whatsapp channel

‘আত্মহত্যা সমাধান নয়’, ‘ছিছোরে’ ছবিতে ইতিবাচক বার্তা দিয়েও রহস্য মৃত্যুর শিকার সুশান্ত

সুশান্ত সিং রাজপুত নামটি মনে পড়লে এখনও অজান্তে মনটা কেমন যেন হু হু করে ওঠে। বলিপাড়ার অন্যান্য সদস্যদের দেখতে দেখতে যেই মনে পড়ে ‘ছিছোরে’ ছবির জনপ্রিয় হিরো সুশান্তকে আর কোনোদিন দেখতে পাবনা ভারাক্রান্ত হয়ে যায় লুকিয়ে থাকা মনটা। ক্যালেন্ডার জানান দিচ্ছে, আজ শুক্রবার।

Avatar

HoopHaap Digital Media

সুশান্ত সিং রাজপুত নামটি মনে পড়লে এখনও অজান্তে মনটা কেমন যেন হু হু করে ওঠে। বলিপাড়ার অন্যান্য সদস্যদের দেখতে দেখতে যেই মনে পড়ে ‘ছিছোরে’ ছবির জনপ্রিয় হিরো সুশান্তকে আর কোনোদিন দেখতে পাবনা ভারাক্রান্ত হয়ে যায় লুকিয়ে থাকা মনটা। ক্যালেন্ডার জানান দিচ্ছে, আজ শুক্রবার। ২১ তারিখ। বিহারের পাটনায় জন্ম নিয়েছিলেন তিনি। তাঁর আরেক নাম ছিল গুলসন। একের পর এক বাঁধা ঠেলে একটু একটু করে গড়ে উঠেছিলেন উজ্জ্বল আতশবাজির মত অভিনেতা হয়ে। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষের পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে তিনি পা রাখেন অভিনয় জগতে। প্রথমে ২০০৬ সালের ‘ধুম টু’ সিনেমায় ব্যাকগ্রাউন্ড ড্যান্সার তারপর ‘কিস দেশ মে হ্যায় মেরা দিল’ সিরিয়ালে অভিনয় প্রতিভা দেখিয়ে তিনি অল্প সময়েই একতা কাপুরের তুমুল জনপ্রিয় সিরিয়াল ‘পবিত্র রিশতা’তে প্রথমবারের মতো মুল চরিত্রে অভিনয় করেন সুশান্ত সিং।

এত সবকিছুর মধ্যেও সুশান্তের মূল লক্ষ্য ছিল বলিউডের আগামীর শাহরুখ খান হওয়া। ২০১১ সালে নির্মাতা মুকেশ ছাবরার ‘কই পো চে!’ নামক দারুণ প্রশংসিত সিনেমার সাথে একের পর এক ব্লকবাস্টারের দ্বারা সুশান্ত সিং রাজপুত আরও উজ্জ্বলতা লাভ করেন। তাঁর সবথেকে উল্লেখযোগ্য ছবিগুলোর মধ্যে ‘ছিছোরে’ ছবিটি বলিউডে বেশ কিছুদিন ধরে বক্স অফিসে রাজত্ব করেছিল। সেখানে এমন এক ছাত্রকে দেখানো হয়েছিল যে তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষার রেজাল্টের দিন সুফল না করতে পেরে সকলের সামনে হেরো হওয়ার ভয়ে নিজের ব্যর্থতাকে কীভাবে নেবে বুঝতে না পেরে নিজের জীবনকে শেষ করতে উদ্যোগী হয়। ছেলেটির স্কলার অভিভাবকের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সুশান্ত সিংহ রাজপুত ও শ্রদ্ধা কাপুর। যাঁরা কলেজ জীবনে নিজেরাই ‘লুজার’ নামে পরিচিত ছিলেন। এখানে দেখানো হয় ছেলেটিকে বাঁচানোর জন্য কলেজ জীবনের অন্যান্য লুজার ছিছোরে বন্ধুরা আসে এবং সবাই মিলে তাকে হেরে গিয়েও হেরে না যাওয়ার শিক্ষা দিতে থাকে। ‘আত্মহত্যা সমাধান নয়’, এটিই ছিল ওই ছবির উল্লেখ্য বক্তব্য যা সমাজকে নতুন করে বাঁচতে শিখিয়েছিল। অভিনয়ের রাজপুত ইন্ডিয়ান টেলিভিশন অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড, স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ড ও ইন্ডিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব মেলবোর্ন অ্যাওয়ার্ড-এর মত আরও অন্যান্য অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন।

আশ্চর্যজনকভাবে ২০২০ সালের ১৪ জুন থেমে যায় সুশান্তের নিঃশ্বাস। শেষ ছবি ‘দিল বেচারা’- তেও শত কষ্টের মধ্যেও বেঁচে থাকতে শেখানো মানুষটি হারিয়ে যান চিরকালের মত। মুম্বাইয়ে বান্দ্রার নিজস্ব ফ্ল্যাট থেকে তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী, ডিপ্রেশন থেকে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। কি করে হতে পারে! ভালোবেসে বাঁচার আশ্বাস বার্তা দেওয়া মানুষটি কিভাবে ছেড়ে চলে যেতে পারেন। আদৌ কি তাঁর মৃত্যু আত্মহত্যা ছিল? অঙ্কিতার লোখাণ্ডের পর অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর পরই কাল ঘনিয়ে আসে তাঁর জীবনে। হাসিখুশি মিশুকে এই মানুষটি কিভাবে যে জমকালো এক আলোর ঝলক দেখিয়ে হঠাৎ-ই আকাশের তারাদের জগতে মিশে গেলেন তা হয়ত স্ময়ং ভগবানই জানেন কারণ সিবিআই তদন্ত করে এখনও অন্তত কোনো সুফল হয়নি। এতো দ্রুত গুলসনকে হারিয়ে মাত্র ৩৬ বছরের জন্মদিনে সুশান্তকে স্মরণ করলে মনে উচ্ছ্বাস নয়, বিষাদের ভূমিকাই তাই যেন ঘন হয়ে উঠছে।

সুশান্তের দিদি শ্বেতা সিং কীর্তি তাঁর ভাইয়ের জন্মদিন উপলক্ষে একটি ভিডিও ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করে লিখেছেন, “শুভ জন্মদিন ভাই। আমরা তোমার সব স্বপ্ন পূরণ করার চেষ্টা করব। তোমার ধারা বজায় থাকবে।” পোস্টটি পেয়ে নেটিজন অনুরাগে ভরে উঠেছেন। একে একে জন্মদিনের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসায় ভরিয়ে দিয়েছেন স্বর্গীয় সুশান্তকে। তাঁর মৃত্যুকে সত্যিই যে কেউ মেনে নিতে পারেননি বোঝা যাচ্ছে তাঁদের মন্তব্যে, ‘আমরা তোমাকে সারাজীবন মিস করবো সুশী’। সত্যিই কিছুদিনের মধ্যেই তিনি জিতে নিয়েছেন লেজেন্ড খেতাব। মানুষটাকে রহস্যজনক ভাবে হারিয়ে এখনও শোকাহত গোটা সিনে বিশ্ব। উল্লেখ্য, তাঁর স্মৃতিকে জীবিত রাখতে বিহারের পাটনায় তাঁর নামে ফিল্ম সিটির নামকরণ করা হয়েছে। সময়ের সাথে সাথে হয়ত শোক মিলিয়ে যাবে কিন্তু তাঁর স্মৃতি আজীবন থেকে যাবে অনুরাগীদের মনের মণিকোঠায়।

whatsapp logo
Avatar
HoopHaap Digital Media