মনের মানুষ বা গুরু যদি বিদাই নেয়, মন ভাল থাকে না। মন তাকেই খোঁজে যে একটা সময় পথ দেখিয়ে বলে এটাই তোমার পথ, এখান দিয়েই হেঁটে যাও। সেরকমই হেঁটে ছিলেন বুম্বা দা। আজ তিনিই ইন্ডাস্ট্রি।
ঋতুপর্ণ ঘোষের সঙ্গে তাঁর প্রথম কাজ ১৯ শে এপ্রিল ছবিতে। খুবই ছোট্ট চরিত্র ছিল। কিন্তু সেই থেকেই যে বন্ধুত্বের সূত্রপাত হয়েছিল। ঋতুপর্ণ হলেন সেই গুরু যিনি প্রসেনজিৎ কে বুঝিয়ে ছিলেন মারপিট, গান বাজনা ছাড়াও অভিনয় হয়, করা যায়, এবং দর্শকরাও তা অনুভব করে। বুম্বাদার ঋতুপর্ণের সঙ্গে অর্থাৎ তার সেই গুরু বা বন্ধুর সঙ্গে যাত্রা শুরু হয় ১৯ শে এপ্রিল দিয়ে। এরপর আরও অনেক সিনেমায় ঋতুপর্ণের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। নিজেকে একেবারে অন্য ধাচে তৈরি করে নেন বুম্বাদা।
২০১৩ র ৩০ শে মে চির বিদায় জানান এই উজ্জ্বল নক্ষত্র। মৃত্যুর আগে ঋতুপর্ণ প্রায় দশ বছর ধরে ডায়াবেটিস (ডায়াবেটিস মেটিলাস টাইপ ২) রোগে এবং পাঁচ বছর ধরে প্যানক্রিটিটিস রোগে ভুগছিলেন। এছাড়াও তার অনিদ্রা রোগ ছিল এবং সেই জন্য তিনি ঘুমের ওষুধ খেতেন। মাত্র ৪৯ এ চির নিদ্রায় চলে যান তিনি। তবে ওনার ব্যাপারে বিশেষ উল্লেখযোগ্য বিষয় হল যে জীবনের শেষ বছরগুলিতে তিনি রূপান্তরকামী জীবনযাত্রা নিয়ে নানা পরীক্ষানিরীক্ষা করছিলেন। তিনি নিজের সমকামী সত্ত্বাটিকে খোলাখুলিভাবে স্বীকার করে নেন, যা ভারতের চলচ্চিত্র জগতের খুব কম মানুষ করেছেন।
View this post on Instagram
এই মানুষটি বহু শিল্পীর আসল শিল্প সত্তাকে তুলে ধরেছিলেন। অমিতাভ, ঐশ্বর্য, বিপাশা, কিরণ খের থেকে শুরু করে বলিউডের বহু তারকা জায়গা পেয়েছেন ঋতুর ছবিতে। প্রসেনজিৎ ছিলেন অন্যতম। এক গভীর বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছিল ঋতুপর্ণের সঙ্গে। আজ তার প্রয়াণ দিবসে অমলিন স্মৃতি নিয়ে বিরহে রয়েছেন বুম্বাদা। যে চলে যায় তাকে আনা যায়না সশরীরে ঠিকই, তবে কলমে, স্বপ্নে সে থেকে যায়। সেই জন্যেই ঋতুপর্ণের স্মৃতিতে প্রসেনজিৎ লিখলেন, ৮ বছর হয়ে গেল তাও কোনো কথা নেই, সাক্ষাৎ নেই, নেই কোনো বকাঝকা। ঝগড়া হয়না, নতুন গল্প পর্যন্ত হয়না। মিস করছেন ঋতুপর্ণকে ভীষণ ভাবে। একটা সময় Rituparno Ghosh-এর সঙ্গে একাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায়, সেই তালিকায় রয়েছে ‘উত্সব’, ‘চোখের বালি’, ‘দোসর’, দ্য লাস্ট লিয়ার, ‘খেলা’, ‘সব চরিত্র কাল্পনিক’, ‘নৌকাডুবি’।