বিরাট বড় দুর্ঘটনা থেকে মা তারাই বাঁচিয়েছিলেন পর্দার সাধক বামাক্ষ্যাপাকে
কালীপুজো মানেই অশুভকে বিনাস করার দিন। আর আজকের দিন টা এলে আগে মাথায় আসে একটি চরিত্রের নাম। সেটি হল সাধক বামাক্ষ্যাপা। আর এই সাধক বামাক্ষ্যাপা কথা শুনলে চোখের সামনে ভেসে ওঠেন অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায়। একবার নয় দু দুবার তিনি সাধক চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকমহলে বেশ ভালোই জায়গা করে নিয়েছেন। প্রথমে সাধক রামকৃষ্ণের চরিত্রে অভিনয় ছাপ ফেলেছেন তারপর বর্তমানে কালারস বাংলা অর্থাৎ ইটিভি বাংলায় “সাধক বামাক্ষ্যাপা” ধারাবাহিক।
পর্দার ‘সাধক’ অরিন্দম বিজের নিপুণ অভিনয় দিয়ে দর্শকমনে গভীর ছাপ ফেলেছিলেন। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, নিজের ৫৪ বছর অভিনয় জীবনে এমন একটি সাধক চরিত্রে অভিনয় করা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। আর এই চ্যালেঞ্জ নিয়ে টানা ৩০০০ পর্বের বেশি এও ধারাবাহিক সম্প্রচারিত হয়। উপলব্ধি হয়েছিল। এই চরিত্রে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা তিনি বরাবর শেয়ার করেছেন।
তিনি একটি সংবাদমাধ্যমে জানান, সাধকের চরিত্রে অভিনয় করতে করতেই একদিন বামাক্ষ্যাপা সেটের মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত তারা মায়ের মূর্তির সঙ্গে অরিন্দমের এক অদ্ভুত ভালোবাসা জন্মে যায়। প্রতি মুহূর্তে তিনি তারা মাকে অনুভব করতেন। যখন মাকে সংলাপহীন আরতির দৃশ্য থাকতো সেইসনয় আরতি করতে করতে মায়ের এমনভাবে একাত্ম হয়ে যেতেন তা দর্শকরাও উপলব্ধি করতে পারতেন। দর্শকদের একটাই আর্জি ছিল পরিচালক মশাইয়ের কাছে তিনি বারবার আরতির দৃশ্য দেখতে চাইতেন পাগলের মতো। তাই মাঝেমধ্যেই আরতির দৃশ্যায়িত করার জন্য চলতো বার বার শুটিং। বামাক্ষ্যাপাতে তিনি এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিলেন রাস্তায় বেরোলে অনেকে অভিনেতার থেকে বড় মা-বাবার বয়সীরাও ‘বাবা বামাক্ষ্যাপা’ বলে ডেকে প্রণাম করতে যেতেন। তিনি এই চরিত্রে পেয়েছেন বহু মানুষের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা।
এতো হল মেগার কথা। অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায় যেমন মেগাতে জনপ্রিয় ঠিক একই ভাবে নাটকের জন্য বেশ জনপ্রিয়। আরো একটি গুণ আছে অভিনেতার। তিনি একটা সময়ে যাত্রাতেও অভিনয় করেছেন। আর সেই যাত্রার একটি মুহূর্ত তিনি শেয়ার করলেন দীপাবলি উপলক্ষে। তিনি বললেন, তিনি যেমন মেগাতে সাধক বামাক্ষ্যাপার চরিত্রে অভিনয় করতেন ঠিক একই ভাবে যাত্রাতেও সাধকের চরিত্রে অভিনয় করার জন্য ডাক পেয়েছিলেন। অভিনেতাও বাড়তি টাকা রোজগারের লোভে হ্যা বলে দিয়েছিলেন ততক্ষণাৎ। কিন্তু ভাগ্যের ফেরে মাত্র দুটো শো করতে পেরেছিলেন। তারপর আর করা হয়নি তৃতীয় যাত্রা। দ্বিতীয় শো করে তিনি গাড়িতে করে কলকাতায় ফিরছিলেন। আচমকাই সেই গাড়িতে ছুটে এসে গাড়িতে ধাক্কা মারে একটি লড়ি। নিমেষে অভিনেতার গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে ভেঙে যায়। সেদিন ঘটনায় গাড়ির চালক ঘটনাস্থলেই সেই সময় স্পট ডেথ। অবশ্য অভিনেতার নাকের একটি হাড় ভেঙে যাওয়া আর পাঁজরের একটি হাড়ে আঘাত লাগে। এই ঘটনার পর তিনি বুঝেছিলেন নিজের লোভের কারণে হাতে নাতে এরকম শাস্তি পেয়েছিলেন। মা তারা চেয়েছেন যে তার প্রিয় শিষ্য বামার চরিত্রে অভিনয় করছে তার এত লোভ করা উচিত নয়। আরো বললেন, মা যেমন তাকে লোভ করার জন্য শিক্ষা দিয়েছেন ঠিক একই ভাবে রক্ষাও করেছেন।