কোটিপতি না হয়েও দাঁড়ালেন মানুষের পাশে, করোনা আক্রান্তদের খাবার পৌঁছে দেবেন সায়ক-দিয়া
এই দেশ আমাদের না। করোনার কড়াল ছোবলে আমাদের সুন্দর এই ভারতবর্ষ আজ যেন গোটক মৃত্যপুরী হয়ে উঠেছে । চারিদিকে শুধু নানা আর্তনাদ, যন্ত্রণা, বুক ফাটা কান্না, মৃতদেহের স্তূপ, আর সাড়ি সাড়ি গণচিতার আগুন জ্বলে উঠছে। যেখানে তারকাদের দেহ পোড়ানো হচ্ছে তো তার ওপরে জায়গার অভাবে সাধারণ মানুষকেও পোড়ানো হচ্ছে। আজ নেই এই মহামারীতে নেই আর কোনো পার্থক্য নেই কোনো বিভেদ। আজ শুধু লড়াই অক্সিজেন নিয়ে বাঁচার।
করোনা এখন ঝড় বৃষ্টি আর সুনামীর থেকেও বেশি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে পিঠ বাঁচিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় নয় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার সময়। কোভিড আক্রান্তদের দেখে দূরে সরিয়ে না দিয়ে তাদের ভালোবেসে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার সময়। আজ পথে এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে বহু মানুষকে।
আমাদের । যেখানে জাতি, ধর্ম, উঁচু, নীচু, তারকা আর সাধারণের কোনও পার্থক্য নেই । যেখানে একটু শ্বাসবায়ুর জন্য আকুল আর্তিটা একইরকম, যেখানে মারণ ভাইরাসের কামড়টাও একই রকম । ঠিক সেখানেই একে অপরের কাঁধে হাত রাখতে চেয়ে আজ সকলে যেন সত্যিই ‘প্রত্যেকে আমরা পরের তরে’ হয়ে উঠেছি । আমাদের দেশকে বাঁচাতে হবে আমাদেরই । হিংসা, দ্বেষ, রেষারেষি চুলোয় যাক, পৃথিবীর এই অসুখ সারিয়ে তুলতেই হবে আমাদেরকেই।
আজ ভারত সত্যি বড় অসহায়। আর এই সময় প্রত্যেকেই নিজের সাধ্যমতো কাজ করছে। যেমন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় থেকে শুরু করে, অভিনেতা ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়, ফ্যাশন ডিজাইনার অভিষেক রায়, সঞ্চালক মির্চি অগ্নি, গায়ক রূপম ইসলাম নিজেদের সাধ্যমতো নানান ভাবে সাহায্য করছে। কেউ অক্সিজেনের ব্যবস্থা তো কেউ হাসপাতালের বেডের। এবার দুই টেলি অভিনেতা-অভিনেত্রী নিজেদের সাধ্যমতো এগিয়ে এলেন।
টেলিভিশনের বেশ পরিচিত মুখ সায়ক চক্রবর্তী। তাঁকে আমরা অভিনেতা হিসেবে টেলিভিশনের পর্দায় দর্শক দেখেন। এই অভিনেতা এগিয়ে এসেছেন সাধারণ মানুষের পাশে। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘তেমন কোনও ধারাবাহিক এখন করছি না, যেখানে আমার পার ডে অনেক বেশি। কিন্তু যা টাকা জমিয়েছি তাতে আশা করি কিছু মানুষকে খাবার খাওয়াতে পারব। যদি কোনও ব্যক্তির কাজ না থাকে এবং বাড়িতে করোনা রোগী থাকে, তারা যেন আমার সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আমি নিজে আপনার বাড়িতে খাবার দিয়ে আসব।’
ইনি একা নন। রানী রাসমনি ধারাবাহিকের রানিমার বড় মেয়ে পদ্মমণি ওরফে দিয়া চক্রবর্তী তিনি ও উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি সকলকে অনুরোধ করেছেন এই কঠিন সময়ে কেউ খালি পেটে ঘুমোতে যাবেন না। আমি ধনী নই। সাধারণ মানুষ। কিছু না পারলেও নুডলস, পাঁউরুটি বা দুধের ব্যবস্থা তো করতে পারব।’ আর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছেন। সায়ক বা দিয়ার মতো এগিয়ে এসেছেন বহু সাধারণ মানুষ। যাঁরা সরাসরি এগিয়ে আসতে পারেননি, তাঁরা নানান তথ্য সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। মানুষের মধ্যে। এই ভাবে সকলে করোনার সাথে লড়াই চালাচ্ছে।