GossipHoop Plus

বিয়ের পরেও টেলিভিশন কাঁপাচ্ছেন যে পাঁচ জনপ্রিয় অভিনেত্রী

কে বলেছে বিয়ের পর ক্রেজ কমে যায়? না না সব ক্ষেত্রে এই ধারণা ঠিক নয়, সেইজন্যেই আজ এমন পাঁচ টেলি অভিনেত্রীর নাম ও তাঁদের কাজ তুলে ধরব যারা বিবাহিত হওয়া স্বত্বেও পর্দায় হিট। এখনো যাদের অভিনয় দেখার জন্য সন্ধ্যে হলেই টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রাখেন দর্শকরা। রইল ৫ টেলি তারকার নাম,ছবি ও কাজের গল্প।

তিয়াসা – বাংলা সিরিয়ালের জনপ্রিয় মুখ শ্যামা। নাম শ্যামা হলেও শ্যামল রং তাঁর নয়। অভিনয় জগতে পা রাখার আগেই বনগাঁর এই মেয়ে বিয়ে করে নেন। অভিনেতা সুবানের সঙ্গে খুব কম বয়সেই গাঁটছড়া বাঁধেন এই শ্যামা ওরফে তিয়াসা রায়। ২০১৭ তে হয় বিয়ে। শ্বশুরবাড়ি গোবরডাঙায়। বিয়ের আগে থেকেই অবশ্য বনগাঁ টু গোবরডাঙা করতেন তিয়াসা। অভিনেতা সুবানের সঙ্গে আলাপ হয় তিয়াসার একটি নাটকের ওয়ার্কশপে, এরপরেই প্রেম ও বিয়ে।

সত্যি এই বিয়ে তিয়াসার জীবনে আশীর্বাদের মতন হয়ে আসে। বিয়ের পরেই টেলিপর্দায় ডেবিউ করেন তিয়াসা। শুরু হয় বাংলা ধারাবাহিক ‘কৃষ্ণকলি’। এখন তিয়াসাকে শ্যামা নামেই সকলে চেনে। শ্যামল রং, কৃষ্ণ প্রেম, ভজন নিয়ে দর্শদের মনে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছেন বিবাহিতা-নবাগতা তিয়াসা রায়।

নবনীতা – বাংলা টেলিভিশনের মিষ্টি অভিনেত্রী নবনীতা দাস। ২০১৫-এ ‘দীপ জ্বেলে যাই’ ধারাবাহিকের মাধ্যমে ডেবিউ করেন এই মিষ্টি মেয়ে। পড়াশুনোতেও বেশ তুখোড়। ভূগোলে অনার্স নিয়ে পাশ করার পর বাংলা টেলি পর্দায় নাম লেখান। ২০১৫-এ ‘দীপ জ্বেলে যাই’ ধারাবাহিকের মধ্যে দিয়ে বাংলার দর্শকদের মনে জায়গা করে নেন। এরপর ‘অর্ধাঙ্গিনী’ ধারাবাহিকে ঈশ্বরীর চরিত্রে অভিনয়। এই সেটেই ‘অর্ধাঙ্গিনী’তে অভিনয় করতে গিয়ে নবনীতার আলাপ হয় অভিনেতা জিতু’র সঙ্গে। এমনকি ‘মহাপীঠ তারাপীঠ’ এ একসঙ্গে অভিনয় করেন এই জুটি। ধারাবাহিক শেষ হতেই শুরু হয় প্রেম। ব্যাস, ২০১৯ এর বৈশাখে বিয়ে হয় জিতু-নবনীতার। চুটিয়ে সংসার ও অভিনয় দুইই করছেন।

নবনীতা শপিং করতে খুব পছন্দ করেন, এমনকি নিজেকে ‘শপ্যাহলিক’ বলেন। তিনি নাকি একটুও টাকা জমাতে পারেন না, তাঁর ওয়ারড্রোবে ভর্তি বিভিন্ন স্টাইলিশ জুতো। এই শপিং এর নেশা ছাড়াও নবনীতা দারুন গল্প লেখেন। শ্যুটিং এর ফাঁকেই নাকি ছোট গল্প, কবিতা লেখেন। এমন মিষ্টি মেয়ে কিন্তু বিয়ের পরেও দর্শকদের একই ভাবে টানছেন।

সোলাঙ্কি – ২০১৮ র ৪ ফেব্রুয়ারি দীর্ঘদিনের বন্ধু শাক্য বসুকে বিয়ে করেন সোলাঙ্কি। এই শাক্য একজন প্রবাসী বাঙালি। চাকরি সূত্রে নিউজিল্যান্ডে থাকেন। বিয়ের পর সোলাঙ্কিও স্বামীর সঙ্গে নিউজিল্যান্ড পাড়ি দেন। কিন্তু বাংলার দর্শকদের ক্রেজ ভুলতে না পারা সোলাঙ্কি কাম্ব্যাক করেন বাংলা ধারাবাহিকে। বর্তমানে এই অভিনেত্রী ‘কাদম্বিনী’ চরিত্রে ফাটিয়ে অভিনয় করছেন। একটা সময় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস কাঁপাতেন তিনি, এখন ছোট পর্দার দর্শকদের মনে পাকাপাকি জায়গা করে নিয়েছেন এই বিবাহিতা অভিনেত্রী।

