বাংলা অভিনয় ইন্ডাস্ট্রির প্রচুর বদল ঘটেছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। এসেছেন নতুন অভিনেতা অভিনেত্রীরা। সিনেমা, সিরিয়ালের ক্ষেত্রেও এসেছে বড়সড় বদল। তবে আগের প্রজন্মের যে অভিনেতা অভিনেত্রীরা আজো দাপটের সঙ্গে কাজ করে চলেছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম শঙ্কর চক্রবর্তী (Shankar Chakraborty)। বড়পর্দা, ছোটপর্দায় নিজের অভিনয়ের ছাপ রাখার পর বর্তমানে টেলিভিশন সিরিয়ালেই বেশি দেখা যাচ্ছে তাঁকে।
টিআরপি কমছে সিরিয়ালের
দূরদর্শনের বেশ কিছু ধারাবাহিকে কাজ করলেও তাঁকে অভূতপূর্ব জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছিল ‘বিবাহ অভিযান’ এর গণশা চরিত্রটি। দীর্ঘ অভিনয় কেরিয়ারে অসংখ্য সিরিয়াল, সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। তবে শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, এখন মনে হয় হয়তো যে জায়গাটায় তাঁর পৌঁছানোর কথা ছিল সেখানে হয়তো পৌঁছাতে পারেননি, বা হয়তো পেরেছেন। বর্তমানের সিরিয়াল নিয়ে প্রবীণ অভিনেতা বলেন, আগে শুধু দূরদর্শনই ছিল। এখন চ্যানেল অনেক বেড়েছে, সঙ্গে এসেছে ওটিটি। তবে আগে যেমন ১৪-১৫ টিআরপি উঠত, এখন টিআরপি দেখলেই বোঝা যায় কতটা পড়েছে। আগে বাহা, তিথি আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা পেলেও দর্শকরা এখন ভুলতে বসেছে তাঁদের। তেমনি মাত্র কয়েক মাসেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সিরিয়াল। চ্যানেলেরও কিছু করার নেই। তাদেরও টাকা তুলতে হবে।
একসময় দিন কাটিয়েছেন শুধু ছাতু খেয়ে
শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, বর্তমানে সিরিয়ালের অভিনেতা অভিনেত্রীদের নির্বাচন করা হয় সোশ্যাল মিডিয়া দেখে। তাঁদের উচিত এই পেশায় যখন এসেছেন তখন অভিনয়টা শিখে আসা, চিত্রনাট্যটি আগে পড়ে আসা। অভিনেতা বলেন, রিল বানানো খারাপ নয়। তবে তার সঙ্গে অভিনয়ের প্রতিও যত্নবান হতে হবে। তিনি নিজে থিয়েটার করেছেন কিংবদন্তি উৎপল দত্তের সঙ্গে। সে সময়ে কল শো তে শুধু পেতেন ১০০ টাকা। দিন কাটিয়েছেন আট আনার ছাতু খেয়ে। সে সময়ই রবীন্দ্রভারতীতে সোনালি চক্রবর্তীর সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, একসময় পেটের দায়ে ব্ল্যাকে টিকিট বিক্রি করেছেন তিনি। সোনালি তাঁকে ভদ্রলোক বানিয়েছেন।
স্ত্রী না থাকার ক্ষত এখনো টাটকা
বছর দেড়েক আগে স্ত্রী সোনালিকে হারান শঙ্কর চক্রবর্তী। সেই শূন্যস্থানের ক্ষত এখনো টাটকা। স্ত্রীর প্রসঙ্গ উঠতেই সাক্ষাৎকারের মাঝে চোখে জল প্রবীণ অভিনেতার। জানান, থিয়েটার থাকলে ভুলে থাকতে পারেন। কিন্তু কাজ শেষে রাতে বাড়ি ফিরলেই চেপে ধরে স্মৃতিরা। ঘুরতে খুব ভালোবাসতেন সোনালি। অসুস্থতার মধ্যেও পুরী যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সে সময় কোথাও যাওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না। অভিনেতা বলেন, এখন মনে হয় আরেকটু যদি একসঙ্গে সময় কাটাতে পারতেন। পুরী যাওয়ার ইচ্ছাটা অপূর্ণ রয়ে গেল স্ত্রী সোনালির।