ইদানিং বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সবসময়ই শোনা যায়, বাংলা ফিল্মের পাশে দাঁড়ানোর আবেদন। যদিও সাম্প্রতিক কালে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মধ্যেই অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে ‘মাধুকরী’ নিয়ে। তবে রাণা সরকার (Rana Sarkar) সোশ্যাল মিডিয়াকে যথেষ্ট ব্যবহার করেন। প্রসেনজিৎ (Prosenjit Chatterjee)-এর কোনো ফিল্ম রিলিজ করলেই বক্স অফিস হিসাব করতে বসেন রাণা। অর্থাৎ ‘পা ধরে টানাটানি’। বিজয়া দশমীতেই বা তিনি বাদ যান কি করে! দশমীর সময়কালে রাণার ফেসবুক পোস্টে দেব (Dev) ও প্রসেনজিৎ অভিনীত ‘কাছের মানুষ’ ফিল্মকে লক্ষ্য করে ভেসে উঠল কটাক্ষ।
রাণা জানালেন, তাঁর প্রযোজনায় নির্মিত ফিল্ম ‘কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন’ ইতিমধ্যেই পেরিয়ে গিয়েছে চার কোটি। অপরদিকে ‘কাছের মানুষ’ এখনও অবধি পেরিয়েছে পঞ্চাশ লক্ষ। রাণার কামনা, পরের বছর আরও ভালো হোক। এর আগে ফেসবুকে রাণার দেওয়া প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, আবীর চট্টোপাধ্যায় (Abir Chatterjee) অভিনীত ফিল্ম ‘কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন’ রিলিজের পর প্রথম তিন দিনে পার করেছিল দুই কোটি। এখনও অবধি ‘কাছের মানুষ’-এর বক্স অফিস কালেকশন নিয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি দেবের প্রযোজনা সংস্থার পক্ষ থেকে। এরপর আবারও একাদশীর সকালে রাণার বক্তব্য, এক বছরের হিট বা সুপারহিটের ট্রেন্ড দেখে বোঝা যাচ্ছে, তথাকথিত সুপারস্টারদের বক্স অফিসে বিক্রি নেই। এর কৃতিত্ব জিতু কমল (Jeetu Kamal), আবির চট্টোপাধ্যায় (Abir Chatterjee) ও শিবপ্রসাদ (Shibaprashad)-নন্দিতা (Nandita)-র। ‘অপরাজিত’, ‘বেলাশুরু’, ‘কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন’ সুপারহিট।
নাম না করে রাণা লিখেছেন, দুই তারকার টিভি রাইট তিন কোটি বা তার বেশি হওয়ার অর্থ হল বাড়িতে বিনা পয়সায় দর্শকরা এই তারকাদের দেখেন। অন্ধ ভক্তরা ছাড়া এঁদের ফিল্ম দেখতে হলমুখী হন না দর্শক। এই কারণে বক্স অফিসে তাঁদের লাইফটাইম বিক্রি সর্বোচ্চ দুই কোটি বা আড়াই কোটি হয়। রাণার মতে, 2019 সালে সৃজিত মুখার্জী (Srijit Mukherjee) নির্মিত ফিল্ম ‘গুমনামি’-র পর থেকে প্রসেনজিৎ-এর সব ফিল্ম ফ্লপ। দেব, জিৎ (Jeet)-এর প্রযোজনায় তৈরি ফিল্ম ‘টনিক’, ‘কিশমিশ’, ‘রাবণ’-এর বক্স অফিস কালেকশন নিয়ে যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে তা মিথ্যা। এই তিনটি ফিল্মের বক্স অফিস কালেকশন নাকি আড়াই কোটি ছাড়ায়নি। ভুল বক্স অফিস তথ্যের ফলে বাংলা ফিল্মের ক্ষতি হচ্ছে বলে মত পোষণ করেন রাণা।
ইতিমধ্যেই রাণার চ্যালেঞ্জ, যদি তিনি মিথ্যাচার করেন, তাহলে ফিল্মগুলির বিলিং ডিটেলস প্রকাশিত হোক অথবা চাইলে তাঁর বিরুদ্ধে আদালতেও যেতে পারেন ফিল্মগুলির নির্মাতারা। তাহলে সত্য উন্মোচিত হবে। তার উপর দেব, প্রসেনজিৎ-এর ভক্তদের রাণার বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ, ভুল তথ্য দিয়ে নিজের পছন্দের তারকাদের সমর্থন করতে গিয়ে বাংলা ফিল্মের ক্ষতি যেন না করেন তাঁরা। যদিও রাণার এই মন্তব্যের জেরে বারবার তাঁকে সমালোচিত হতে হচ্ছে, কিন্তু তবু তিনি থামতে রাজি নন।
পরিশেষে, বলতেই হচ্ছে, একটু অপেক্ষার প্রয়োজন। কারণ বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির আকাশে ঘনাচ্ছে সিঁদুরে মেঘ। খুব শীঘ্রই কিন্তু প্রযোজক, পরিচালক ও তারকারা পড়তে চলেছেন মিডিয়ার র্যাপিড ফায়ার রাউন্ডের মুখে। বাকি কথা আর নাই বা লেখা হল, অপেক্ষার অবসান তো মিডিয়াই ঘটাবে।