Haimanti Ganguly: কালো টাকায় অর্পিতাকে টেক্কা দিচ্ছেন হৈমন্তী!
অবশেষে হদিস মিলেছে নিয়োগ দূর্নীতি কান্ডে অভিযুক্ত গোপাল দলপতি (Gopal Dalpati) ওরফে আরমান গাঙ্গুলী (Armaan Ganguly)। বর্তমানে দিল্লিতে রয়েছেন গোপাল। তিনি নিজেই মিডিয়ার সামনে এসে জানিয়েছেন, কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh) ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। তদন্ত হলেও ততদিনে তাঁর সামাজিক মর্যাদা চলে যাবে, দাবি গোপালের। গোপাল জানিয়েছেন, নিয়োগ দূর্নীতি কান্ডে কোনোভাবেই অভিযুক্ত নন তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী হৈমন্তী গাঙ্গুলী (Haimanti Ganguly)। এমনকি হৈমন্তীর মায়ের দাবি, তাঁর মেয়ে সৎ, সামনে এলেই সত্য জানতে পারবেন সকলে। অথচ সিবিআই-এর নথি অনুযায়ী লক্ষ লক্ষ টাকা কুন্তলের অ্যাকাউন্ট থেকে ঢুকেছে গোপালের অ্যাকাউন্টে। সামনে এসেছেন হৈমন্তীও।
বর্তমানে গোপালের সাথে হৈমন্তীর বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চললেও তিনি হৈমন্তীর প্রয়োজনে সাহায্য করেন বলে গোপাল ও হৈমন্তী দুজনেই জানিয়েছেন। তবে নিয়োগ দূর্নীতি কান্ডে তাঁর নাম উঠে আসায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হৈমন্তী। এমনকি তিনি জানেন না, গোপালের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নমিনিতে রয়েছে তাঁর নাম। গোপাল যদি নিয়োগ দূর্নীতি কান্ডে যুক্ত থাকেন, তাহলে তিনি অবশ্যই দোষী বলে মনে করেন হৈমন্তী। এমনকি তিনি সিবিআই-এর সাথে সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে হৈমন্তীর মায়ের দাবি ছিল বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে তাঁর মেয়ের। কিন্তু হৈমন্তী জানালেন, তাঁর মা-বাবা বয়স্ক মানুষ। অতগুলি সংবাদমাধ্যমের সামনে তাঁদের সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যরা হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন বলে দাবি হৈমন্তীর। কিন্তু হৈমন্তী কেন উধাও হয়ে গিয়েছিলেন? মডেল-অভিনেত্রীর দাবি, অযাচিত ভাবে নিয়োগ দূর্নীতি কান্ডে তাঁর নাম জড়িয়ে পড়ার ফলে হৈমন্তী কারও সাথে কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে ছিলেন না। তাঁর ফোন সুইচড অফ ছিল। ফলে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও হৈমন্তীর দেখা পাওয়া যায়নি।
হৈমন্তীর দাবি, তিনি গোপাল দলপতির কাছ থেকে কোনোরকম আর্থিক সাহায্য নেননি। অথচ তিনি টলিউডে বিশেষ নামী মডেল ও অভিনেত্রী নন। হৈমন্তীর ক্ষেত্রে দিন পিছু পারিশ্রমিক ছিল দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। এমনকি ‘অচেনা উত্তম’-এর পরিচালক অতনু (Atanu) জানিয়েছেন, প্রযোজকের সাথে যোগাযোগ তৈরি করতে চেয়েছিলেন হৈমন্তী। এই ফিল্মে তাঁর অত্যন্ত ছোট চরিত্রে অভিনয়ের কথা থাকলেও প্রযোজকের কাছাকাছি যেতে চাওয়ার আঁচ পেয়ে হৈমন্তীকে সরিয়ে দেন অতনু। অপরদিকে কুন্তল এখনও অবধি তাঁর দাবিতে অনড়। তিনি জানিয়েছেন, হৈমন্তীকে ফাঁসানোর চেষ্টা তিনি করেননি। বরং হৈমন্তী ও গোপাল দুজনেই নিজেদের দোষ এড়িয়ে যাচ্ছেন। কুন্তলের মতের স্বপক্ষে যুক্তি রয়েছে। তা হল হৈমন্তীর বিপুল সম্পত্তি। হাওড়ার উত্তর বাকসারার সাধারণ পরিবারের মেয়ে হৈমন্তীর কেরিয়ারগ্রাফ একদমই বলার মতো নয়। অথচ সূত্রের খবর, পূর্ব মেদিনীপুর সহ একাধিক জেলায় নামে-বেনামে অন্তত দু’শো বিঘা জমি রয়েছে গোপাল ও হৈমন্তীর। বীরভূমে তাঁদের নামে রয়েছে হোটেল ও গেস্ট হাউস। মুচিপাড়া সহ কলকাতায় একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে গোপাল ও হৈমন্তীর নামে। এর মধ্যে টালিগঞ্জের তালাবন্ধ ফ্ল্যাটের সামনে থেকে মিলেছে হৈমন্তীর সিনেমার স্ক্রিপ্টের সাথেই রোল নাম্বার লেখা কাগজ। হৈমন্তীর দাবি, তিনি জানেন না, এই কাগজ এল কি করে!
মুম্বইয়ের নরিম্যান পয়েন্টের মতো নামীদামী স্থানে অফিস রয়েছে হৈমন্তীর নামে। রয়েছে কলকাতার বুকে ডালহৌসি অঞ্চলে ‘হৈমন্তী অ্যাগ্রো প্রাইভেট লিমিটেড’-এর রেজিষ্টার্ড অফিস। ব্যাঙ্কে গোপাল ও হৈমন্তীর যুগ্ম অ্যাকাউন্ট রয়েছে। 2 রা মার্চের পর সিবিআই-এর তলব ছিল গোপালকে। তবে বর্তমানে তা কতদূর এগিয়েছে, সেই বিষয়ে জানা যায়নি। হৈমন্তী সামনে এলেও তাঁর নিরাপত্তার কারণে এই মুহূর্তে মিডিয়ার তরফে গোপন রাখা হয়েছে তাঁর ঠিকানা। তবে তিনি কলকাতায় নেই। দেশ ছেড়ে যাননি হৈমন্তী। তিনি স্পষ্ট বলেছেন,দেশ ছেড়ে যাওয়ার মতো অন্যায় করেননি তিনি।