নারী দিবসে বদলে যাবে চেনা ছক, প্রথমবার খবর পরিবেশন করবেন রূপান্তরগামী নারী
তথাকথিত সমাজে ছোট থেকেই পাঠ শেখানো হয়েছে নারী আর পুরুষ। কিন্তু কখনো এদের কথা উল্লেখ করা হয়নি। তারা হলেন বৃহল্লনা বা রূপান্তরগামী। হ্যাঁ এরা বহিরাগত দিক দিয়ে পুরুষ হলে ও অন্তর দিয়ে একজন নারী। আমাদের সমাজের তথাকিত ভদ্র মানুষেরা এদের মানুষ বলেই মনে করেন না। এরা কেবল বাইরের চাকচিক্যকেই বেশি সম্মান দেয়। কেউ কেউ তো আবার এদের আর্বজনা বলে মনে করেন। কিন্তু এদের ও ছেলে মেয়েদের মতো হাত আছে, পা আছে, আবার একটি সুন্দর মন ও আছে। কিন্তু তবু কেন এই বিভেদ বলুন তো। আজ ও এরা সমাজের বুকে পায়না কোনো পরিচয়।
অনেকে যোগ্য হয়েও পায়না সম্মান, পায়না চাকরি। কিন্তু আর নয়। ধীরে ধীরে চিন্তা ভাবনা পাল্টাচ্ছে। অনেকে নিজের চেষ্টায় আজ হয়ে উঠেছে শিক্ষিকা, কেউ হচ্ছেন উকিল তো কেউ মডেল৷ তবে এদের চলার পথ সহজ। কিন্তু কোনো বৃহল্লনাকে আমরা সংবাদ উপস্থাপিকা হিসেবে দেখিনি। ২০২১ সালে ৮ই মার্চ এই নারী দিবসে অন্য নারীর এক যুদ্ধ সফল হতে দেখবো।
এ বার তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের গণমাধ্যমে কাজ করার সুযোগ দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করল বৈশাখী টেলিভিশন। এই প্রথম সংবাদ পরিবেশন করবেন একজন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। ৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস আর সেদিন সব নারীদের সম্মান দেওয়া হয়। এই বিশেষ দিনে নিউজ বুলেটিনের মাধ্যমে প্রথম সংবাদ পরিবেশন শুরু করবেন বাংলাদেশের মেয়ে তাসনুভা আনান শিশির। বাংলাদেশের বৈশাখী টেলিভিশন চ্যানেল প্রথমবার এই সুযোগ করে দিয়েছে কোনও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশের বৈশাখী টেলিভিশনে সংবাদ পরিবেশন করবেন শিশির।
এই নিয়োগের পর বৈশাখী টিভি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার একসময় মূলমন্ত্র ছিল দেশের মানুষের মুক্তি, সবার বাসযোগ্য, বৈষম্যহীন একটি সমাজ গড়ে তোলা। স্বাধীনতার ৫০ বছরে গর্ব করার মতো অনেক অর্জন থাকলেও সকলেই সমান অধিকার এখনো কেউ পায়নি। আর এই অবহেলিত দের মধ্যে অন্যতম অংশ হলেন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষরা। আর যাতে এরা কোনো কিছু থেকে বঞ্চিত না হয় তার জন্য আরো পদক্ষেপ নেওয়া হবে সরকারের পক্ষ থেকে।
আগামী ৮ মার্চ থেকে তাসনুভা আনান সংবাদ পাঠ করবেন পরিবেশন করবেন প্রতিদিন। শিশির ছাড়াও বৈশাখী টিভিতে আরো একজন রূপান্তরগামী নারী নাটকের সুযোগ পেয়েছেন নিজের যোগ্যতায়। বাম তার বৈশাখী। আর তাঁকেই টিভির নাটক ‘চাপাবাজ’-এর একটি পর্বে দেখা যাবে মৌকে। সম্প্রতি নারী-পুরুষ ছাড়াও তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিকদের ভোটের অধিকার দিয়েছে বাংলাদেশে সরকার। এবার কি ভারত ও কি বাংলাদেশের পথ অনুসরণ করবে? অবশ্য এই উত্তর সময়েই বলবে।