একটুর জন্য প্রাণে বাঁচলেন রুচিকা কাপুর (Ruchika kapoor) ও তাঁর পরিবার। ভয়াবহ দূর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচলেন তাঁরা। পেশায় অভিনেত্রী রুচিকার কাছে এখনও সেই রাত ভয়াবহ। স্বাভাবিক ভাবেই ট্রমার মধ্যে রয়েছেন তিনি। রুচিকাদের বিল্ডিংয়ে ঘটে গিয়েছে মারাত্মক অগ্নিকাণ্ড। দূর্ঘটনাটি ঘটেছে গত 25 শে জানুয়ারি।
রুচিকা জানিয়েছেন, 25 শে জানুয়ারি রাত দেড়টার সময় প্রতিবেশীর ফোন তাঁর ঘুম ভাঙিয়েছিল। ওই প্রতিবেশী জানান, রুচিকাদের বিল্ডিং-এ আগুন লেগে গিয়েছে। অভিনেত্রী দ্রুত দরজা খুলে দেখেন, কালো ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে লবি। রুচিকার মতে, সেই সময় বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসা প্রায় অসম্ভব ছিল। অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় না থাকলেও তিনি বুঝতে পারছিলেন না, এই ভাবে কতক্ষণ অপেক্ষা করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব! রুচিকা তাঁর স্বামী শাহির (Shaheer Sheikh)-কে ফোন করে পুরো ঘটনা জানান। কিন্তু তিনি যাতে আতঙ্কিত না হয়ে পড়েন, তাই রুচিকা নিজের দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেননি। অপরদিকে রুচিকার পরিবারে রয়েছেন তাঁর ষোল মাসের মেয়ে ও অসুস্থ বাবা। রুচিকার বাবা হুইলচেয়ারের সাহায্য ছাড়া চলাফেরা করতে পারেন না।
View this post on Instagram
ফলে তাঁদের পক্ষে পনের তলা থেকে নেমে আসাটা অসম্ভব ছিল। রুচিকা দ্রুত একটি ভিজে তোয়ালে দরজার নিচে রেখেছিলেন যাতে কালো ধোঁয়া ঘরের ভিতরে ঢুকতে না পারে। এই সময় এক দমকল কর্মী তাঁদের নির্দেশ দেন, যতক্ষণ না তাঁদের উদ্ধার করা হচ্ছে, প্রত্যেকে যেন নাকের কাছে ভিজে ন্যাপকিন ধরে রাখেন যাতে কালো ধোঁয়া তাঁদের শরীরে প্রবেশ করে মৃত্যু না ঘটায়। এর মধ্যেই শাহির এসে পৌঁছে যান। তিনি ও স্থানীয় ছেলেরা নিচের পার্কিং থেকে গাড়িগুলি ঠেলে সরিয়ে ফায়ার ইঞ্জিনের জন্য রাস্তা পরিষ্কার করেন। প্রকৃতপক্ষে, এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে তা আগে কেউই বুঝতে পারেননি। ফলে গাড়িগুলি বহুক্ষণ ওভাবেই রাখা ছিল। দমকলকর্মীরা না পৌঁছানো অবধি শাহির ও স্থানীয় বাসিন্দারা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের মাধ্যমে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছিলেন। কয়েক ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিভে যায়।
ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ শাহির ও চারজন দমকলকর্মী রুচিকাদের ফ্ল্যাটে এসে পৌঁছান। এরপর সর্বপ্রথম রুচিকার ষোল মাসের মেয়ে আনায়া (Anaya) ও তাঁর মাকে ফ্ল্যাট থেকে নিচে নামিয়ে আনা হয়। এরপর রুচিকার বাবাকেও সরানো হয় ফ্ল্যাট থেকে। অবশেষে ভোর পাঁচটা নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় গোটা ঘটনা জানিয়ে দমকলকর্মীদের ধন্যবাদ দিয়েছেন রুচিকা। ধন্যবাদ জানিয়েছেন শাহিরও।
মুম্বইয়ের পশ্চিম আন্ধেরি এলাকার শাস্ত্রীনগরের একটি আবাসনের বাসিন্দা শাহির ও রুচিকা। 2020 সালে লকডাউনের সময় আইনত বিয়ে হয় তাঁদের। 2021 সালের 9 ই সেপ্টেম্বর জন্ম হয় আনায়ার।
View this post on Instagram