প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee) ও দেবশ্রী রায় (Deboshree Roy)-এর বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ এত বছর পরেও টলিউডে অজানা। এই তারকা জুটি কোনোদিনই তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে মুখ খোলেননি। একে অপরকে দোষারোপ করেননি। নীরবতা বজায় রেখে দূরেই থেকেছেন। বিবাহ বিচ্ছেদের পরও ‘উনিশে এপ্রিল’-এ একসাথে অভিনয় করেছিলেন প্রসেনজিৎ ও দেবশ্রী। তবে এরপর তাঁদের আর স্ক্রিন শেয়ার করতে দেখা যায়নি। একজন ষাট বছর বয়সেও নায়ক হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। অপরজন রাজনীতির আঙিনায় সফলতার পর আবারও ‘সর্বজয়া’ রূপে পর্দায় ফিরে প্রমাণ করেছেন, তিনি অপ্রতিরোধ্য। প্রকৃতপক্ষে, খুব কম সময় তাঁদের বিয়ে টিকলেও ইন্ডাস্ট্রির প্রকৃত পাওয়ার কাপল ছিলেন প্রসেনজিৎ ও দেবশ্রী।
View this post on Instagram
দেবশ্রী ছিলেন প্রসেনজিৎ-এর শৈশবের বন্ধু। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে গিয়ে বন্ধুত্ব পরিণত হয় প্রেমে। প্রসেনজিৎ-এর সাথে দেবশ্রীর বিয়ে ছিল তারকাখচিত। নব্বইয়ের দশকে প্রায় প্রতিটি গণমাধ্যম সেই বিয়ে কভার করেছিল। বিয়ের পরও তাঁদের বহু ছবি অনুরাগীদের সামনে এনেছিল সংবাদমাধ্যমগুলি। অনস্ক্রিন রসায়নের পাশাপাশি তাঁদের অফস্ক্রিন রোম্যান্টিক সমীকরণ মুগ্ধ করত সকলকে। কিন্তু তাল কাটল একসময়। অনেকে মনে করেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শুরু হয়েছিল ইগোর লড়াই। সেই সময় প্রত্যেকটি পত্রিকায় প্রসেনজিৎ-এর সাথে দেবশ্রীর বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চর্চিত হত।
View this post on Instagram
বিবাহ বিচ্ছেদের পর প্রসেনজিৎ আবারও বিয়ে করলেও দেবশ্রী সিঙ্গল থেকে গিয়েছেন। এই বিয়ে প্রসঙ্গে দুজনের একটাই মত, বড্ড তাড়াতাড়ি বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাঁরা। অভাব ছিল পরিণতমনস্কতার। প্রসেনজিৎ জানালেন, বিবাহ বিচ্ছেদের পর দেড় বছর নিজেকে গৃহবন্দি করে রেখেছিলেন তিনি। একটি নিউজ চ্যানেলে একবার দেখা গিয়েছিল, প্রসেনজিৎ যে ফ্ল্যাটে প্রথম দেবশ্রীর সাথে সংসার পেতেছিলেন তা দেখাতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি প্রসেনজিৎ আবারও মুখ খুলেছিলেন দেবশ্রী প্রসঙ্গে। তাঁর মতে, প্রথম প্রেম, প্রথম ভালোবাসার স্থান আলাদা। প্রসেনজিৎ এখনও মনে করেন, যথেষ্ট কম বয়সে বিয়ে করেছিলেন তাঁরা। আরও পাঁচ বছর পর বিয়ে করলে হয়তো চারপাশ থেকে ঘিরে আসা সমস্যাগুলি সামলে বিয়েটা টিকিয়ে নিতে পারতেন। তিনি এখনও নিজেকে দোষী মনে করেন।
লাভ ম্যারেজ হয়েছিল তাঁদের। ফলে বিয়ে ভেঙে যাওয়ার লজ্জায় জনসমক্ষে আসতে চাইতেন না প্রসেনজিৎ। তাঁর মনে হত, সকলে হয়তো বলবেন, প্রসেনজিৎ ভালোবাসতে পারেননি দেবশ্রীকে। লজ্জায়, অভিমানে নিজেকে গৃহবন্দি করেছিলেন তিনি। কিন্তু তরুণ মজুমদার (Tarun Majumder) সহ ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই সেই সময় প্রসেনজিৎ-কে বলেছিলেন, জীবন এই ভাবে চলতে পারে না।
সময় এগিয়েছে, এগিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন প্রসেনজিৎ-ও। কিন্তু এত বছর পরও তাঁর মনের কোণে রয়ে গিয়েছেন দেবশ্রী। প্রসেনজিৎ বরাবর তাঁকে সম্মান করেন। এখনও তাঁর মনে হয়, দেবশ্রীই সেরা অভিনেত্রী। তাঁর মতে, বর্তমান সময়ে তাঁরা বন্ধু হতেই পারেন। সহজ সম্পর্কে এখনও বিশ্বাস রেখেছেন প্রসেনজিৎ।
View this post on Instagram