Ranu Mondal: রাণু মন্ডলের নামে ব্যাবসা, ভুয়ো ফাঁদ পেতেছেন দালালরা
তাঁর জীবন নিয়ে বায়োপিক তৈরি হবে, বোধহয় কোনোদিন ভাবতে পারেননি রাণু মন্ডল (Ranu Mondal)। শৈশব থেকেই দারিদ্র্যের মধ্যে বড় হয়েছেন রাণু। মেয়ে হয়ে জন্মেছিলেন। তাই সহ্য করতে হয়েছিল অবহেলা। মাসির কাছে চলে এসেছিলেন খুব ছোটবেলায়। পড়াশোনা শেখাননি মাসি। ঘরের হাড়ভাঙা খাটুনি খাটতে হত রাণুকে। রেডিও শুনে শিখেছেন গান। এখনও সময় কাটাতে রাণাঘাটের বাড়ির রাতগুলিতে রাণুর সঙ্গী নিজের গলায় দু’কলি গুনগুন ও বাইবেল।
শৈশবে মাকে নির্যাতিত হতে দেখা রাণু নিজেও ঘর বেঁধেছিলেন। মেয়ের জন্ম দিয়েছিলেন। কিন্তু বড় হতেই সেই মেয়ে মাকে ছেড়ে চলে যায়। নিজে সংসার পাতে। রাণু মনে করেন, ঈশ্বর চাইলে মেয়ে নিশ্চয়ই ফিরবে। একসময় মুম্বইয়ে লোকের বাড়ি কাজ করেছেন রাণু। পরবর্তীকালে সেই মুম্বইয়ের মাটিতেই পেয়েছেন গায়িকার সম্মান। কিন্তু বড় তাড়াতাড়ি ফিরে আসতে হয়েছে তাঁকে।
View this post on Instagram
নিজেই রাণু বললেন, যখন তাঁর গানের আকাশছোঁয়া কদর, তখন তাঁর অনেক খাতির ছিল। অপরদিকে যখন রাণাঘাট স্টেশনে বসে ভিক্ষা করতেন, ফিরে দেখত না কেউ। পরিস্থিতি রাণুকে মানুষ চিনিয়েছে। এখন কারো কৃত্রিম মিষ্টতা রাণুর ভালো লাগে না। একসময় যাঁরা রাণুর কাছে গান্ডে-পিন্ডে খেয়েছেন, তাঁরা এখন রাণুকে একমুঠো ভাত দিতে কষ্ট পান। অপরদিকে রাণুকে ঘিরে গড়ে উঠেছে ব্যবসা।
রাণাঘাট স্টেশনে নেমে রাণুর বাড়ি যেতে চাইলেই ভিড় করেন দালালরা। তাঁরা বলেন, অনুমতি ছাড়া ওই বাড়িতে ঢোকা যাবে না। অনুমতির অর্থ টাকা যা রাণুর কাছে পৌঁছানোর বদলে দালালদের পকেট ভরায়। অথচ এত কিছু রাণু জানেন না। তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই। যা দু’দশ টাকা পান, ছেঁড়া লাল কাপড়ে ভরে ঘরেই রেখে দেন। তাঁর আরাধ্য যীশু খ্রীস্ট জানেন তাঁর আয়। সকালের টিফিনে পরোটা বা দুটি গরম রুটি ও আলুর তরকারি খেতে চান রাণু। জোটে না তাও।
প্রতিবেশীরা জানালেন, চিকেন দিতে গেলে রাণু কুকুরের মাংস বলে ফেলে দেন। প্রতিবেশীর দেওয়া খাবারে বিষ মেশানো আছে বলে মনে করেন রাণু। আসলে বিশ্বাস ভাঙতে ভাঙতে খাদের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছেন বাস্তবের রাণু মারিয়া। সেই অতল খাদে কখনও পড়ে গেলেও তিনি জানেন, কেউ নিজের হাত বাড়িয়ে দেবে না তাঁর জন্য।
View this post on Instagram