Hoop PlusTollywood

Satrajit Sen: ‘হিন্দি বলতে পারেন না! বাংলাদেশে থাকেন?’ বাঙালি পরিচালককে কটাক্ষ ডেলিভারি বয়ের

কয়েক বছর আগে ‘মাছ, মিষ্টি অ্যান্ড মোর’ নামে একটি বাংলা ফিল্ম যথেষ্ট আলোড়ন তুলেছিল। ফিল্মটি মিউজিক‍্যাল হিটও ছিল। এই ফিল্মের প্রযোজক ছিলেন ‘ট্রাইপড’-এর কর্ণধার সত্রাজিৎ সেন (Satrajit Sen)। কিন্তু এহেন সত্রাজিৎ-কে অপমান করলেন ডেলিভারি বয়।

ঘটনার সূত্রপাত একটি অনলাইন অর্ডারকে ঘিরে। সত্রাজিৎ একটি নামী চশমার ব্র্যান্ডের অনলাইন অ্যাপ থেকে দুটি চশমা অর্ডার করেছিলেন। কিন্তু চশমার পাওয়ার ভুল আসায় তিনি সেগুলি ফেরৎ দেওয়ার জন্য অ্যাপে জানান। কিন্তু চশমার ব্র্যান্ডটি একটি থার্ড পার্টি সংস্থার মাধ্যমে লজিস্টিকের কাজ করে। এই ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছিল।

সত্রাজিৎ-কে ফোন করে হিন্দিতে কথা বলা শুরু করে সংশ্লিষ্ট সংস্থার ডেলিভারি বয়। ওদিকে সত্রাজিৎ বাংলাতেই কথা বলা শুরু করেছিলেন। তিনি ডেলিভারি বয়কে জানান, তাঁর কাছ থেকে চশমা রিটার্ন নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সত্রাজিৎ নম্র ভাবেই বলেন, এত কথা তাঁর পক্ষে হিন্দিতে বুঝিয়ে বলা সম্ভব নয়। কিন্তু এখানেই ঘটল সমস্যা।

সত্রাজিৎ জানিয়েছেন, এদিন তাঁর কাছে দুপুর একটা নাগাদ একটি ফোন আসে। এক ভদ্রলোক তাঁকে ফোন করে হিন্দিতে বলেন, তিনি চশমা নিতে আসবেন। সত্রাজিৎ তাঁকে বলেন, চশমা ফেরৎ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাছাড়া এত কথা তিনি হিন্দিতে বুঝিয়ে বলতে পারবেন না। হঠাৎই ওই ভদ্রলোক বলেন, তাঁর হিন্দি বলার জন্য কি সমস্যা হচ্ছে? সত্রাজিৎ কি বাংলাদেশে থাকেন? কথাটি শোনে সত্রাজিৎ রেগে গেলেও তিনি শান্ত গলাতেই বলেন, ওই ডেলিভারি বয়-এর বক্তব্য কি? তিনি কোথায় থাকেন? ডেলিভারি বয় জানান, তাঁর নাম অঙ্কুর। তিনি বাইরে থেকে এসেছেন এখানে কাজ করার জন্য। ওই ডেলিভারি বয় তাঁকে বলেন, সত্রাজিৎ ভারতে থাকেন, সুতরাং তাঁর হিন্দি বলতে জানা উচিত। ওই ভদ্রলোকের অডাসিটি দেখে চমকে গিয়েছিলেন সত্রাজিৎ।

এরপরেই সত্রাজিৎ সংশ্লিষ্ট ব্র্যান্ডকে ট‍্যাগ করে একটি টুইট করলে তা ভাইরাল হয়ে যায়। প্রতিবাদ করেন সৃজিত (Srijit Mukherjee), পরমব্রত (Parambrata Chatterjee), আবীর (Abir Chatterjee)-রা। সৃজিত লিখেছেন, সত্রাজিৎ কাঁচা বাংলায় উত্তর দিয়েছেন কিনা! পরমব্রত লিখেছেন, খিস্তিটা বিশুদ্ধ বাংলায় হতে হবে, তবেই আনন্দ। আবীর ‘সোনার কেল্লা’-র ফেলুদার অনুকরণ করে বলেন, “আপনি হিন্দিটা চালিয়ে যেতে পারেন, বেশ লাগছে”।

সত্রাজিৎ জানিয়েছেন, তিনি টুইট করার পর মূল ব্র্যান্ড ও থার্ড পার্টি সংস্থার তরফে তাঁর সাথে যোগাযোগ করা হয়েছিল। টুইটারে তাঁরাও রিপ্লাই দিয়েছিলেন। সত্রাজিৎ জানিয়েছিলেন, তিনি বাংলাতেই কথা বলবেন। এরপর এক ভদ্রলোক ফোন করে তাঁর সাথে বাংলাতেই কথা বলেন। সত্রাজিৎ জানান, তাঁকে কোনো অফারের প্রলোভন না দিতে। কারণ এই ধরনের ঘটনার পর তিনি ওই ব্র্যান্ডের সঙ্গে আর কোনো সম্পর্ক রাখতে রাজি নন। তিনি ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তার পাশাপাশি তিনি বলেছেন, তিনি চান না কেউ চাকরি হারাক। তবে ওই ব্যক্তি যা বলেছেন, তাতে তাঁর জন্য ডেলিভারির কাজ নয়, রাজনৈতিক দলের সদস্য হওয়াই শ্রেয়। এই কারণে ওই ব্যক্তির শাস্তি হওয়া দরকার। এই প্রসঙ্গে অনেকেই বলছেন, বাংলায় কাজ করতে গেলে বাংলা শিখতে হবে। জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা বন্ধ হোক।

whatsapp logo