Aindrila Sharma: ঐন্দ্রিলার অকালপ্রয়াণে রচনার গলায় আক্ষেপের সুর!
সারাক্ষন হাসিমুখে থাকতে পছন্দ করতেন ঐন্দ্রিলা (Aindrila Sharma)। তার মুখে যেন হাসি লেগেই থাকত। আর এই হাসি দিয়েই বাংলার লাখো লাখো মানুষের মন জয় করেছিলেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। সঙ্গে আবার দু’বার ক্যানসারের বিরুদ্ধে যুদ্ধজয়। ঐন্দ্রিলার লড়াইয়ের গল্পটা মন ছুঁয়েছিল অনেকের। আর সেই গল্পই তিনি শুনিয়েছিলেন জি-বাংলার (Zee Bangla) রিয়েলিটি শো ‘দিদি নং ওয়ান’-এর (Didi No. 1) মঞ্চে। তার লড়াইয়ের গল্প শুনে চোখ ভিজেছিল অনুষ্ঠানের সঞ্চালিকা রচনা ব্যানার্জিরও (Rachana Banerjee)। আবেগে জড়িয়ে ধরেছিলেন ঐন্দ্রিলাকে।
কিন্তু আজ যেন সবটা স্মৃতির পাতায় লিপিবদ্ধ হয়েছে। মৃত্যু এক লহমায় অতীত করে দিয়েছে সবকিছু। তাই ঐন্দ্রিলার অকাল-প্রয়াণে আবেগী হয়ে উঠলেন অভিনেত্রী রচনা ব্যানার্জিও। একটি সাক্ষাৎকারে রচনা ব্যানার্জি বলেন, “দ্বিতীয়বার মারণ রোগকে জয় করে দিদি নম্বর ওয়ানের মঞ্চ থেকেই টিভি পর্দায় ফিরে এসেছিল ঐন্দ্রিলা। আগের দু’বার ও লড়াইটা জয় করতে পেরেছিল। কিন্তু এই বারটা আর পারল না মেয়েটা। ওর আত্মার শান্তি কামনা করি। যেখানেই থাকুক ভাল থাকুক ঐন্দ্রিলা।” এই কথা বলেই চোখ ভিজে আসে রচনার। চোখ মুছে তিনি আরো বলেন, “ভীষণ হাসিখুশি প্রাণবন্ত মেয়ে ছিল ঐন্দ্রিলা। এক মুহূর্তের জন্য কাউকে বুঝতে দেয়নি, ওর এত বড় একটা রোগ ছিল। আরও একটু সময় ওর সঙ্গে কাটাতে পারলে ভালো হত।” রচনার কণ্ঠেও এসময় দানা বাঁধে আক্ষেপ।
২০১৫ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হন ঐন্দ্রিলা। জন্মদিনের দিনেই অস্থিমজ্জায় ক্যানসার ধরা পড়ে। তারপর শুরু হয় লড়াই। প্রথম লড়াইয়ে জিতে ফেরেন কাজে। অনেকটা সময় কাজও করেন। তারপর আবার গতবছর ফুসফুসে ক্যানসার ধরা পড়ে ঐন্দ্রিলার। শুরু হয় জীবনের দ্বিতীয় লড়াই। কেমোথেরাপি নিয়ে একটা সময় বিবর্ণ হয়ে যায় চেহারা। কিন্তু সেই সময় থেকেই তার হাতটা ধরে রেখেছিলেন ‘বামা’ সব্যসাচী। কাছের মানুষের শুশ্রূষায় সেই যুদ্ধেও জয়লাভ করেন ঐন্দ্রিলা। আবার ঘটে প্রত্যাবর্তন। দ্বিতীয়বার এই যুদ্ধে জয়লাভ করেই ‘দিদি নং ওয়ান’-এর মঞ্চে আসেন ঐন্দ্রিলা। শোনান ক্যানসারের বিরুদ্ধে তার জীবনের লড়াই। যে গল্প মন ছুঁয়েছিল আপামর বাঙালির। তবে জীবনের শেষ লড়াইয়ে সকলকে কাঁদিয়ে নীরবে চলে গেলেন ঐন্দ্রিলা।
ক্যানসারের মতো মারণ রোগের কাছে বেঁচে থাকার পার্থিব লড়াইয়ে হেরে গেলেও আজ যেন সবদিক থেকে জিতেই গেলেন ঐন্দ্রিলা। লক্ষ লক্ষ মানুষের চোখে জল, প্রিয় মানুষটির এভাবে শেষ মুহূর্ত অব্দি পাশে থাকা, এত প্রার্থনা- এই সবকিছু যেন এক মহাপ্রয়ানের উপন্যাস লিখে দেয় বাংলার বুকে।