Advertisements

আমি বাঙালি খাবার খেতে ভীষণ ভালোবাসি: শোলাঙ্কি রায় Exclusive Interview

Avatar

HoopHaap Digital Media

Follow

‘কথা দিলাম’ দিয়ে তার কাজ শুরু। সত্যিই, কথা রেখেছেন তিনি। অভিনয়ে আসার আগে তেমন কোনো প্ল্যান ছিল না, তবে সাংবাদিক কিংবা শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন ছিল চোখে। কিন্তু হয়ে গেলেন কখনো ‘ইচ্ছেনদী’র ‘মেঘলা’ তো কখনো মন্টু পাইলটের ‘ভ্রমর’। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন আমরা কার কথা বলছি। বাংলা টেলিভিশনের সুপরিচিত মুখ শোলাঙ্কি রায়, যিনি কিনা এখন আমাদের পর্দার ‘কাদম্বিনী গাঙ্গুলী’। অতুলনীয় সুন্দরী শোলাঙ্কি রায়ের সঙ্গে বিনা প্ল্যানিংয়েই আড্ডা দিলেন আমাদের সংবাদ প্রতিনিধি কৌশিক পোল্ল্যে ও সায়ন্তন সেন।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস নিয়ে পড়াশোনা করার পর অভিনয় জগতে কেন?

– এর সঙ্গে অভিনয়ের কোনো বিরোধ নেই। তবে এটা ঠিক আমার অভিনয় করার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। ছোটবেলা থেকে কোনো প্ল্যান ছিল না অভিনেত্রী হওয়ার। সুযোগটা খুবই হঠাৎ করে এসেছে। তখন আমি কলেজে পড়তাম। সেইসময় ই-টিভির একটা সিরিয়ালের জন্য কাস্টিং হচ্ছিল। ওরা কলেজে এসেছিলেন ওদের লিড ফেস খুঁজতে। Somehow (কোনো কারনে) ওদের আমাকে পছন্দ হয়। আমি একটা অডিশনে যাই, মানে সবটাই হঠাৎ করে হয় এবং ওটাই আমার জীবনের প্রথম অডিশন ছিল। লাকিলি আই গট সিলেক্টেড (luckily I got selected), তারপর ওই কাজটা শুরু এবং তারপর কাজটাকে ভালো লেগে যায়, এমনকি ভালোবেসেও ফেলেছি।

অভিনয় ছাড়া চাকরি করার ইচ্ছে ছিল কি?

– না না আমার বাড়িতে আমি একটু অন্যভাবে বড় হয়েছি। প্রথম কথা ছেলে বা মেয়ে আলাদা করে আমি কোনদিনই সেইভাবে বাড়িতে বড় হইনি। আর আমার বাড়ি থেকে এরকম কোনোদিন কোনো প্রেসার ছিলনা যে আমায় চাকরি করতে হবে। আমাকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে এই প্রেশারটা ছিল, এটা আমি সারা জীবনে জানতাম। তবে মা হয়তো ভেবেছিলেন ( যেহেতু আমি পড়াশোনায় মোটামুটি খারাপ ছিলাম না এবং যাদবপুর থেকে মাস্টার্স করা) যে কোথাও গিয়ে আমি হয়তো শিক্ষকতার পেশায় থেকে যাব অথবা কাগজে লেখালেখি করব। মায়ের ধারণা ছিল আমি হয়তো জার্নালিস্ট হব, আমার নিজের ইচ্ছা ছিল যদি এই অভিনয় জগতে না আসতাম তবে হয়তো আমি সাংবাদিক হতাম বা টিচার হতাম। কিন্তু আমার এই প্রেশারটা কোনদিনই ছিল না, আমি যেটা চাইতাম বা যা ইচ্ছা বা যেটা আমার ভালো লাগে তাই আমি করব এভাবেই আমি বড় হয়েছি।

‘মেঘলা’ থেকে ‘কাদম্বিনী’ হওয়ার জার্নি কেমন ছিল?

