দেব (Dev) বরাবর সৌজন্যবোধের রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন। দরিদ্র, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নজির তৈরি করেছেন তিনি। ঘাটালের সাংসদ হয়েও তিনি ফিরিয়ে দিলেন না উলুবেড়িয়ার মেয়ে ঝিলিক (Jhilik)-কে।
বাবার চিকিৎসার খরচ যোগাতে অসুস্থ বাবাকে নিয়ে পথে নেমেছে এগারো বছরের ঝিলিক। ছোট্ট মেয়েটিকে অসহায় ভাবে ঘুরতে দেখে দেবের তরফে যোগাযোগ করা হয় ঝিলিকের সাথে। দেব আশ্বাস দিয়েছেন, ঝিলিকের বাবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন। ঝিলিকের বাবার চিকিৎসার খরচ বহন করছেন দেব। এছাড়াও তিনি সকলকে ঝিলিকের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসার বার্তা দিয়েছেন। এই মুহূর্তে দেবের কাছে ছোট্ট মেয়েটির মুখের হাসি সবচেয়ে প্রয়োজনীয়। মাত্র এগারো বছরের একরত্তির এই লড়াই মুগ্ধ করেছে তাঁকে।
View this post on Instagram
উলুবেড়িয়া থানার হীরাপুর দক্ষিণ রামচন্দ্রপুরের বাসিন্দা ঝিলিকের বাবা পঞ্চাশ বছর বয়সী সুশান্ত মন্ডল (Sushanta Mandal) দীর্ঘ সময় ধরে শারীরিক অসুস্থতার কারণে শয্যাশায়ী। তাঁর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ- প্রত্যঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। পেশায় শ্রমিক সুশান্তের পারিবারিক উপার্জন এই মুহূর্তে বন্ধ। কারণ তিনিই ছিলেন সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী। ফলে প্রায় অনাহারে তাঁদের দিন কাটছে। যে বয়সে ছেলেমেয়েরা খেলাধূলা করে, সেই বয়সে ছোট্ট ঝিলিক নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে সংসারের উপার্জন ও বাবার চিকিৎসার দায়িত্ব। হাল ছাড়ার পাত্রী নয় সে। বাবার ভ্যান নিয়ে সকালে মায়ের সাথে বেরিয়ে পড়ে ঝিলিক। নিজেই ভ্যান চালিয়ে রামচন্দ্রপুর গ্রাম থেকে দীর্ঘ রাস্তা পেরিয়ে উলুবেড়িয়া শহরে কিছু সাহায্যের আশায় আসে সে। কখনও কিছু সহৃদয় ব্যক্তির সাহায্য মেলে। কখনও বা সারাদিনের খাবারও জোটে না। খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হয়। সারাদিন ভ্যান চালিয়ে সন্ধ্যার সময় বাড়ি ফিরে হাত-পায়ে যন্ত্রণা হলেও হার না মানা মেয়ে বই নিয়ে পড়তে বসে। এর মধ্যেই মায়ের সঙ্গে শয্যাশায়ী বাবার কাজে হাত লাগাতে যেতে হয় তাকে। বাবাকে সবকিছুই করে দিতে হয়। নিজে কোনো কাজ করতে ক্রমশ অসমর্থ হয়ে পড়ছেন তিনি।
ঝিলিক স্থানীয় একটি স্কুলের ক্লাস সিক্সের ছাত্রী। পড়াশোনা করার বয়সে ঝিলিকের এই জীবন সংগ্রাম দেবের অত্যন্ত খারাপ লেগেছে। তিনি যতটা সম্ভব সাহায্য করতে চান। দেব হয়তো ভগবান নন যে ঝিলিকের বাবাকে পুরোপুরি সুস্থ করে দিতে পারবেন। যা হয়ে গেছে, তা তিনি বদলাতে না পারলেও ঝিলিকের পাশে সবসময়ই থাকবেন। দেব চেষ্টা করবেন, ঝিলিককে যাতে আর ভ্যান নিয়ে পথে পথে না ঘুরতে হয়। সে যেন আবারও স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা করতে পারে। দেব বিশ্বাস করেন, ভগবান মন্দিরে নয়, মানুষের মনে থাকবেন। তিনি ও প্রশাসন ঝিলিকের পাশে থাকবেন। এছাড়াও ঝিলিকের আশেপাশের মানুষদের তার পাশে থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন দেব।
View this post on Instagram