প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, ২০০০ সালে মিস ওয়ার্ল্ড প্যাজেন্ট জেতার পর অন্য অনেক বিশ্বসুন্দরীর মতো তিনিও বলিউডে এসেছিলেন। তামিল চলচ্চিত্র তামিজাহান দিয়ে প্রিয়াঙ্কা অভিনয় জগতে পা রাখলেন, প্রিয়াঙ্কার বিপরীতে বিজয়কে এই ছবিতে দেখা গিয়েছিল। তারপর বলিউডে একের পর এক হিট সিনেমা উপহার দিয়েছিলেন। ২০০৯ সালে দ্য হিরো: লাভ স্টোরি অফ অ্যা স্পাই ছবি দিয়ে প্রিয়াঙ্কা হিন্দি সিনেমায় আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। আর অভিনেত্রীকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এরপর তিনি কখনো হয়ে উঠেছেন সকলের দেশি গার্ল।
দেশি গার্ল এখন বলিউড আর হলিউড দুইতে বিরাজমান। বলিউডের প্রথম সারির অভিনেত্রীদের মধ্যে প্রিয়াঙ্কা এখন একজন। আবার হলিউডের হালফিলের হোয়াইট টাইগার এই মেয়ে। নিজের অভিনয় দক্ষতায় প্রিয়াঙ্কা সকলকে পিছনে ফেলে দিতে পারেন যে কোনও কাউকে। কিন্তু একটা সময় প্রিয়াঙ্কাকে নানা গঞ্জনা সহ্য করতে হয়েছে। ফেব্রুয়ারির ৯তে মুক্তি পেয়েছে প্রিয়াঙ্কার আত্মজীবনী ‘আনফিনিসড’। আর সেই বইতে অভিনেত্রীর ছোটবেলা থেকে শুরু করে, পাঠকদের কাছে তাঁর জীবনীর নানা মুহূর্ত তুলে ধরেছেন অভিনেত্রী।
২০১৫ সালে সাংবাদিক বরখা দত্তের দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তিনি একসময় ফেয়ারনেস ক্রিমের বিজ্ঞপন করা সবচেয়ে বড় ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। ফেয়ারনেস ক্রিমের বিজ্ঞাপনে কাজ করার জন্য আফসোস করেন অভিনেত্রী। হলিউডে পা রাখার পর থেকেই মূলত অভিনেত্রী এই ধরণের বিজ্ঞাপনে কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। অবশ্য একটা সময় অনেক অভিনেতা অভিনেত্রীদের কাছে খুবই সাধারণ বিষয় ফেয়ারনেস ক্রিমের বিজ্ঞাপন করা।
View this post on Instagram
তিনি তাঁর বইতে আরো লিখেছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় মেয়েদের ফর্সা হতে চাওয়াটা খুব স্বাভাবিক বিষয়। এখানকার অনেকেই বাড়ির চাপে অনেকেইফর্সা হতে চান। পাশাপাশি অভিনেত্রীদের ক্ষেত্রে মুখে যদি কোনো দাগ থাকে তা বেশ অস্বস্তিকর ছিল। অভিনেত্রীও অন্য মেয়েদের থেকে ব্যতিক্রম ছিলেননা। তাঁর গায়ের রং কালো হওয়ার কারণে তিনি একসময় ফর্সা হওয়ার জন্য মুখে ট্যালকম পাউডার মাখতেন। এমনকি অভিনেত্রীকে ছোটবেলাতে অন্যান তুতো ভাই বোনদের থেকে কম ফর্সা হওয়ার জন্য পরিবারের অনেকে ‘কালি’ বলে সম্মোধন করতেন। ‘কালি’ ডাক তাঁর মোটেই পছন্দ ছিল না। গায়ের রংয়ের জন্যই তিনি ট্যালকম পাউডার মেখে ফর্সা হতে চাইতেন। এমনকি কিশোরী বয়সে মার্কিন মুলুকে পড়াশোনা করতে গিয়েও বর্ণবিদ্বেষের জন্য নানা কুকথা শুনতে হয়। এর জন্য সেখান থেকে নিজের দেশে পালিয়ে এন আসতে বাধ্য হন অভিনেত্রী। এখন সেই মেয়ে হলিউডের প্রথম সারির নায়িকাদের মধ্যে একজন। নিজের জীবনের নানা তিক্ততা এই বইতে তিনি তুলে ধরেছেন।