১৯৫২ সালে ” শেষ কোথায় ” দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন মহানায়িকা। তারপর আর থামতে হয়নি তাকে এক মুহূর্তের জন্য। এগিয়েই গিয়েছিলেন তিনি। ৭০ টির উপর সিনেমা করেছিলেন এক জীবনে, যার মধ্যে উত্তম কুমারের সঙ্গেই একাধিক সিনেমায় তাকে জুটি বাঁধতে দেখা যায়।
শেষ দিন ছিল ২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি। ভারতীয় সময় সকাল ৮টা ২৫ মিনিট নাগাদ কলকাতার বেল ভিউ হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৮২ বছর বয়সে সুচিত্রা সেন পরলোকগমন করেন। যেদিন তিনি অভিনয় জীবন থেকে বিরতি নিয়েছিলেন সেদিনের পর থেকে তিনি আর ক্যামেরার সামনে আসেননি। লোকচক্ষুর আড়ালেই থেকে গিয়েছিলেন। এমনকি, ২০০৫ সালে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারের জন্য সুচিত্রা সেন মনোনীত হন, কিন্তু ভারতের প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে সশরীরে পুরস্কার নিতে দিল্লি যাওয়ায় আপত্তি জানানোর কারণে তাকে পুরস্কার দেওয়া হয় নি।
১৯৭৮ সালে সুদীর্ঘ ২৫ বছর অভিনয়ের পর তিনি চলচ্চিত্র থেকে অবসরগ্রহণ করেন। এরপর তিনি রামকৃষ্ণ মিশনের সেবায় ব্রতী হন।
আনন্দলোক পত্রিকায় ডাক্তার সমরজিৎ নস্করের কথা অনুযায়ী, শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের মূহুর্তে আমি মিসেস সেনের কাছে ছিলাম না, তবে ঠিক আগের দিনই উনি আমার কাছে শুনতে চেয়েছিলেন ‘খণ্ডন ভববন্ধন’ গানটি। ওটা গেয়ে শোনানোর পর উনি আমাকে অনেক আদর করলেন। বললেন, “ভালো থেকো। ঠিক এভাবেই মানুষের সেবা কোরো।” এমনকি..শেষ শয্যায় শুয়েও চেয়েছিলেন সবাই যেন ভাল থাকে এবং ঠাকুর ও মাকে যেন বুঝতে পারে, তাঁদের উপলব্ধি করতে পারে…।
ডাক্তার সমরজিৎ নস্করের কথা অনুযায়ী, মৃত্যুর আগে উনি আমাকে শ্রী শ্রী সারদা মায়ের ছবি ও বাণী সম্বলিত একটা ছোট্ট কার্ড দিয়েছিলেন। যেটি আমি এখন সবসময় আমার জামার বুক পকেটে রাখি। কার্ডটা দিয়ে বলেছিলেন, “এটা পড়ো, আমি শুনি।” তাতে লেখা ছিল, “দেখা না পেলে কোথা থেকে ভালবাসা হয়! এই তোমার সঙ্গে দেখাটি হয়েছে, আমি মা, তুমি আমার ছেলে।”