GossipHoop Plus

পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও মনসুর আলিকে বিয়ে করেন ব্রাহ্মণ ঘরানার সাহসী শর্মিলা ঠাকুর

১৩ বছর বয়সে স্বামী হিসেবে প্রথমে পান অপুকে। নাহ একদমই রিয়েল লাইফের কথা বলা হচ্ছে না। সত্যজিতের হাত ধরে উঠে আসা শর্মিলা নিজের থেকে প্রায় ১০ বছরের বড় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রথম পর্দায় জুটি বাঁধেন। ২০২০ তে এই কিংবদন্তী অভিনেতা পরলোকগমন করলেও, এখনো শর্মিলা ও সৌমিত্রের জুটি অসাধারণ। তবে আজ কথা বলবো শর্মিলা ঠাকুরের রিয়েল লাইফের হিরোকে নিয়ে।

ক্রিকেটের ময়দানে সঙ্গে বিনোদন জগতের যে প্রেম রয়েছে তার দুর্দান্ত উদাহরণ হল শর্মিলা ঠাকুর ও মনসুর আলী খান। একজন মাঠে ছক্কা হাঁকান, অন্যজন তাঁর অভিজাত্য ও তুখোড় রোমান্টিক আবেদন দিয়ে বলিউডের পর্দা কাঁপান।

এই টাইগারের সঙ্গে শর্মিলার আলাপ হয় একটি ক্রিকেট ম্যাচে। সালটা সম্ভবত ১৯৬৫ এবং ভারতীয় ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেন তখন নবাব পতৌদি। প্রায় চার বছর ধরে প্রেম পর্ব চলে এই জুটির। এই সময়ের মধ্যেই শর্মিলা ঠাকুর বাংলা সিনেমা জগত ও বলিউডে নিজের জায়গা বানাতে শুরু করেন।

১৯৬৭ তে করলেন ‘অ্যান ইভিনিং ইন প্যারিস’। এই সিনেমা করার সময় অনেকেই শর্মিলার পারিবারিক ঐতিহ্য নিয়ে কথা বলেছিলেন। ঠাকুর পরিবারের মেয়ে হয়ে তিনি কীভাবে অন্তর্বাস পড়ে পর্দার সামনে আসবেন! কিন্তু তাঁর প্রাণপুরুষ টাইগার তাকে সমর্থন করেছিলেন। এই সেই অভিনেত্রী যিনি প্রথম পর্দায় বিকিনি পড়ে তাক লাগিয়ে দেন।

১৯৬৯ এ করলেন ‘আরাধনা’। ব্যাস এই সিনেমা করার পর একের পর এক পুরস্কার এসে পৌঁছতে থাকে ঠাকুর পরিবারের মেয়ের ঝুলিতে। একদিকে ‘আরাধনা’র সাফল্য অন্যদিকে বাঁধ না মানা প্রেমের টান। হিন্দু ও ইসলাম দুই মতে বিয়ে করলেন টাইগার ও শর্মিলা। ভাষা, ধর্ম, পেশা, সংস্কৃতি আলাদা হওয়া স্বত্বেও বিয়ে করে ফেলেন শর্মিলা। এক্কেবারে প্যারিসে গিয়ে শর্মিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন টাইগার। ১৯৬৯ সালে বিয়ে হয় এই দুই গ্ল্যামারাস জুটির। সেই সময় থেকে শর্মিলা ঠাকুর ছাড়াও তাঁর কাছে উপহার হিসেবে আসে আরও একটি নাম, সেটি হল – আয়েষা বেগম/ বেগম আয়শা সুলতানা।

শর্মিলা ঠাকুর ও মনসুর আলী খানের জমজমাট প্রেম এতটাই পোক্ত ছিল যে টাইগার ব্যাট হাতে নামলেই বেজে উঠত শর্মিলা ঠাকুরের ছবির গান। মাঝে মধ্যেই মাঠে ভেসে উঠত ‘ওয়াদা করো নহী ছোড়োগি তুম মেরা সাথ/ জাহাঁ তুম হো, ওয়াহাঁ ম্যায় ভি হুঁ…’

বিয়ের পর তিন সন্তানের মা হন বেগম শর্মিলা। একদিকে সংসার অন্যদিকে রুপোলী জগত। দুটোই ব্যাল্যান্স করে চলতে পেরেছিলেন বলেই দিতে পেরেছিলেন ‘অরণ্যের দিন রাত্রি’, ‘অমানুষ’, ‘আনন্দ আশ্রম’, ‘সফর’, ‘অমর প্রেম’, ‘দাগ’, ‘চুপকে চুপকে’ সহ একাধিক হিট সিনেমা।

দীর্ঘদিনের সফর থেকে ২০১১ সালে বিদাই নেন শর্মিলার টাইগার। এরপর থেকে তাঁকে সিনেমা জগতে আর দেখা যায়নি। অবশ্য ২০০৯ এ ‘অন্তহীন’ সিনেমায় তাঁর অভিনয় দেখার সুযোগ মিলেছে। বর্তমানে কিছু ব্র্যান্ড প্রোমোশনে এলেও বড় পর্দায় অভিনয় থেকে বিরতি নিয়েছেন। আজ ৮ ডিসেম্বর, ৭৬ এ পা রাখলেন এই কিংবদন্তী গ্যামারাস অভিনেত্রী। তারই স্মরণে এই ছোট্ট প্রতিবেদন।

Related Articles