20 শে জানুয়ারি, শুক্রবার রিলিজ করল প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee), কৌশিক গাঙ্গুলী (Koushik Ganguly) ও শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় (Srabanti Chatterjee) অভিনীত ফিল্ম ‘কাবেরী অন্তর্ধান’। পরিচালকের আসনে রয়েছেন কৌশিক নিজেই। কাবেরী নামক মেয়েটিকে খুঁজে পাওয়ার জন্য পোস্টারের মাধ্যমে অভিনব প্রচার কৌশল বেছে নিয়েছিলেন কৌশিক। তা কাজও করেছে। নকশাল আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে তৈরি এই ফিল্ম প্রসঙ্গে এবার মুখ খুললেন প্রসেনজিৎ।
তিনি খুব কাছ থেকে দেখেছেন উত্তাল সত্তরের দশককে। নকশাল আন্দোলনের জোয়ার ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে যুবসমাজকে। উপরমহলের নির্দেশ অনুসারে নকশাল সন্দেহে একের পর এক যুবককে গ্রেফতার করা হচ্ছে। পরদিন ভোরে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে তাঁদের মৃতদেহ। পুলিশের এনকাউন্টারে মৃত সেই যুবকদের পরিবারে উঠেছে সন্তান হারানোর হাহাকার। আজও বহু পরিবার রয়েছেন যাঁরা নকশাল আন্দোলনে হারিয়েছেন তাঁদের ছেলেকে। অথবা চিরতরে হারিয়ে গিয়েছেন কাবেরীর মতো বহু মেয়ে। এত বছর পরেও কেউ জানেন না তাঁদের সন্ধান। এমনও অনেকে আছেন, যাঁরা একসময় নকশালপন্থী হলেও পরবর্তীকালে ফিরে এসেছেন স্বাভাবিক জীবনে। বলিউড তারকা মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty) তাঁদের মধ্যে অন্যতম। অনেকে বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন।
View this post on Instagram
সত্তরের দশকের নকশাল আন্দোলনের সময় রাজনীতি বোঝার বয়স হয়নি প্রসেনজিৎ-এর। সেই সময় তিনি যথেষ্ট ছোট। টালিগঞ্জের বাড়িতে মা রত্না চট্টোপাধ্যায় (Ratna Chatterjee), বাবা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Biswajit Chatterjee) ও বোন পল্লবী চ্যাটার্জী (Pallavi Chatterjee)-র সাথে থাকতেন তিনি। তবে বিশ্বজিৎ-কে অধিকাংশ সময় মুম্বইয়ে থাকতে হত কর্মসূত্রে। বিশাল বাড়িতে দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেন প্রসেনজিৎ-এর মা রত্না। কলকাতায় তখন ছিল লোডশেডিং-এর দাপট। সন্ধ্যা হলেই টালিগঞ্জে প্রসেনজিৎ-এর বাড়িতেও চলে যেত আলো। আর পাঁচজন ছেলেমেয়েদের মতো মোমবাতি জ্বালিয়ে পড়াশোনা করতেন দুই ভাই-বোন।
একসময় মা ও বোনের সাথে দমদমে মামার বাড়িতে এসে ওঠেন প্রসেনজিৎ। মামাদের ছিল যৌথ পরিবার। বাড়ি গমগম করত লোকে। কিন্তু ছোটদের বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে ছিল নিষেধাজ্ঞা। বাড়িতেই দিদিমা নাতি-নাতনিদের গল্প পড়ে শোনাতেন। নকশাল আমলে রাস্তায় গুলি ও বোমার আওয়াজ ছিল সাধারণ ঘটনা। কিন্তু ছোটরা যাতে ভয় না পায় তাই বাড়ির দরজা-জানলা বন্ধ রাখা হত। তবে শৈশবে ষষ্ঠেন্দ্রিয় হয়তো অধিক সচল থাকে। ফলে প্রসেনজিৎ-রা টের পেতেন কখনও সখনও বাড়িতে নেমে আসা শোকের নিস্তব্ধতা। পরিবারের এক নিকটতম আত্মীয়ের সাথে তাঁর মাসির বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি হঠাৎই নিরুদ্দেশ হয়ে যান। আর কোনোদিন তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। কিন্তু এর ফলে বাড়ির ছোট সদস্যদের স্কুল যাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। মন খারাপ হত তাঁদের। কিন্তু কিছু করণীয় ছিল না।
View this post on Instagram