কিছু প্রযোজক মনে করেন, অভিনেত্রীদের নিজস্ব অস্তিত্ব নেই। তাঁদের মধ্যে এই মুহূর্তে রয়েছেন অজন্তা সিনহা রায় (Ajanta Sinha Roy) এবং সন্দীপ সরকার (Sandeep Sarkar)। আমেরিকা প্রবাসী সন্দীপের সাথে যৌথ উদ্যোগে তৈরি অজন্তার প্রযোজনা সংস্থা ‘ইন্দো-আমেরিকানা প্রোডাকশন’-এর নতুন ফিল্ম ‘শিবপুর’-এর মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (Swastika Mukherjee)। আশির দশকের হাওড়ার শিবপুর অঞ্চল জুড়ে অপরাধের দলিল হতে পারত ‘শিবপুর’। কিন্তু তা আপাতত সন্দীপ ও অজন্তার অপরাধের দলিল হয়ে গিয়েছে। কারণ স্বস্তিকার অভিযোগ, গত এক মাস যাবৎ তাঁকে হুমকি ই-মেল পাঠাচ্ছেন সন্দীপ। এমনকি তাঁর কয়েকটি মর্ফড ছবি ইমেল করে স্বস্তিকাকে বলা হয়েছে, এই ছবিগুলি পর্ণ সাইটে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
View this post on Instagram
অজন্তা ও সন্দীপের অভিযোগ, স্বস্তিকা ফিল্মের প্রচারে অংশগ্রহণ করছেন না। কিন্তু স্বস্তিকা জানালেন, তাঁকে বা তাঁর টিমকে এখনও অবধি প্রচারের ব্যাপারে কিছুই জানানো হয়নি। তাঁকে শুধুমাত্র ‘শিবপুর’-এর পোস্টার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতে বলা হয়েছিল। তা তিনি করেছেন। প্রযোজনা সংস্থার তরফে অভিযোগ, স্বস্তিকা অতিরিক্ত অর্থ দাবি করেছেন। কিন্তু এই অভিযোগ সম্পূর্ণ নস্যাৎ করে অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তিনি তাঁর পারিশ্রমিকের অতিরিক্ত কোনো অর্থ চাননি। ইতিমধ্যেই তাঁর পারিশ্রমিক পেয়ে গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বস্তিকা।
‘শিবপুর’-এর পরিচালক অরিন্দম ভট্টাচার্য (Arindam Bhattacharya) ও স্বস্তিকার ম্যানেজারকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন অজন্তা ও সন্দীপ। গল্ফ গ্রিন থানায় ইতিমধ্যেই এই বিষয়টি জানিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন স্বস্তিকা। এছাড়াও তিনি একটি বিবৃতিতে স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘ইন্দো-আমেরিকানা প্রোডাকশন’ ও তাঁদের কোনো সদস্যের সাথে ভবিষ্যতে কোনো কাজ করবেন না স্বস্তিকা। কারণ তাঁরা স্বস্তিকাকে ও তাঁর ম্যানেজারকে নিত্য শারীরিক ও মানসিক ভাবে বিব্রত করে চলেছেন। বিগত তেইশ বছর ধরে ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন স্বস্তিকা। কিন্তু ‘ইন্দো-আমেরিকানা’-র প্রথম প্রযোজিত ফিল্ম ‘শিবপুর’। স্বস্তিকার অনুরোধ, বাংলা চলচ্চিত্রের ভবিষ্যৎ বাঁচাতে এই ধরনের প্রযোজনা সংস্থাকে থামানো প্রয়োজন।
সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার হল, যাঁরা প্রায় প্রত্যেক সময় বাংলা সিনেমার পাশে দাঁড়ানোর কথা বলেন, তাঁরা তাঁদের একজন মহিলা সহকর্মীর সাথে ঘটে যাওয়া এই ধরনের দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা সত্ত্বেও কেউ মুখ খোলেননি। ‘শিবপুর’-এ স্বস্তিকার তারকা সহকর্মীদের একজনও প্রয়োজন মনে করেননি মিডিয়ার সামনে এসে এই ধরনের প্রযোজনা সংস্থার বিরুদ্ধে মতামত দেওয়ার। খুব অদ্ভুত ভাবে নিশ্চুপ সন্দীপ ও অজন্তাও। অজন্তার তরফে তাঁর আইনজীবী জানিয়েছেন, স্বস্তিকার সাথে এই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে তা সমর্থনযোগ্য নয়। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেল নির্দোষ। যদি সত্যিই নির্দোষ হয়ে থাকেন, তাহলে সন্দীপ ও অজন্তা কেন আসছেন না মিডিয়ার সামনে?