নাম মনসুর আলি খান পতৌদি, একজন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেট খেলোয়াড় এবং অধিনায়ক। তাঁর জীবদ্দশা পর্যন্ত ৪০টি ম্যাচেই তিনি ছিলেন ভারতীয় দলের অধিনায়ক। মনসুরের বাবা ইফতিখার আলি খান ছিলেন ভারত ও ইংল্যান্ড – উভয় দলের একমাত্র টেস্ট ক্রিকেটার। ইনি ১৯৩২ থেকে ১৯৩৪ সময়কালের মধ্যে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলে খেলেছেন। কিন্তু ছেলে মনসুর ভারতের হয়েই খেলতেন।
মাত্র ১১ বছর বয়সে মারা যায় মনসুরের বাবা। এরপর ইংল্যান্ড চলে যান তিনি। সেখানেই পড়াশোনা, ক্রিকেট নিয়ে থাকতেন তিনি। সেই ইংল্যান্ডে থাকতেই একবার এক বড় দুর্ঘটনার সম্মুখীন হন তিনি। গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় কোন কারণে তাঁর গাড়ির কাঁচ টুকরো হয়ে ভেঙে যায় এবং সেই কাঁচের টুকরো সোজা গিয়ে গেঁথে যায় তাঁর ডান চোখে। ওই অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। কিন্তু সেদিন তাঁর চোখের শেষ রক্ষা হয়নি। বরং ডান চোখের রেটিনা সম্পূর্ণ খারাপ হয়ে যায়। সেই সময় মনসুর তখন ২১ বছরের হ্যান্ডসাম তরুণ খেলোয়াড়। সেই চোখ নিয়ে টানা ছয় মাস বেড রেস্টে ছিলেন তিনি।
ডান চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার পরেও খেলার জগতে নিজের পরিচয় গড়ে তুলেছিলেন মনসুর আলি খান পতৌদি। সেই বছর প্রথম ম্যাচেই ১০৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। যেই মানুষ গ্লাসে জল ঢালতে অক্ষম ছিলেন সেই মানুষ হয়ে ওঠেন ভারতীয় দলের অধিনায়ক। শুধু এখানেই তাঁর জয় নয়।
১৯৬৯ সালে আরেকবার জয় করেন মনসুর আলি খান। বলিউডের সেরা সুন্দরী অভিনেত্রী ও ঠাকুর পরিবারের মেয়ে শর্মিলা ঠাকুরকে মন দিয়ে বসেন। দুজনের ধর্ম আলাদা হওয়া স্বত্বেও শর্মিলাকে বিয়ে করেন। হয়ে ওঠেন শর্মিলা ঠাকুরের ভালোবাসার টাইগার। এই টাইগার আজ বেঁচে থাকলে ধুমধাম করেই জন্মদিন পালিত হত পতউদি পরিবারে। কিন্তু ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে ২০১১ তে মৃত্যু বরণ করেন তিনি। একবার এই টাইগার তাঁর একমাত্র স্ত্রী প্রসঙ্গে বলেছিলেন, “শর্মিলা যেখানে বসত সেদিকেই তাক করে ছক্কা হাঁকাতাম। ছক্কা দিয়েই ওর মন জিততে চেয়েছিলাম।”