স্বাধীনতার পর ভারতে একাধিকবার দুর্ভিক্ষ হয়েছে। আর তখন থেকে দেশে খাদ্যাভাব দূর করতে যুগান্তকারী রেশন ব্যবস্থার সূচনা ঘটে দেশেও। আর এখনো অবধি ভারতের প্রতিটি রাজ্যেই রেশন কার্ড রয়েছে এমন প্রত্যেক নাগরিক মাসে মাসে সরকারের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্যশস্য পেয়ে থাকেন। রেশন কার্ড থাকলে সেই কার্ডের ভিত্তিতে নির্ধারিত খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয় স্থানীয় রেশন দোকান থেকে। তবে সবার ক্ষেত্রে সমান খাদ্যদ্রব্য বণ্টন করা হয় না। কোন গ্রাহক কত পরিমানে খাদ্য শস্য পাবেন তা ঠিক হবে তাঁর রেশন কার্ডের ধরণের উপর।
তবে এই রেশন ব্যবস্থায় প্রচুর দুর্নীতি হয়েছে বিগত সময়ে। অনেকেই যারা মারা গেছেন, তাদের রেশন কার্ড ব্যবহার করেও অনেকেই রেশন তুলে যান। এছাড়াও করোনাকালীন সময়ে কেন্দ্রের তরফে যে বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হত, তা নিয়েও হয়েছে দুর্নীতি। অনেক অযোগ্য ব্যক্তিও এই রেশনের সুবিধা লাভ করে থাকেন। তবে এবার এই ধরণের দুর্নীতি রুখতে বড়সড় পদক্ষেপ নিল সরকার। সরকারের তরফে এই বিষয়ে একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছে। সেই সমীক্ষায় দেখা গেছে যে রেশন ডিলারদের মাধ্যমেই মূলত এই ধরণের দুর্নীতি হয়ে থাকে। তাই এই দুর্নীতি দমন করতে এবার সক্রিয় হয়েছে সরকার।
জানা গেছে, আধার কার্ডের সঙ্গে রেশন কার্ডের সংযুক্তিকরণ প্রক্রিয়া চালু হওয়ার পর থেকেই এই ধরণের দুর্নীতির বিষয়টি আরো বেশি করে স্পষ্ট হয়েছে এবং সরকারের নজরে এসেছে। বিশেষ সূত্রে জানা গেছে যে, ইতিমধ্যে রাজ্যে প্রায় ২ কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড চিহ্নিতকরণ করা হয়েছে। আর এই বিষয়ে এবার পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে খাদ্য দফতরকে। এছাড়াও ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সকলকে এই সংক্রান্ত ই-কেওয়াইসি করানো বাধ্যতামূলক করেছে সরকার।
উল্লেখ্য, রেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে দরিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী মানুষদের খাদ্যের যোগান দিয়ে থাকে সরকার। এই ব্যবস্থায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে নাগরিকদের বিনামূল্যে অথবা বাজারের থেকে অনেকগুন কম মূল্যে রেশন দেওয়া হয়। তবে এবার থেকে বিনামূল্যে রেশন পাবেন না সেইসব গ্রাহক যাদের ১০০ বর্গ কিলোমিটারের একটি জমি অথবা একটি ফ্ল্যাট কিংবা নিজস্ব বাড়ি অথবা বার্ষিক আয় ২ থেকে ৩ লাখ টাকা হয় কিংবা নিজস্ব গাড়ি, ট্রাক্টর ও অস্ত্রের লাইসেন্স থাকে।