প্রায় ৫৫ টি ছবিতে অভিনয় করা ভরত কলের জীবনের গল্প সেরকমই চটকদার এবং রঙ্গিন। একদা কাশ্মীর থেকে এসেছিলেন তিনি। ফর্সা লাল টুকটুকে, লম্বা চুল নিয়ে হাজার মেয়ের মনে ঝড় তুলেছিলেন। নব্বইয়ের দশকে ভরতের একটা অন্যরকম ক্রেজ ছিল। এখনও সেই ক্রেজ একইরকম।
রিস্ক নিতে ভালবাসেন অভিনেতা ভরত কল, আর তাই একসময় মুম্বাই পর্যন্ত ছুটে গিয়েছিলেন কাজের জন্য, পরে অবশ্য ফিরেও আসেন তিনি। এসেই ‘অরুন্ধতী’র লাইন প্রডিউসারের কাজ করা শুরু, তারপরেই কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘খাদ’-এ অভিনয়। এরপর ‘জাতিস্মর’, ‘জুলফিকার’-এ দেখা যায় ভরতকে।
ইন্ডাস্ট্রির এই ক্যাসানোভা এখন তাঁর স্ট্রিম বদলাতে চাইছেন। বাংলা ধারাবাহিক বা সিনেমায় বাবা-জ্যাঠার চরিত্র তাঁর আর পছন্দ নয়। জীবনকে অন্যভাবে দেখা মানুষটি এখন যাত্রার মধ্যে দিয়ে নিজেকে দেখতে চাইছেন। ভরতের কথায় বাংলা ছবিতে উন্নত চিন্তাধারার বড্ড অভাব, পাশাপাশি কোন স্ট্রং কনটেন্ট নেই। অথচ তাঁর দুই স্ত্রী এখনও বহাল তবিয়তে বাংলা ধারাবাহিকে অভিনয় করে যাচ্ছে।
ভরতের প্রথম স্ত্রী অভিনেত্রী অনুশ্রী দাস। একসঙ্গে বহু টেলিছবিতে অভিনয় করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু ব্যক্তিগত কারণে সেই সম্পর্ক টেকেনি। বিচ্ছেদের পর মুম্বাই ফিরে যান, সেখানে গিয়েও লিভ ইন সম্পর্কে থাকেন ভরত অভিনেত্রী সায়ন্তনী ঘোষের সঙ্গে। যদিও সেই সম্পর্কেও খুশি ছিলেন না এই কাশ্মীরি অভিনেতা। লিভ ইন সম্পর্কে থাকাকালীন তাঁর ধরা পড়ে ক্রনিক মাইলয়েড লিউকেমিয়া। সুস্থ হয়ে ফিরে আসেন কলকাতায়। ফেরেন বাংলা টেলি জগতে। শুরু করেন রাজযোটক’, ‘আপনজন’-র মতো মেগা সিরিয়াল। ব্যাস এই ধারাবাহিক করতে করতেই সত্যিকারের আপনজন পেয়ে যান ভরত। পেয়ে যান জয়শ্রীকে। স্ত্রীর সন্মান দিয়ে ঘরে তোলেন ভরত। এখন তাঁদের ঘরে একটি কন্যা সন্তান আছে।
ক্যান্সারকে জয় করা ভরত এখন শুধুই জয়শ্রীর স্বামী আর তাঁদের কন্যা সন্তানের বাবা। এখানেই শেষ নয় গল্প, তাঁর দুই স্ত্রী এখনও সমস্ত বিবাদ ভুলে একই সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করছেন বাংলা ধারাবাহিকের পর্দায়। স্টার জলসার দুই জনপ্রিয় সিরিয়াল ‘খড়কুড়ো’ ও ‘মোহর’ এ জায়ের ভূমিকায় অভিনয় করছেন ভরত কলের প্রাক্তন ও বর্তমান স্ত্রী। সত্যি এমন গল্প বাস্রব জীবনেও বিরল।