Hoop PlusTollywood

‘চুরির কাছে শিক্ষা হেরে গেল’, আফসোসের সুর টলিপাড়ার বাম সমর্থক শিল্পীদের গলায়

অনেক কাণ্ড, অনেক জল ঘোলা, অনেক কাদা ছোড়াছুড়ির পর অবশেষে ফলাফল সামনে এলো। জনতা জনার্দনের কাছে এখন দিদিই আদর্শ। বঙ্গ রাজনীতিতে যেটুকু বামেদের অবস্থান ছিল, একুশের ভোট পুরোপুরি ধুয়ে মুছে সাফ করে দিয়েছে তৃণমূল সরকার। বিপুল সংখ্যক আসন নিয়ে এদিন মমতা বুঝিয়ে দেন যে তিনি একাই একশো। অবশ্য এর পিছনে প্রশান্ত কিশোর এবং ‘ খেলা হবে’ র স্রষ্ঠা তৃণমূল মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্যের অক্লান্ত পরিশ্রম ও বুদ্ধিমত্তা রয়েছে।

গেরুয়া সবুজের লড়াইয়ে এইবার গেরুয়া আবির মার্কেটে কমই বিক্রি হয়েছে, মানুষ সন্তর্পনে এই খেলা খেলেছে। চারিদিকে এত ক্যাম্পেইনিং, প্রচার, তার মাঝে গোল পোস্ট দাড়িয়ে সকলের গোল আটকে দেন মমতা ব্যানার্জি। সকলের সামনে তার দুয়ারে সরকার, কন্যাশ্রী, স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প উঠে আসে। গবেষণা বলছে বিপুল সংখ্যক মহিলা ভোট নিজের আয়ত্তে আনতে পেরেছেন মমতা। এছাড়াও সংখ্যা লঘুদের পুরো ভোট তার ঝুলিতে। এবং মতুয়া সম্প্রদায় থেকে হিন্দু প্রায় বহু ভোটের সাক্ষী তিনি একাই। সেইজন্যেই এই বছর ঐতিহাসিক জয়ের মুখ দেখলেন মমতা ব্যানার্জি।

এই বছরের ভোটে সব থেকে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হল, বাম পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হল রাজ্য থেকে। বহু তরুণ মুখ এনেছিল কমিউনিস্ট পার্টি। কিন্তু কোনোভাবেই নিজেদের জায়গা বানিয়ে উঠতে পারেনি। এবারে নিজেদের হার প্রসঙ্গে মুখ খুললেন কমিউনিস্ট পার্টি সমর্থক শ্রীলেখা মিত্র, জিতু কমল, এবং কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়।

এদিন শ্রীলেখা প্রথমত তার ডিপি পরিবর্তন করেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় বারবার লেখেন, “পলিটিকাল ম্যাপে না থাকলেও কমিউনিটি হেল্প পাবেন।” স্মরণ করিয়ে দেন ফয়াফল যাই হোক না কেন, তাঁর রক্তের রঙ ‘লাল’, এবং এও বলেন, ‘পাল্টিবাজদের দলে থাকবনা মিলিয়ে নেবেন।” এখানেই থামেননি অভিনেত্রী। তিনি এও লেখেন, “চুরির কাছে শিক্ষা হেরে গেল। ভিক্ষা-ভাতার কাছে কর্মসংস্থান হেরে গেল।”

চুপ ছিলেন না জিতু কমল ও কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। অভিনেতা জিতু লেখেন, ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, “গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না”। পরিচালক লেখেন, “বাংলার জনগণের ও গণতন্ত্রের জয় হয়েছে । বাংলার মানুষ সাম্প্রদায়িকতার ও সামাজিক বিদ্বেষের বিরোধিতাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন – কিন্তু দুর্নীতির বিরোধিতাকে ততটা আমল দেন নি । অবশ্যই তা, সর্বভারতীয় রাজনীতিতে সাম্প্রদায়িক সরকারকে বদল করার ক্ষেত্রে একটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ এবং বাংলার মানুষ রাজনীতিতে ধর্মের অনুপ্রবেশ একদমই মানছেন না । স্বাস্থ্যের ব্যাপারেও কেন্দ্রীয় সরকারের অপদার্থতা ও বেসরকারিকরণ, বিলগ্নিকরণ, পুঁজিপতিদের স্বার্থসিদ্ধি, নাগরিকত্বের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া, কৃষি -শ্রমিক আইন বদল ও মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে অবশ্যই মানুষ ভোট দিয়েছেন।”

whatsapp logo