সুন্দরবনের ভেড়িতে একেবারেই দেখা যাচ্ছে না মাছ। যেন একেবারেই মরুভূমি হয়ে গেছে। জল থাকলেও তাতে মাছের দেখা মিলছে না। উপগ্রহ থেকে যে ছবি পাঠানো হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, উপকূলের ১০ হাজার হেক্টর জমিতে মাছ চাষ করা হয়। তবে আগে এখানে ছিল সুন্দরী, গরান, গেওয়া এই সমস্ত গাছের জঙ্গল। তারপরেই পরবর্তীকালে এই অঞ্চলে ভেড়ি তৈরি হলো। এখনকার মৎস্য চাষিরা মাছ ব্যবসার পাশাপাশি গাছ ব্যবসাও শুরু করেছেন। ভেড়ির পাশে লাগাচ্ছেন ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরী, গোলপাতা। আর জলের মধ্যে খেলা করে বেড়াচ্ছে গোলতা, বাগদা পাশে আরো কত মাছ।
মাছ চাষিরা মনে করছেন এই গাছই নাকি মাছেদের বাঁচিয়ে রেখেছে। জলের ভেতরে যে ঝোপ আছে, সেই ঝোপের শিকড় উপর দিকে উঠে আসে। আর মাছ নাকি সেই শিকড়ের ফাঁকে আশ্রয় নিচ্ছে, তারা গাছের ছায়াতেই কিন্তু বেঁচে থাকছে। এইভাবে গাছ এবং মাছের মধ্যে পরস্পর একটা সুন্দর সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। সাধারণত যে সমস্ত মৎস্যজীবীরা এই ধরনের ম্যানগ্রোভ বাস্তু তন্ত্র করছে, তাদেরই কিন্তু মাছ বেশ ভালো হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে চিংড়ি মাছ আকারেও কিন্তু বেশ খোলতাই হচ্ছে।
উত্তর ২৪ পরগনা আর দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভেড়িতে এমন পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা হয়েছে তার ফলাফলও কিন্তু বেশ পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু কিভাবে ম্যানগ্রোভ চাষের ফলে মাছেদের উপকার হচ্ছে? ম্যানgr ওপরে জমে থাকার শ্যাওলা প্রাণীরা খাচ্ছে এছাড়া ম্যানগ্রোভের পাতায় থাকে ট্যানিন, যা মাছ এদের মধ্যে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাকে অনেকাংশ। সুন্দরবনের ভেড়িতে মাছ খুঁজে না পাওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে মৎস্যজীবীরা বলছেন, সাধারণত সুন্দরবনের ভেড়িগুলোতে নাইট্রোজেন যুক্ত রাসায়নিক খাবার দেওয়া হয় মাছগুলিকে।
এইগুলি খেয়ে মাছগুলি ও রীতি মতন বিষাক্ত হয়ে পড়ছে এছাড়া ভেড়িগুলো যখন পরিষ্কার করা হয়, তখন কাদা জলের মধ্যে এই ধরনের রাসায়নিক খাবার থাকে, যার ফলে দূরদূরান্ত পর্যন্ত মাছ এদের দেখতে পাওয়া যায় না। এত পরিমান রাসায়নিক নদীতে মেশার ফলে কিছুতেই লার্ভা কে বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না, যার ফলে একদল মাছ চাষির মাথায় হাত পড়েছে।