Hoop PlusReality show

উধাও একঢাল সুন্দর চুল, ক্যান্সার আক্রান্তদের উদ্দেশ্যে কেশদান করলেন ‘সারেগামাপা’ খ্যাত সমদীপ্তা

স্বয়ং লতা মঙ্গেশকারের আশীর্বাদধন্যা তিনি। সারেগামাপার ফাইনাল লিস্ট ছিলেন বেহালার মেয়ে সমদীপ্তা মুখোপাধ্যায়। তার নাম শুনলেই প্রথম মাথায় আসে শান্ত কোমল একটি মেয়ে যে মনোযোগ দিয়ে শাস্ত্রীয় সংগীতের অধ্যাবসায় করেন। গতবছর অতিমারীর কারণে যখন সবাই ঘরবন্দী তখন একটি মেয়ের গাওয়া ইংরেজি গানের সরগম সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন স্বয়ং সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর। সেই মেয়েটি আর কেউ নয় সমদীপ্তা। সমদীপ্তাকে সবসময় একরাশ কোমর অবধি লম্বা খোলা চুলে দেখা যায়। তার মাথার সেই একরাশ ঢেউয়ের মতো চুল তিনি এবার কেটে একদম ববকাট করে ফেললেন। না, এটি তার নতুন কোন ফ্যাশন স্টেটমেন্ট নয়। এটির পিছনে সম্পূর্ণ একটি মহৎ উদ্দেশ্য রয়েছে। তিনি তার এই চুল ক্যান্সার রোগীদের উদ্দেশ্যে দান করেন।

এক সংবাদমাধ্যমকে সমদীপ্তা এই প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে তিনি তার বাবাকে ক্যান্সারে হারান। ক্যান্সার আক্রান্ত মানুষদের এবং তাদের পরিবারের যে কি ভয়াবহ যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় তার সাক্ষী সমদীপ্তা নিজেই। বাবাকে চিকিৎসার জন্য তিনি বিভিন্ন ক্যান্সার হাসপাতালের ঘুরেছেন। এখান থেকেই তিনি আরো ভালো করে বুঝে উঠতে পেরেছিলেন তাদের যন্ত্রণা। কেমোথেরাপি এবং রেডিয়েশন এর ফলে অনেকের মাথা থেকে সমস্ত চুল উঠে যেত। কেমোথেরাপির যে যন্ত্রনা তার এক শতাংশ লাঘব করতে পারবেন না সমদীপ্তা। কিন্তু তাদের মানসিক যন্ত্রণা অনেকাংশেই তিনি ঘোচানোর চেষ্টা করেছেন। ক্যান্সার ও অ্যালোপেশিয়া অ্যারিয়েটার মতো ব্যাধীর কারণে মাথা থেকে চুল উঠে যায়।  তার মতে নারীদের সৌন্দর্য্যের অপরিহার্য অঙ্গ হল চুল। তাই সেই সাধের চুলকে হারিয়ে অনেক রোগী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে যান। তিনি চান তার এই চুল ক্যান্সার রোগীদের নতুন ভাবে বাঁচার আশার আলো জোগাক।

তিনি চান তাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে আরো মানুষ এগিয়ে আসুক। মানুষ নিজের সাধ্যমত অন্য মানুষের যন্ত্রণা লাঘব করুক। ক্যান্সারে নিজের সব থেকে কাছের মানুষ বাবাকে হারিয়েছিলেন তিনি। তাই এই মরণব্যাধির শারীরিক যন্ত্রণা আর অভিজ্ঞতা তার না থাকলেও মানসিক কষ্ট যে কতটা ভয়াবহ তা সমদীপ্তা ভালোভাবেই জানেন।

সম্প্রতি তিনি ফেসবুকে এ বিষয়ে একটি ছবিও পোস্ট করেন। সেই ছবিতে তাকে তার কেটে ফেলা বিনুনি হাতে ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। এই ছবির ক্যাপশনে তিনি লেখেন,“শারীরিক যন্ত্রণা লাঘব করার ক্ষমতা আমাদের মতো সাধারণ মানুষের থাকে না..কিন্তু চেষ্টা করলে তাঁদের মানসিক যন্ত্রণা একটু হলেও কম করতে পারি…। খুব সামান্য একটি প্রচেষ্টা করলাম। আপনারাও এগিয়ে আসতে পারেন। হেয়ার ডোনেট করতে পারেন ক্যান্সারে আক্রান্ত মানুষদের জন্য..”

whatsapp logo