“সন্ধ্যাদি বোধ হয় আমাদের মধ্যে আর থাকবে না”- এই আশঙ্কাই সত্যি হলো সংস্কৃতি মহলের। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় হারিয়ে গেলেন গত সন্ধ্যায়। চোখের জল ধরে রাখা দায় হয়ে পড়েছে। বলাই বাহুল্য, তাঁর সাথে যে কিংবদন্তি শিল্পীরা একদিন কাজ করেছেন তাঁদের মনের অবস্থা বেশ খারাপ। “কি বলবো মন তো ভারাক্রান্ত। গলার আওয়াজ আটকে যাচ্ছে”- এমনটাই বলে বসলেন শোকস্তব্ধ অভিনেত্রী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়।
একসময় সাবিত্রী দেবীর গলায় সন্ধ্যা দেবীর গান এক সুন্দর স্বর্গীয় মুহূর্তের সাক্ষী হতো। ওই গায়িকা-অভিনেত্রী জুটি একসময় আমেরিকায় শো করতেও গিয়েছিলেন। নাটক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।প্রবাসী বাঙালির দল তো সন্ধ্যা দেবীর গান শুনে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন। এমনটাই জানালেন সাবিত্রী দেবী। তিনি বললেন, “আমাকে ভীষণ ভালোবাসতেন সন্ধ্যা দি। কিছু মাস আগেই কথা হলো ওঁর বাড়ি যাওয়ার। কিন্তু যাওয়া হলোনা। হারিয়ে গেলেন বাংলার সুর সম্রাজ্ঞী”।
কথা শেষ হতে না হতেই দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেললেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী- “ওঁর গাওয়া কতো গানে যে আমার অস্তিত্ব ছিল, বলে বোঝানো যাবেনা। এইতো কিছুদিন আগেই লতাদি বিদায় জানালেন। এখন আবার সন্ধ্যাদি!” তাঁর কথায়, ভারসম্যহীন হয়ে পড়ছে সংগীত জগৎ একের পর এক কিংবদন্তিদের প্রয়াণে। সাবিত্রী এও জানালেন, সন্ধ্যা দেবী সবসময়ই তাঁকে গলা ঢেকে রাখতে বলতেন। কারণ শিল্পী মানুষের গলা বেশ জরুরি। “সন্ধ্যাদি কখনোই মাফলার ছাড়া চোখে পড়েননি। আমাকেও বলতেন, সাবিত্রী আঁচলটা দিয়ে অন্তত গলা ঢেকে রাখো।”
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার অ্যাপোলো হাসপাতালের তরফে জানানো হয় গীতশ্রী শারীরিক অবস্থা খুবই সংকটজনক। হাহুতাশ করে উঠেছিল বিশিষ্ট মহল। শেষমেষ দীর্ঘ ১৯ দিন ধরে লড়াই করে বুধবার সন্ধ্যায় তাঁর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন টুইট করে খবরটি জানিয়ে দিয়েছিলেন। ৯০ বছর বয়সে হারিয়ে গেলেন বাঙালির বঙ্গ বিভূষণ প্রাপ্ত গীতশ্রী গায়িকা। সাবিত্রী দেবীর ভাষায়, “হয়ত আমরাও চলে যাবো। দিন বোধ হয় ঘনিয়েই এলো”।