয়ার ডোনেশন ওয়েস্টবেঙ্গল খড়্গপুরের একটি সংস্থা তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে। অবশেষে সোহিনীর সুন্দর চুল তারা বাড়ি থেকে নিয়ে যান।
এত ছোট বয়সে সোহিনী স্বপ্ন দেখে ভবিষ্যতে কিছু করার,গ্রাফিক ডিজাইন নিয়ে পড়াশোনা করছেন তাই গ্রাফিক ডিজাইন নিয়ে চাকরি করার পাশাপাশি ইচ্ছা আছে একটি আবৃত্তির স্কুল করার, যেখানে সে অনেক বাচ্চাদের শেখাবেন এবং যারা নিম্নবিত্ত তাদেরকেও শেখাতে তিনি ইচ্ছুক বিনামূল্যে। এত অল্প বয়সে এত বড় মনের পরিচয় দিয়েছে সোহিনী, তার জন্য তাকে স্যালুট জানাতে হয়, তাকে দেখে নতুন প্রজন্ম হয়তো এই কাজে এগিয়ে আসবে একদিন, চুল পরে বড় হয়ে যাবে, কিন্তু তার এই অসাধারণ কাজ সত্যিই মানুষের মধ্যে থেকে যাবে।