কলকাতা পেরিয়ে মুম্বইয়ের মাটিতে অত্যন্ত পরিচিত মুখ যীশু সেনগুপ্ত (Jissu U Sengupta)। তিনি সেই যীশু সেনগুপ্ত, যাঁকে ‘মহাপ্রভু’-র মতো সুপারহিট সিরিয়ালের সফল নায়ক হওয়ার পরেও বহুদিন কর্মহীন হয়ে থাকতে হয়েছে। টলিউডের মাটিতে শুনতে হয়েছে তিনি ‘অপয়া’। কিন্তু বিধির বিধান ছিল অন্য। বর্তমানের যীশু প্রমাণ করে দিয়েছেন নিজেকে। কিন্তু তবু একসময় মনে হয়েছিল, সব শেষ হয়ে গেল।
View this post on Instagram
তখন যীশুকে ‘অপয়া’ ভাবতে শুরু করেছেন কয়েকজন সবজান্তা প্রযোজক ও পরিচালকের দল। তাঁদের ধারণা, যীশু বাংলা ফিল্মে অভিনয় করলেই ফিল্ম ফ্লপ হয়ে যাবে। যীশুর দুর্ভাগ্যের আকাশকে হঠাৎই বদলে দিয়েছিলেন ঋতুপর্ণ ঘোষ (Rituparno Ghosh)। তিনি আস্থা রেখেছিলেন যীশুর উপর। নিজের ফিল্মে যীশুকে সুযোগ দিয়েছিলেন মেলে ধরার। তাঁর হাত ধরেই যীশুর অভিনেতা থেকে ভালো অভিনেতা হয়ে ওঠা। ঋতুপর্ণ যীশুকে চরিত্র নিয়ে ভাবতে শিখিয়েছিলেন। কিন্তু কয়েকজন নীতিবাগীশ সেদিন ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্কেও কালিমালিপ্ত করেছিলেন, বলেছিলেন তাঁরা সমকামী। ঋতুপর্ণ ও যীশু কর্ণপাত করেননি। তাঁরা নিজেদের সৃষ্টি নিয়ে ব্যস্ত থেকেছেন। কিন্তু হঠাৎই মাঝপথে চলে গেলেন ঋতুপর্ণ। ‘তাসের দেশ’-এর বড় ঘরে বিছানায় চিরঘুমে শায়িত মানুষটিকে দেখে সেদিন যীশুর মনে হয়েছিল সব শেষ হয়ে গেল। কিন্তু তিনিও জানতেন না, সবার অলক্ষ্যে সেটাই ছিল যীশু সেনগুপ্ত হয়ে ওঠার শুরু।
View this post on Instagram
বর্তমানে বলিউডের নিয়মিত মুখ যীশুর ভাবনা বদলে দিয়েছিলেন ঋতুপর্ণ। তিনি চলে যাওয়ার পর প্রায় আট-নয় মাস বাড়িতেই বসেছিলেন যীশু। ভেবেছিলেন, অভিনয় জীবন শেষ হয়ে গেল। এইসময় সৃজিত মুখার্জী (Srijit Mukherjee)-র কাছ থেকে আসে ‘জাতিস্মর’-এ অভিনয়ের প্রস্তাব। আবারও ঘুরে দাঁড়ালেন যীশু।
View this post on Instagram
ধীর পায়ে অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছেন যীশু। অভিনয় জগতে দুই দশকের বেশি সময় কাটিয়ে আজ তিনি অন্যতম সফল অভিনেতা। কিন্তু পিছনের দিকে তাকাতে ভালোবাসেন না। কারণ যা ঘটে গেছে, তা তিনি বদলাতে পারবেন না। ভবিষ্যত নিয়েও ভাবেন না। কারণ তাঁর মনে হয়, পরিকল্পনা করে লাভ নেই, যা হবার, তা হবেই। তবে ‘অপয়া’ তকমাটা তাঁকে ভাবায় না। আজ সেই তকমা আরব সাগরের জলে ভেসে উধাও। পরিশেষে, প্রতিবেদক একটাই কথা বিশ্বাস করেন, যীশু কোনোদিন ‘অপয়া’ ছিলেন না। তাঁকে ‘অপয়া’ তকমা দিয়ে দায় সেরে না ফেলে চিত্রনাট্যের দিকে তাকানো উচিত ছিল। যীশু অভিনীত ফ্লপ ফিল্মের জন্য দায়ী যীশু নন, ফিল্মের দুর্বল চিত্রনাট্য, সৃষ্টিশীলতার অভাব।
View this post on Instagram