1970 সালে বলিউডে প্রায় হঠাৎই আবির্ভাব হয়েছিল নবীন নিশ্চল (Navin Nischol)-এর। তৎকালীন ম্যাচো হিরোদের তুলনায় অনেকটাই আলাদা, ঝকঝকে স্মার্ট যুবক নবীনকে তরুণীরা যথেষ্ট পছন্দ করতেন। নবীনের লিপে মারকাটারি ডায়লগ দেওয়ার প্রয়োজন হত না। তাঁর স্ক্রিন প্রেজেন্স ছিল যথেষ্ট আবেদনময়। 1970 সালে নির্মিত ‘সাওন ভাদো’ ফিল্মের মাধ্যমে বলিউডে ডেবিউ করেছিলেন নবীন। এই ফিল্মে তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন রেখা (Rekha)। প্রথম ফিল্মেই নজর কেড়েছিলেন নবীন। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি নবীনকে। একের পর এক হিট ফিল্ম উপহার দিয়েছেন তিনি। তবে নবীন অভিনীত ফিল্মের সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে কম।
সফলতার শীর্ষে থাকাকালীন নবীনের জীবনে ছিল একাধিক নারী। দেব আনন্দ (Dev Anand)-এর ভাইঝি ও শেখর কাপুর (Shekhar Kapoor)-এর বোন নীলু কাপুর (Nilu Kapoor)-এর সাথে বিয়ে হয় নবীনের। দুই সন্তানের জন্ম দেন নীলু। সুখী পরিবার থাকা সত্ত্বেও নবীন একসময় জড়িয়ে গিয়েছিলেন পরকীয়ায়। অভিনেত্রী পদ্মিনী কপিলা (Padmini Kapila)-র সাথে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল তাঁর। নবীনের স্ত্রী নীলু অচিরেই এই কথা জানতে পারেন।
View this post on Instagram
স্বাভাবিক ভাবেই অন্য স্ত্রীদের মতো নীলুও মানতে পারেননি স্বামীর জীবনে দ্বিতীয় নারীর আগমন। নবীনের সাথে তাঁর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এরপর নবীন ও পদ্মিনী লিভ-ইন শুরু করেন। কিন্তু পদ্মিনী একজন পুরুষের সাথে সন্তুষ্ট ছিলেন না। পরিচালক প্রকাশ মেহরা (Prakash Mehra)-র সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন পদ্মিনী। ভেঙে যায় নবীনের সাথে সম্পর্ক। কিন্তু এরপর দিল্লির বাসিন্দা এক বিবাহিতা মহিলার সাথে সম্পর্কে জড়ান নবীন। তাঁর নাম ছিল পাম্মি (Pammi)। কিন্তু এর ফলে পাম্মির মেয়েকে অপমান করে তাঁর শ্বশুরবাড়ি থেকে বার করে দেওয়া হয়। পাম্মির কাছে থাকতে শুরু করেন তাঁর মেয়ে। অনুশোচনায় দগ্ধ হয়ে পাম্মি, নবীনের সাথে সম্পর্ক ছেদ করেন।
কিন্তু এরপর বিবাহ বিচ্ছিন্না গীতাঞ্জলী (Geetanjali)-র সাথে নবীনের সম্পর্ক তৈরি হয়। পরবর্তীকালে তাঁরা বিয়ে করেন। কিন্তু গীতাঞ্জলী জানতেন না, তিনি জীবনে আবারও চরম ভুল করছেন। গীতাঞ্জলী মুম্বইয়ের ফ্ল্যাটে থাকতেন। নবীন পুণেতে থাকতেন। ইচ্ছা হলে গীতাঞ্জলীর ফ্ল্যাটে আসতেন তিনি। মদ্যপান করে নবীন তাঁর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন বলে দাবি করেছেন গীতাঞ্জলী। এমনকি তাঁকে বাড়ি থেকে বার করে দেওয়ার হুমকি দিতেন নবীন। নবীনের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছিলেন গীতাঞ্জলী। তাঁর ফ্ল্যাট থেকে প্রাপ্ত সুইসাইড নোটে নবীন ও তাঁর ভাই প্রবীণ (Prabin)-কে দায়ী করেছিলেন গীতাঞ্জলী। প্রবীণের কুমন্ত্রণা শুনে নবীন তাঁর উপর অত্যাচার করতেন বলে জানিয়েছিলেন গীতাঞ্জলী। নবীনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। কিছুদিন পুলিশি হেফাজতে থাকার পর জামিনে মুক্ত হয়েছিলেন নবীন। কিন্তু এই ঘটনার পাঁচ বছর পর আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন নবীন।
View this post on Instagram