হিজাব নিয়ে কর্ণাটকের উডুপি জুনিয়র কলেজে শুরু হওয়া বিতর্ক ক্রমশই বেড়ে চলেছে। বিরোধটি এখন রাজনৈতিক রঙে পরিপূর্ণ। এই বিষয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে নেতাদের সাথে রিচা চাড্ডা, জাভেদ আখতারের মতো বলিউড তারকারাও সমান ভাবে এগিয়ে। এবার এই বিতর্কে যোগ দিলেন বলিউডের ‘পাঙ্গা গার্ল’ কঙ্গনা রানাউতও। বরাবরই সোজাসাপ্টা কথাবার্তা বলে থাকেন তিনি যেকোনো ট্রেন্ডিং বিষয় নিয়ে। এবারেও অন্যথা হলনা। হিজাব বিতর্ক নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানালেন অভিনেত্রী।
অতিসম্প্রতি নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে আনন্দ রঙ্গনাথনের ট্যুইটের একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন কঙ্গনা। দেখা যাচ্ছে দুটি ছবির তুলনা করেছেন আনন্দজি। প্রথম ছবিতে দেখা যাচ্ছে , ইরানী মহিলারা সমুদ্র সৈকতে বিকিনি পড়ে বসে রয়েছেন। ছবিটি বেশ পুরোনো। ১৯৯৭ সালের এবং দ্বিতীয় ছবিতে দেখা যাচ্ছে, বর্তমানের বোরখা পড়া ইরানি মহিলাদের। ছবিটির উপরে লেখা আছে ১৯৭৩ সালের ইরান এবং এখনকার ইরান। ছবিটির সাথেই নিজের কড়া মন্তব্য লিখেছেন কঙ্গনা, “যদি সাহস দেখাতে চান, তবে আফগানিস্তানে বোরখা না পরে দেখান, খাঁচা থেকে বেরিয়ে নিজেদের বন্দি দশা থেকে মুক্ত করতে শিখুন”।
প্রসঙ্গত, বিগত জানুয়ারি মাসে কর্ণাটকের উডুপির ও মান্ডিয়ার দুটি কলেজেই শুরু হয় এই সংঘর্ষ। কিছু ছাত্রী হিজাব পরে কলেজে আসায় তাদের ক্লাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এর দরুণ এক ছাত্রী কর্ণাটক হাইকোর্টে পিটিশন দায়ের করার সময় হিজাব পরে ক্লাসে প্রবেশের অনুমতি নিয়ে নিয়েছিল। এরপর হিজাব পরে ইসলাম ধর্মীয় ছাত্রীরা যেই কলেজে আসে, তৎক্ষণাৎ কিছু হিন্দুত্ববাদী ছাত্র তারস্বরে ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দিতে থাকে। মেয়েটিও ‘আল্লাহ হো আকবর’ বলে প্রত্যুত্তর দেয়। শুরু হয়ে যায় হিজাব বনাম গেরুয়া চাদর-পাগরির মধ্যে ধর্মীয় সংঘর্ষ।
এমত অশান্তির পরিবেশে শান্তি ফেরাতেই কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই আগামী ৩টে দিন এই রাজ্যের সমস্ত স্কুল কলেজ একাধারে বন্ধ রাখার সিন্ধান্ত জানিয়েছিলেন। হিজাব পড়া ইসলাম ধর্মীয়দের মৌলিক অধিকারের অংশ কিনা সেই বিষয়ে ইতিমধ্যেই বিবেচনা সভা বসেছে। এমনকি এর ধর্মীয় দিকটিও ভেবে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়ে দিয়েছে কর্ণাটক হাইকোর্টও। হিজাব বিষয়টি নিয়ে যতদিন না কোনো নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত আসছে ততদিন এই ধর্মীয় পোশাক পড়া নিয়ে কোনো রকম জোর জবরদস্তিও খাটবেনা – জানিয়ে দিয়েছে আদালত।