একজন অবিবাহিত মেয়ে বিয়ের আগে মা হওয়া ৩৫ বছর আগে এটি ভারতীয় সমাজে ছিল বিশাল বড় অপরাধ। দত্তক হোক কিংবা নিজের সন্তান তখনকার দিনে সিঙ্গেল মাদার কনসেপ্ট টা ছিল অন্যায়। আর কেউ যদি সিঙ্গেল মাদার হতেন তাহলে সেই মাকে একঘরে করে দেওয়া হত। সময় পেরিয়েছে তাই আজকের দিনে ‘সিঙ্গল মাদার’ কনসেপ্ট ও পাল্টেছে। আজকের দিনে সিঙ্গেল মাদার নতুন কিছু নয়। কিন্তু আজ থেকে ৩৫ বছর আগে সিঙ্গেল মাদার হয়ে দুই কন্যা সন্তানকে বুকে তুলে নিয়ে সাহসীকতার পরিচয় দেখিয়েছিলেন রবিনা ট্যান্ডন।
১৯৮৫ সালে মাত্র ২১ বছর বয়সে রবিনা কেরিয়ারের প্রথম দিকে পূজা এবং ছায়া, এই দুই মেয়েকে দত্তক নেন রবিনা। তখন সবে নিজের কেরিয়ারের শুরু। এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া বড় কথা ছিলনা। এই সময় এত কম বয়সে অভিনেত্রীর মেয়ে দত্তক নেওয়া নিয়ে বহু মানুষ বিরোধিতা করেছিলেন। রবিনা জানতেন তাঁর এই পদক্ষেপে কেরিয়ারে সমস্যা হবে, ভবিষ্যতে নিজের বিয়ে নিয়ে সমস্যা হবে তবে তাকে পিছপা করা হয়নি। নানান সমস্যার কথা মাথায় রেখে অভিনেত্রী পূজা ও ছায়াকে ভালোবেসে গ্রহণ করেছিলেন আর সেই অভিজ্ঞতাই এবার অভিনেত্রী একটি সাক্ষাৎকারে জানালেন।
এই কন্যারা কখনো অভিনেত্রীর কেরিয়ারে কোনো বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। আবার এদের অবহেলা ও কেউ করেনি। দুই সমান তালে সামলেছেন অভিনেত্রী। এদের ভালো করে পড়াশোনা শিখিয়ে তাদের ও দেখভাল করেছেন। নিজের বিয়ের আগে এই দুই মেয়ের বেশ জাঁকজমক ভাবে বিয়েও দেন। অভিনেত্রী আরো জানান, এদের দত্তক নেওয়া নিজের জীবনের সবচেয়ে ভাল ও সেরা সিদ্ধান্ত বলেও মত প্রকাশ করেন।
দুই মেয়ের বিয়ে দিয়ে নিজে ব্যবসায়ী অনিল থাডানিকে ভালোবেসে বিয়ে করেন রবিনা। বিয়ের পর আরো দুই সন্তানের জন্ম দেন রবিনা। রাসা ও রণবীর আসার পর পূজা ও ছায়াকে কোনোদিন অবহেলা করেননি। দুই মেয়ে থাকায় বিয়েতে কোনও সমস্যাই হয়নি তাঁর। বরং অনিল এই দুই মেয়েকে নিজের মেয়ের মতো ভালোবাসেন। এককালে যাঁরা দত্তক নেওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন, ‘বার্গেজ’ বলে সম্বোধন করেছিলেন তাঁরাই এখন ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে রবিনার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বেশ প্রশংসা করা শুরু করেন। পরবর্তী কালে আরও অনেক অভিনেত্রীই ‘সিঙ্গল মাদার’ হয়েছেন, কিন্তু এদের অনুপ্রেরণা হলেন রবিনা ট্যান্ডন।