Nusrat Jahan: কোটি কোটি টাকার আর্থিক প্রতারণা, লোকসভা ভোটে টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ নুসরতের

শাসক দলের একের পর এক নেতা, মন্ত্রীর দিকে উঠছে অভিযোগের আঙুল। নিয়োগ দূর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত হয়ে গত এক বছর ধরে জেলে রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) ও তাঁর মডেল-অভিনেত্রী বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (Arpita Mukherjee)। হুগলী জেলার যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি কুন্তল ঘোষ নিয়োগ দুর্নীতির মূল অভিযুক্ত। জেলে রয়েছেন তিনিও। সায়নী ঘোষ (Saayoni Ghosh)-এর দিকেও রয়েছে অভিযোগের আঙুল। এবার তালিকায় যুক্ত হল বসিরহাটের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ ও অভিনেত্রী নুসরত জাহান (Nusrat Jahan Ruhi)-এর নাম। তবে নিয়োগ দূর্নীতি নয়, আবাসন দেওয়ার নামে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে নুসরতের নামে।

পয়লা অগস্ট অর্থাৎ মাসের প্রথম দিনের পুরো সময় ধরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি ও সংবাদমাধ্যম। এর আরও একটি অন্যতম কারণ হল যশ দাশগুপ্ত (Yash Dasgupta) ও নুসরত জাহানের নতুন প্রযোজনা সংস্থা যা বসিরহাটের সাংসদ-অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে আর্থিক দূর্নীতির ঘটনাকে আরও মজবুত করছে। ঘটনার সূত্রপাত ঘটে গত 31 শে জুলাই সন্ধ্যায়। এদিন ইডির দফতরে বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পন্ডা (Shankudeb Panda)-র সাথে কয়েকজন প্রবীণ নাগরিক ইডির দফতরে উপস্থিত হয়ে নুসরতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগপত্র অনুযায়ী, 2014 সালে গড়িয়াহাট রোডে মেসার্স সেভেন সেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থার অস্তিত্ব ছিল।

এই সংস্থার যৌথ মালিকানা ছিল নুসরত ও রাকেশ সিং (Rakesh Singh) নামে এক ব্যক্তির। সংস্থার তরফে মোট চারশো উনত্রিশ জন ব্যক্তির কাছ থেকে মাথাপিছু পাঁচ লক্ষ পঞ্চান্ন হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছিল। সংস্থাটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, রাজারহাট হিডকোর কাছে পাঁচশো কাঠা জমি কিনে থ্রি বিএইচ কে ফ্ল্যাট নির্মাণ করে তা তিন বছরের মধ্যেই ক্রেতাদের হস্তান্তরিত করা হবে। কিন্তু সঠিক সময়ে ফ্ল্যাট না পেয়ে প্রতারিত ব্যক্তিরা অভিযোগ দায়ের করেছিলেন গড়িয়াহাট থানায়। মামলার জল গড়িয়েছিল আলিপুর আদালত অবধি। আদালতের তরফে একাধিকবার এই মামলায় তলব করা হয়েছিল নুসরতকে। কিন্তু ফ্ল্যাট তো দূর অস্ত টাকাও ফেরত পাননি প্রতারিতরা।

এদিন ইডির কাছে তাঁদের দায়ের করা অভিযোগপত্রে প্রতারিত ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ওই অর্থের বিনিময়ে কলকাতার অভিজাত এলাকায় বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন নুসরত। অপরদিকে প্রশাসনিক স্তর থেকে চাপ আসছে নুসরতের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য। ফলে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য ইডির কাছে অনুরোধ করেছেন ওই ব্যক্তিরা।

একই সাথে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরের সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, আগামী লোকসভা ভোটে নুসরতের টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। কারণ নিজের লোকসভা কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় সময় দেন না নুসরত। অপরদিকে বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলার ফলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কাছে কমেছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা। দলের তরফে নুসরতকে সতর্ক করা হলেও তিনি লোকসভা কেন্দ্রে সময় দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি। ফলে বসিরহাটের বাসিন্দাদের কাছেও জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন নুসরত।

পয়লা অগস্ট সন্ধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, আবাসন দূর্নীতির ঘটনায় দল নুসরতের পাশে নেই। কারণ সেই সময় তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ ছিলেন না। ফলে এই ঘটনায় দলের কোনো দায়িত্ব বর্তায় না। নুসরতের আর্থিক দূর্নীতির ঘটনা তাঁর ব্যক্তিগত। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র বুঝিয় দিয়েছেন, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরাগভাজন নুসরত কোনোভাবেই দলীয় সমর্থন পাবেন না। কিন্তু এখনও অবধি এই ঘটনায় নুসরত মুখ খোলেননি। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর অ্যাকাউন্ট অ্যাকটিভ থাকলেও দূরত্ব বজায় রেখেছেন তিনি।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Nussrat Jahan (@nusratchirps)