সুস্মিতা সেন (Sushmita Sen)-এর দৌলতে ললিত মোদী (Lalit Modi) আপাতত খবরের শিরোনামে। তাঁদের বেশ কয়েকটি ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সুস্মিতার সাথে ললিতের সম্পর্ক নিয়ে বলিউড সেলেবরা কটাক্ষ করতে শুরু করেছেন। রাখি সাওয়ান্ত (Rakhi sawant) তো বলেই দিলেন, দুজনকে বাবা-মেয়ে লাগছে। ওদিকে ললিত, সুস্মিতাকে বিয়ে করার স্বপ্নে বিভোর।
ভারতের বিখ্যাত ব্যবসায়ী পরিবারে জন্ম হয়েছিল ললিত মোদীর। তবে সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মালেই তো সকলে সোনা হয়ে যান না। তাই ললিতও হতে পারেননি। তাঁর অপরাধের খাতা খুলেছিল 1980 সালে যখন তিনি নৈনিতালের সেন্ট জোসেফ’স কলেজে পড়তেন। তবে সেই অপরাধ ছিল নিতান্তই নগণ্য। একটি ফিল্ম দেখতে যাওয়ার অপরাধে তাঁকে কলেজ থেকে বার করে দেওয়া হয়। এরপর ললিত পড়তে গিয়েছিলেন আমেরিকায়। সেখানে তিনি ও তাঁর কয়েকজন বন্ধু মিলে দশ হাজার ডলারের বিনিময়ে হাফ কেজি কোকেন কিনতে গিয়েছিলেন। কিন্তু কোকেন আর কেনা হয়নি। তার পরিবর্তে বন্দুকের ডগায় দাঁড় করিয়ে তাঁদের লুট করা হয়। পরদিন কলেজের একজন ছাত্রকে এই ব্যাপারে সন্দেহ করে ললিত ও তাঁর বন্ধুরা বেধড়ক পেটান।
এরপর ললিতকে কিডন্যাপ, শারীরিক অত্যাচার ও কোকেন পাচারের দায়ে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনায় ললিতের দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়েছিল। তবে পরবর্তীকালে ভারতে ফিরে এসে নিজেকে বারবার নির্দোষ বলেছিলেন ললিত। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, ললিতের পরবর্তীকালের আইপিএল দূর্নীতির বীজ কোথায় পোঁতা ছিল! এমনকি নিজের ব্যবসার স্বার্থেই একসময় বিবাহ বিচ্ছিন্না ও এক কন্যাসন্তানের মা এবং বয়সে তাঁর থেকে নয় বছরের বড় মিনাল সাগরানী (Minal Sagrani)-কে বিয়ে করেছিলেন ললিত। কিন্তু তাঁর পরিবারের সদস্যরা এই বিয়ে মেনে নিতে রাজি ছিলেন না। অবশেষে ললিতের ঠাকুমা দয়াবতী মোদী (Dayabati Modi)-র নির্দেশের কারণে পারিবারিক ভাবে ত্যাজ্যপুত্র হওয়ার হাত থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন ললিত। মোদী পরিবারের সম্পত্তিতেও তাঁর অংশীদারীত্ব বজায় রেখেছিলেন দয়াবতী।
2018 সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন মিনাল। মিনাল ও ললিতের এক কন্যাসন্তান ও এক পুত্রসন্তান রয়েছে। এছাড়াও মিনালের প্রথম পক্ষের কন্যাসন্তানকে দত্তক নিয়েছিলেন ললিত। ললিত বর্তমানে লন্ডনের বাড়িতেই অধিকাংশ সময় কাটান।
পুরুষানুক্রমে প্রাপ্ত বিশাল সম্পত্তি ও বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে ললিতের। তবে আপাতত মাথার উপর ঝুলছে ইডি, ইন্টারপোলের তরফে বিশাল অভিযোগের খাঁড়া। যে কোনও দিন তাতে ফাঁসতে পারেন ললিত। তখন তাঁর বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি সবই হয়ে যাবে অতীত। তবে আপাতত সুস্মিতাকে নিয়ে সুখেই আছেন তিনি। সুস্মিতার পরিবারও চাইছেন, ললিত ও সুস্মিতার বিয়ে হোক। এই প্রসঙ্গে, অবশ্যই উল্লেখ্য সুকুমার রায় (Sukumar Ray)-এর বিখ্যাত কবিতার কয়েকটি লাইন, “ শুনতে পেলুম পোস্তা গিয়ে, তোমার নাকি মেয়ের বিয়ে, গঙ্গারাম (ললিত মোদী)-কে পাত্র পেলে, জানতে চাও সে কেমন ছেলে!” সত্যিই দারুণ পছন্দ করেছেন সুস্মিতা। পরিচালক, নায়ক, মডেল সকলকে বাদ দিয়ে শেষ অবধি ক্রিমিনাল। দারুণ অ্যাডভেঞ্চারাস কিন্তু!