একটা সময় ‘ইচ্ছেনদী’র দর্শকরা ভেবেই ফেলেছিল যে বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সোলাঙ্কির অনস্ক্রিন কেমিস্ট্রি বুঝি রিয়েল লাইফেও একইভাবে বজিয়ে থাকবে। কিন্তু অনস্ক্রিন কেমেস্ট্রি যতই মজবুত হোক না কেন কমিটমেন্ট থেকে পিছু পা হননি তিনি, তাই বহু পুরনো বন্ধুর গলাতেই মালা দেন। এখনো বিয়ের পরেও একই ক্রেজ ধরে রেখেছেন সোলাঙ্কি রায়।

রুপসা – এমন একজন অভিনেত্রী রূপসা যিনি বিভিন্ন ধারাবাহিকে লিড রোল না করলেও দুর্দান্ত সাপোরটিং চরিত্রে অভিনয় করেন। সম্প্রতি রূপসাকে দেখা যাচ্ছে ‘জীবন সাথী’ ধারাবাহিকে। সাধারণত পজিটিভ রোল করে থাকেন এই সুন্দরী অভিনেত্রী। রপসার সব থেকে বড় ইউএসপি হল তাঁর টানা টানা চোখ আর অমলিন হাসি। অভিনয়ের পাশাপাশি রূপসার কিন্তু একটি বুটিকও আছে। স্বামী-সংসার-সন্তান সামলে এখনো দাপিয়ে সিরিয়াল করে যাচ্ছেন তিনি।

‘জীবন সাথী’ ছাড়াও রূপসাকে দেখা গিয়েছে ‘দীপ জ্বেলে যাই’, ‘রাখিবন্ধন’, ‘জড়োয়ার ঝুমকো ও ‘খোকাবাবু’ বাংলা সিরিয়ালে। এছাড়াও আকাশ ৮-এ একটি রান্নার শো হোস্ট করতেন রূপসা। এই অভিনেত্রীর স্বামী স্নেহাশিস চক্রবর্তী যদিও ‘ব্লুজ’ প্রযোজনা সংস্থার কর্ণধার। স্বামী, সন্তানের পূর্ণ সাপোর্টে এখনো রূপসা হিট। কে বলবে এনার একটি ১০/১১ বছরের একটি ছেলে আছে…………

সোনামণি – ‘দেবী চৌধুরাণী’ ধারাবাহিকের লিড অ্যাক্ট্রেস সোনামণি এখন ‘মোহর’ ধারাবাহিকের প্রধান নায়িকা। সাইকোলজি অনার্স নিয়ে পড়াশুনো করা একটি মেয়ে মালদা জেলা থেকে কলকাতা আসে শুধুমাত্র অভিনয়ের জন্য। অভিনয়ের প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর ‘দেবী চৌধুরাণী’ ধারাবাহিক দিয়ে পথ চলা শুরু করেন। এখন ‘মোহর’ হিট।

ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে খোলামেলা নন সোনা মণি, কিন্তু বর্তমানে তিনি স্বামীর থেকে আলাদা থাকছেন। সুত্র মারফত জানা গিয়েছে যে তিনি তাঁর স্বামীর কাছে ডিভোর্স পেপার পাঠিয়ে দিয়েছেন। এই ডিসেম্বরে সোনা মণির বিয়ের পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার সময়। কিন্তু সোনামণির স্বামী সুব্রত রায়ের কথায় লকডাউনের সময় থেকেই আলাদা থাকেন অভিনেত্রী। একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সুব্রত এটাই বলেছিলেন, “আমরা আজও বিবাহিত। ডিসেম্বরে বিয়ের ৫ বছর হবে। আমাদের অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ, মালদা থেকে ওর অভিনয়ের কথা ভেবেই আমরা কলকাতায় আসি। ফ্ল্যাট কিনি। সব ঠিক ছিল। হঠাৎ লকডাউনে কী যে হল, মালদায় ও মায়ের বাড়ি থাকতে গেল। তার পরে আর ফিরল না। শুধু তাই নয়, আমার ফোন অবধি তোলে না আর। অথচ আমায় না বলে ভাইকে নিয়ে কলকাতার ফ্ল্যাটে গিয়ে নিজের সব জিনিস, বিয়ের কাগজপত্র নিয়ে চলে গিয়েছে। পাশের বাড়ির মাসিমার কাছে শুনে তো আমি অবাক!”

Related Articles