– প্রথম কাজ আমার মেঘলা নয়। এছাড়া মেঘলা থেকে কাদম্বিনীর মাঝে অনেক চরিত্র আছে যেগুলো আমার কাছে একই রকমভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আমার চরিত্রের জার্নি গুলি সকলেই দেখেছেন। আপনি কোন অভিজ্ঞতার কথা জিজ্ঞেস করছেন বা কোন চরিত্রের কথা জিজ্ঞেস করছেন সেটা বলুন সেই হিসেবে বলতে পারব।

এই মুহূর্তে যেহেতু কাদম্বিনী চলছে, এই নিয়েই কথা বলছি। কাদম্বিনী দেবীর চরিত্রের যখন সুযোগ এলো তখন প্রতিক্রিয়া কি ছিল আপনার?

– আমি অনেক আগেই কাদম্বিনী সম্পর্কে পড়েছিলাম। আমার মনে হত যে এরকম একজন স্ট্রং চরিত্র ও স্ট্রং মানুষটাকে নিয়ে এবং যিনি প্রথম প্রাক্টিসিং মহিলা ডাক্তার ছিলেন, উনি গোটা সাউথ ইস্ট এশিয়ার মধ্যে প্রথম তো ওনাকে নিয়ে কিছু কাজ হওয়া উচিৎ এটা আমার মনে হয়েছিল। যখন কাদম্বিনী চরিত্রের জন্য আমার সঙ্গে কথা হয় আমার দুবার ভাবতে হয়নি। এই চরিত্র করতে পারাটাও আমার সৌভাগ্যের। অবশ্যই আমি খুব আনন্দিত হয়েছিলাম।

চরিত্রের প্রস্তুতি নিলেন কিভাবে? যেহেতু এটি একটি ঐতিহাসিক চরিত্র তো এই চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলার জন্য কোনো বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছেন?

– প্রস্তুতি বলতে একটা হচ্ছে যে আমাকে পড়তে হয়েছে। কাদম্বিনী সম্পর্কে আমার একটা সম্যক ধারণা ছিল। মানে একটা প্রাথমিক ধারণা ছিল যেহেতু আমি আগে একটা দুটো বই পড়েছিলাম। কিন্তু সেগুলি অনেক বছর আগের। এই কাজটা করার কথা হওয়ার পর থেকে আমাকে কাদম্বিনী সম্পর্কে ওনার জার্নি মানে উনি কে ছিলেন, সেভাবে তো কখনো ডায়েরি লিখতেন না বা ওনার সেইভাবে কিছু মেনশন নেই কোথাও যেমন কাদম্বিনী তেমন দ্বারকানাথ দুজনেই। ছোটখাটো আর্টিকেল থেকে সাহায্য পেয়েছি। আমার কিছু সাংবাদিক বন্ধু আছেন তাদের থেকে ভীষণ সাহায্য পেয়েছি। এমনকি আমি নিজেও জোগাড় করেছি, নিজেই পড়েছি, সাহানা দি ও ডিরেক্টরের সঙ্গে কথা বলেছি। এবং এখন শর্বরী দি, তাঁর সঙ্গে রেগুলার টাচে থাকি। এইভাবে আস্তে আস্তে চলছে। কাদম্বিনী ‘দেবী’ বলাটা পছন্দ করতেন না, তিনি কাদম্বিনী গাঙ্গুলী। যত সিন করেছি সবটাই রিসার্চ ওয়ার্ক করে করা। আমাদের রিসার্চ টিম খুব হেল্প করেছে। ছোটখাটো যখন যা জিজ্ঞাসা ছিল সবটাতেই সহযোগিতা পেয়েছি। আস্তে আস্তে তৈরি হয়েছে কাদম্বিনী। ওনার চরিত্রে আমি তৈরি হয়েছি।

অবসর সময় কী করতে ভালো লাগে?

