‘পল্লবী, বিদিশা, মঞ্জুষা’ তিনজনেই এখন আকাশের তারা। না বলেই চলে গেছেন এই তিন মডেল তথা অভিনেত্রী। তিনজনেই সুইসাইড করেছেন গলায় ফাঁস দিয়ে। কেউ বিছানার চাদর তো কেউ ওড়না দিয়ে। এবং তিনজনের বয়স ২১ থেকে ২৫ এর মধ্যে। সুইসাইড নোট লিখেছেন একজন। কিন্তু, কেউ কাউকে ফাঁসিয়ে আত্মঘাতী হননি। ভাবেননি এই তিনজন যে তাদের ঘরে মা বাবা আছেন। যারা জন্ম দিয়েছেন, খাইয়েছেন, বড় করে তুলেছেন। মা বাবারা কত আদর করে সন্তান লালন পালন করেন, অথচ এরাই একটা সময় পরে সেসব মনে রাখেন না। সবাই অবশ্য এমনটা নন। যারা অন্যের জন্য ভাবেন তারা আর যাই করুক আত্মঘাতী হয়ে সারাজীবনের দুঃখ সপে দিয়ে যেতে পারেন না।
চলুন দেখি দিদি নং ওয়ান এর সঞ্চালিকা তথা বাংলার অন্যতম সুন্দরী অভিনেত্রী রচনা বন্দোপাধ্যায় এই ত্রয়ী মৃত্যু নিয়ে কী বার্তা দিলেন। তার কি আদৌ কষ্ট হয়েছে? রচনা নিজেও ইন্ডাস্ট্রির মানুষ। তার কি মত এই নিয়ে?
সম্প্রতি নিজেই এক সংবাদমাধ্যমের পাতায় কলম ধরেছেন রচনা। তার কথার সংক্ষিপ্তসার হলো এটাই – আমি জানি এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা বাবা-মাকে নিজের শত্রু বলে মনে করে। তাঁদের কাছে বন্ধুরাই আসল। তাঁরাই সব। তাঁরা কিন্তু কেউই ভালো বন্ধু নয়। তাঁরা ফেয়ার ওয়েদার ফ্রেন্ডস। পার্টি, হুল্লোড়, মদ, সিগারেট এসব যতদিন আছে, তাঁরাও ততদিন আছে। আমার মনে হয়, আজকের প্রজন্মকে স্কুলেই গ্রুমিং করানো উচিত। তাঁদের নিয়ম করে কাউন্সিলিং করা উচিত। বাবা-মার কথা তো শোনেই না। স্কুলের কথা শুনে যদি কিছু হয়।
জীবনের বাস্তব রূপ ওঁরা দেখতেই পেলেন না। জীবন কী সেটা উপলব্ধিও করতে পারলেন না। তার আগেই সব শেষ! ওঁরা সবকিছুই খুব সহজে পেয়ে গিয়েছিলেন। সবকিছুই প্ল্যাটারে সাজিয়ে মুখের কাছে দিতে হবে। কিছুই করব না, অথচ কাজ চাই। সবটাই পেতে হবে। এই ইচ্ছেপূরণ না হলেই মনের মধ্যে অবসাদ কাজ করছে। এঁরা কেউ এটা বুঝতে চাইছে না যে সাফল্য পাওয়ার জন্য অমানুষিক পরিশ্রম করতে হয়। প্রত্যেকের জীবনে স্ট্রাগলটা খুব জরুরি। এই স্ট্রাগল করতে চাইছে না কেউ। সবটাই চটজলদি চাই। এটাই আসল সমস্যা। খুব খারাপ একটা সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমরা। আমাদের সময়টাই এখন নেই। আমাদের শিকড়টা খুব মজবুত ছিল। এঁদের তা নয়। ক্লাস ১০, ১২ এর পরেই মেয়েরা সিরিয়াল করতে চলে আসছে। কিছু কাজ করার পরেই হাতে কাঁচা টাকা এসে যায়। ব্যস, ফুর্তি শুরু। এটা তো আর জীবন নয়! সেটা তাঁদের কে বোঝাবে?