বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু বাবা-মা-দাদার, জলজ্যান্ত সাক্ষী থাকলো চার বছরের শিশু
উত্তর ২৪ পরগনার পাতুলিয়ার গভর্নমেন্ট কোয়ার্টারে ঘটে গেল একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল একই পরিবারের তিনজনের। মৃতরা হলেন এক দম্পতি এবং তাদের ১১ বছরের পুত্রসন্তান। তবে সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয়, পরিবারের চতুর্থ সদস্য অর্থাৎ দম্পতির চার বছরের পুত্রসন্তানটি জলজ্যান্ত সাক্ষী থাকলো এই ঘটনার। চোখের সামনেই শিশুটি তার পরিবারের সকলকে হারালো।
গত কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টির জেরে জল জমেছিল দম্পতির ঘরে। ঘরের জমা জলেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হলেন এই তিনজন। মৃতরা হলেন গৃহকর্তা রাজা দাস(৩৯), স্ত্রী পৌলমী দাস(৩৫) এবং তাঁদের ১১ বছরের পুত্র সন্তান শুভ দাস। রাজা দাস ঘরের মধ্যে জমা জলের মধ্যে থাকা ফ্রিজের বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে যান এবং তখনই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। এই সময় স্বামীকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে পৌলমী দাস নিজেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। এরপর বাবা-মা দুজনকেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হতে দেখে তাঁদের দিকে এগিয়ে যায় তাঁদের বড় ছেলে শুভ। এর ফলে তাদের পুত্রেরও একই পরিণতি হয়।
বাবা-মা এবং দাদাকে একইসাথে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হতে দেখে তাঁদের চার বছরের ছোট ছেলেটি। ঘটনাটি যখন ঘটে তখন সে খাটের উপরে বসে ছিল। ছোট ছেলেটির কান্নার আওয়াজেই প্রতিবেশীরা সকলে ছুটে আসেন। প্রতিবেশীরা দম্পতি এবং তাঁদের বড় ছেলেকে ঘরের মেঝেতে পরে থাকতে দেখেন। তৎক্ষণাৎ তিনজনকে ব্যারাকপুরের বি এন বসু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনজনকেই চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় গোটা এলাকা স্তব্ধ। শোকের ছায়া নেমে এসেছে চারিদিকে। ঘটনাটি দেখে হতভম্ব হয়ে গিয়েছে ছোট্ট শিশুটি। সে এখনো এটা বুঝে উঠতে পারছে না যে তার বাবা-মা এবং দাদা কখনো ফিরবে না। শিশুটির ভবিষ্যৎ নিয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছেন তার আত্মীয় পরিজন এবং প্রতিবেশিরা।
এমনই আরেকটি ঘটনা ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার টিটাগরে। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ১৪ বছরের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। সংবাদমাধ্যমের তরফ থেকে জানা গেছে, দিদিকে পড়াতে দিয়ে ফেরার সময় রাস্তায় জমা জলে পড়ে থাকা একটি তারের সংস্পর্শে আসে কিশোরটি এবং সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। জলের মধ্যে যে ছেঁড়া তার পরেছিল সেই বিষয়ে অবগত ছিলনা ওই কিশোর। প্রশ্ন উঠছে কেন রাস্তায় তার ছিঁড়ে পরে থাকলেও সেই বিষয়ে কোনো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হল না।