-অবসর সময়ে আমি আড্ডা দিতে ভালোবাসি, রান্না করতে পছন্দ করি, গান শুনতে ভীষণ ভালোবাসি, সিনেমা দেখি, বই পড়ি।

লকডাউনে কোন কোন সিনেমা দেখেছেন?

– পুরোনো ক্লাসিক কিছু ডিরেক্টর ধরে ধরে সিনেমা দেখেছি। যেমন সত্যজিৎ রায়ের সমস্ত ছবি দেখেছি। আমার কয়েকটা দেখা ছিল না সেগুলো দেখে নিয়েছি। মৃণাল সেনের ছবি দেখেছি। আসামের প্রচুর ভালো ভালো ছবি আছে যেগুলি খুব সহজে পাওয়া যায় সেই ছবিগুলো দেখেছি এবং পুরনো কিছু ছবি বারবার দেখেছি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে।

আপনার প্রিয় খাবার কি? নিউজিল্যান্ডে কোন কোন খাবার স্পেশাল খেয়েছেন?

– আমি সব খাবার খেতে পছন্দ করি। যেটা খেতে ভালো ও সুস্বাদু তাই খাই। আমার পার্সোনাল ফেভারিট খাবার হলো বাঙালি ফুড। নর্থ ইন্ডিয়ান খাবার পছন্দের নয়। জাপানিজ ফুড ভীষণ পছন্দের। নিউজিল্যান্ডে ওদের কোনো স্পেশাল ডিশ নেই। ওরা খুব সাধারণ খাবার খায় কিন্তু ওখানে গিয়ে বিভিন্ন দেশের অথেন্টিক খাবার খেয়েছি। কোরিয়ান খাবার খেয়েছি, প্রপার থাই খেয়েছি। যেটা আমরা কলকাতায় খাই ওটা অনেকটা কলকাতা থাই। নিউজিল্যান্ডকে জাপানিজ খাবার পছন্দ করেছি। আমি বিভিন্ন দেশের খাবার খেয়েছি ওখানে গিয়ে। প্রপার ইতালিয়ান খাবার খেয়েছি এবং ওখানে গিয়ে যেটা পাইনি সেটা হলো বাঙালি খাবার। ওটা নিজেকেই রান্না করে খেতে হতো।

মন্টু পাইলট করার অভিজ্ঞতা কেমন?

– মন্টু পাইলট অনেকটাই ডিফারেন্ট ছিল। আমার সবকটা কাজই একটা অপরটার থেকে ভীষণ আলাদা। আমি খুব লাকি যে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রের কাজ করতে পেরেছি। রিপিট একই ধরনের চরিত্র করতে হয়নি। মন্টু পাইলট যদি দেখে থাকো তবে জানবে খুব ডার্ক একটা স্টোরি। এখানে আমার মেন্টাল ও ফিজিক্যাল স্ট্রেন্থ মারাত্মক হয়েছিল। ১৫-২০ দিন আমরা পুরো ডার্কনেসের মধ্যে ছিলাম। সারাদিন ওই কাজ করার পর যখন ফিরতাম মনে হতো একটা ভালো কাজ করলাম। এটা মেন্টাল ও ইমোশনাল ডিস্টার্ব করে দেওয়ার মত একটা সিরিজ।

আপকামিং কোন কোন প্রজেক্টে দেখতে চলেছি আপনাকে?

– আপাতত আমি ‘প্রথমা কাদম্বিনী’ করছি এবং প্রথমা কাদম্বিনীই করছি।

নিউইয়ার অথবা থার্টি-ফাস্ট ডিসেম্বরে কী প্ল্যান?

– সেরকম কোনো স্পেশাল প্ল্যান থাকে না। যদি ছুটি থাকে তাহলে বাড়িতেই ল্যাদ খাবো, রান্না করব নয়তো কাজ থাকলে করবো।

শোলাঙ্কি রায়কে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমাদেরকে এতখানি সময় দেওয়ার জন্য।

– ধন্যবাদ।

Avatar

...

Trending

Video

Shorts

whatsapp [#128] Created with Sketch.

Join

Follow