আলোর নীচেই থাকে অন্ধকার। তা আরও একবার প্রমাণিত হল অভিনেত্রী শুভশ্রী গাঙ্গুলী (subhasree ganguly)-র দিদি দেবশ্রী গাঙ্গুলী (debashree ganguly)-র ঘটনায়। বিয়ের মাত্র আড়াই মাসের মধ্যে বধূ নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেফতার হলেন দেবশ্রীর স্বামী অমিত ভাটিয়া (Amit bhatia)।
দেবশ্রী নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে বলেছেন, তিনি নিজেও প্রথমদিকে কিছু বুঝতে পারেননি। অন্যান্য মেয়েদের মতো দেবশ্রীও মা-বাবার কথা ভেবে চুপ করেছিলেন। দেবশ্রীর বাবা অসুস্থ এবং মায়ের অস্ত্রোপচার হয়েছে। তাই দেবশ্রী ভেবেছিলেন, সব মিটমাট করে নেবেন। কিন্তু কিছুদিন আগেই দেবশ্রী জানতে পারেন তাঁর স্বামী অমিত ধর্ষণের মামলায় জামিনে মুক্ত রয়েছেন। সেই মুহূর্তেই শুভশ্রী ও রাজ চক্রবর্তী (Raj Chakraborty)-কে গোপনে সব ঘটনা জানান দেবশ্রী। শুভশ্রী ও রাজের সাহায্যে গ্রেফতার হন অমিত।
2014 সালে একটি নামী জীবন বীমা সংস্থায় কাজের সূত্রে অমিত ও দেবশ্রীর পরিচয় হয়েছিল। মিশুকে অমিত দেবশ্রীর সাথে সহজেই বন্ধুত্ব করে নেন। কিন্তু তখন দুজনেই অন্য সম্পর্কে ছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও দেবশ্রীর পছন্দ-অপছন্দের খেয়াল রাখতেন অমিত। চলতি বছরের ভ্যালেন্টাইন্স ডে-তে অমিত দেবশ্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। দেবশ্রী রাজি হয়ে যান।
এরপর 2 রা এপ্রিল অমিতের সঙ্গে দেবশ্রীর বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ের পর দেবশ্রীর কাছ থেকে কাজের অছিলায় মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করেছিলেন অমিত। অপরদিকে দেবশ্রীর শাশুড়ি দীপালি ভাটিয়া (Diwali bhatiya) দেবশ্রীর সমস্ত গয়না নিজের কাছে রেখে দেন। দীপালি বাগুইআটির বাড়িতে থাকেন। দেবশ্রী, তাঁর ছেলে, অমিত, এক পরিচারিকা এবং দেবশ্রীর পোষ্য থাকতেন আরেকটি ফ্ল্যাটে। দেবশ্রী ভেবেছিলেন, তাঁর গয়না শাশুড়ির কাছে সুরক্ষিত থাকবে। দেবশ্রীর মনে হয়েছিল, অমিত যখন কাজের প্রয়োজনে টাকা চাইছেন তখন স্ত্রী হিসাবে তাঁর পাশে দাঁড়ানো দেবশ্রীর কর্তব্য। কিন্তু বিয়ের সাতদিন কাটতে না কাটতেই অমিত দেবশ্রী, দেবশ্রীর ছেলে ও পরিচারিকার উপর মানসিক অত্যাচার শুরু করেন। এমনকি করোনা আক্রান্ত হওয়ার সময় অমিতের হাতে শারীরিক নিগ্রহ ভোগ করতে দেবশ্রীকে। দেবশ্রী তাঁর শাশুড়িকে অনুরোধ করেছিলেন অমিতকে বোঝাতে। কিন্তু অমিতের মা দীপালি দেবশ্রীকে অশ্রাব্য গালিগালাজ করেন। অপরদিকে দেবশ্রীর বাবা অমিতের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাঁকেও চূড়ান্ত অপমানিত হতে হয়।
এর পরেই অমিতের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলার কথা জানতে পারেন দেবশ্রী। কুড়ি বছর বয়সী একটি মেয়েকে ধর্ষণ করেছিলেন অমিত। খবরের সত্যতা যাচাই করার জন্য মেয়েটির সঙ্গে কথা বলে দেবশ্রী জানতে পারেন, সুবিচার চেয়ে মেয়েটি প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও উপরমহলের প্রভাব খাটিয়ে অমিত জামিনে মুক্ত হয়ে যান। এমনকি মেয়েটি অমিতের মা দীপালির বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেছেন। দেবশ্রী বুঝতে পেরেছিলেন, এটা অমিত ও দীপালির একধরনের ব্যবসা এবং তাঁদের এবারের শিকার দেবশ্রী। তাই জামিনে মুক্ত হওয়ার পরের মাসেই দেবশ্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন অমিত। দেবশ্রী চান, ধর্ষিতা মেয়েটি যেন সুবিচার পান।