উত্তম নেই কিন্তু তাঁর এক প্রেমিকা এখনও বহাল তবিয়তে আছেন। নাহ তিনি বিয়ে করেননি, উত্তম কুমারকে এতটাই ভালবাসতেন যে ঘর ভাঙতে ও গড়তে কোনটাতেই রাজি ছিলেন না। দেখতে দেখতে ৮৪ এ এসে দাঁড়াচ্ছে উত্তমের এই প্রেমিকার বয়স, এখনও তাঁর স্মৃতিতে তাজা মহানায়ক।
১৯৩৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে জন্ম নেন সাবিত্রী দেবী। ১৯৫২ সালে ‘পাশের বাড়ি’, ‘বসু পরিবার’, ‘সুভদ্রা’ তিনটি ছবিতেই কাজ করেন তিনি। এই ছবি গুলো দিয়েই সিনেমা জগতে পা রাখেন। উত্তম কুমার থেকে শুরু করে বহু বড় বড় তারকার সঙ্গে অভিনয় করেছেন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। ‘ধন্যি মেয়ে’, ‘মৌচাক’, ‘রাত-ভোর’,’অবাক পৃথিবী’,’গৃহ দাহ’ ছাড়াও বহু মুভিতে একসঙ্গে কাজ করেছেন উত্তম-সাবিত্রী।
যখন উত্তম সুচিত্রা এবং উত্তম সুপ্রিয়াকে নিয়ে উন্মাদনা তলানিতে ঠেকেছে, ঠিক তখনই শুরু হয় উত্তম-সাবিত্রী ঝড়। একটা সময় উত্তম কুমারের সাথে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের জুটি খুবই জনপ্রিয় হয়। এই বার্ধক্যে এসে এক সাক্ষাৎকারে সাবিত্রী দেবী বলেছিলেন, “সংসার করিনি তার জন্য কোনও আফসোস নেই। কারণ আমার দিদির ছেলেপুলেদের মানুষ করেছি। তবে এখনও হয়ত তাঁদের ডাকলেই তাঁরা আসবে, তবে সবারই তো সংসার আছে। এত বড় বাড়িতে তো কথা বলারও সঙ্গী চাই। তাই একা লাগে।”
এখন তাঁর অবসরে সঙ্গী বই। একটা সময় খুব কষ্টে কাটত অভিনেত্রীর জীবন। মাত্র ১০ বছর বয়সী ছোট্ট মেয়ে স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন ক্লাস থ্রিতে। আধপেটা খেয়েই কাটিয়ে দিতে হতো দিন। কখনো কখনো ভালো খাওয়ার লোভে আত্মীয়দের বাড়ি চলে যেতেন রাতে। পেটের দ্বায়ে তখন তিনি নাটকের দলে নাম লেখান। ‘বাঙাল’ উচ্চারণের কারণে তাকে বাদ দেওয়াও হয় সেইসময় বেশ কিছু ছবি থেকে। একটা সময় মাত্র ২০০ টাকা মাস মাইনের শিল্পী ছিলেন আজকের প্রবীণ অভিনেত্রী সাবিত্রী দেবী। কিন্তু তাঁর অভিনয় দেখে মুগ্ধ হন অনেকেই। ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন পাকা অভিনেত্রী। স্বয়ং উত্তম কুমার পর্যন্ত বলতেন “সাবিত্রী এত ভাল অভিনেত্রী ও যে কখন কী করে দেবে বোঝা খুব মুশকিল।”