Abhishek-Pratik: পর্দার বাবা হলেও বাস্তবে দায়িত্ব পালন করলেন শঙ্খ, কাঁধ দিলেন অভিষেকের মৃতদেহে!
যদিও বড়পর্দায় সেরকমভাবে কাজের অবসর না পাওয়ার খামতি তিনি মিটিয়েও নিয়েছিলেন ছোটপর্দায়। ছোটপর্দা তাঁকে দিয়েছে অফুরান সম্মান। শুধু মোহর বা খড়কুটোতে তিনি তার যাত্রা থামিয়ে রাখেননি। তিনি রীতিমতো ছোটপর্দায় দাপিয়ে বেরিয়েছিলেন তিনি। কুসুম দোলা, টাপুর টুপুর, অন্দর মহল, ফাগুন বউ সবকটি ধারাবাহিকে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। মোহর ধারাবাহিকে আদি এবং অদিতি জুটি যে অনেক সময় মোহর-শঙ্খ জুটির জনপ্রিয়তাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছিল তা অকপটে স্বীকার করে নেন প্রতীক। তিনি জানান যে অভিষেক চট্টোপাধ্যায় এবং অনুশ্রী দাস তাদের সেট মাতিয়ে রাখতেন। সেটে নাকি সবার সঙ্গে মজা করে মিশতেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। তিনি কখনও পর্দার শঙ্খকে নিজের ছেলের মত মনে করেননি সব সময় বন্ধুর মত পাশে থেকেছেন। সবার সঙ্গে যেকোনো সিন নিয়ে আলোচনা করতেন। অহংকারের লেশমাত্র ছিল না তার মধ্যে।
প্রায়শই প্রতীক সেন নানা মশকরা করতেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তাকে দেখতে সুন্দর হওয়ার দরুন প্রতীক এমন প্রশ্ন করে বসতেন যে জীবনে কয়টা প্রেম করেছেন তিনি? অভিষেকও নাকি মজার ছলে উত্তর দিতেন যে তিনি নাকি অনেকগুলি প্রেম করেছেন কিন্তু স্ত্রী সংযুক্তাকে বিয়ের পর তিনি আর ওই পথে পা বাড়াননি। যখন বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রতীক সোনামনির সম্পর্ক নিয়ে লেখা হতো তখন প্রতীককে অনেকখানি মানসিক বল দিতেন অভিষেক। তিনি প্রতীককে আশ্বাস দিতেন যে কেরিয়ারে এরকম অনেক কিছুরই মুখোমুখি হতে হয়, বিচলিত হলে চলে না। এভাবেই পর্দার বাবা হয়ে উঠেছিলেন প্রিয় বন্ধু।
অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের অকালপ্রয়াণের খবরে তার সমস্ত চিন্তাশক্তি হারিয়ে যায়। শঙ্খ যে তার পর্দার ছেলের বাইরে বাপের ছেলে হয়ে উঠেছিল তাই বাবার শেষকৃত্যের সমস্ত দায়িত্ব নেওয়ার জন্য তিনি সঙ্গে সঙ্গে বাড়িতে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন তারকাদের ঢল। সবার চোখেই অবিরাম অশ্রুধারা। ছেলের মত বাবাকে তিনি শেষ সাজে সাজিয়ে তোলেন। যত্ন করে নিজের অনস্ক্রিন বাবাকে মনের মত সাজান তিনি।
অভিষেকের মৃতদেহ নিজের কাঁধে নিয়ে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে শেষকৃত্যের জন্য নিয়ে যাবেন প্রতীক সেন। কারণ তার মতে বাবার শেষ যাত্রায় এভাবেই বাবার পাশে থাকা একজন ছেলে প্রকৃত কর্তব্য। গোটা চার দশক ধরে যে অভিনেতা ইন্ডাস্ট্রিকে নিজের কাঁধে বহন করে নিয়ে গেলেন তাঁর প্রয়াণে তাকে কাঁধে করে নিয়ে যাওয়ার জন্য কেউ থাকবে না এটা হতে দেবেন না প্রতীক। অভিনেতার বড় আফসোস যে পরের দিন মোহরের কল টাইমে আর আসবেন না অভিষেক চট্টোপাধ্যায়।